এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগে কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার ও দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি বাতিলের পর এবার পরোক্ষভাবে কানাডায় নাইন-ইলেভেন স্টাইলে হামলার ‘হুমকি’ দিয়েছে সৌদি আরব।

সোমবার সৌদি সরকারের এক টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এ হুমকি দেয়া হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়, সৌদি সরকারপন্থী একটি ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে কানাডার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করার পর একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে।

ছবিতে দেখা যায়, কানাডার একটি বিমান টরেন্টোর বিখ্যাত সিএন টাওয়ারের দিকে যাচ্ছে। সঙ্গে ছবিতে লেখা রয়েছে, ‘যারা অন্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে তারা এমন বিষয়ের মুখোমুখি হবে, যা সন্তোষজনক নয়।’

ছবিটিকে অনেকেই ৯/১১-এ টুইন টাওয়ারে হামলার ছবির সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওঠে এসেছে। তবে ছবিটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে টুইটার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ওই ছবিটি ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে।

সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওই অ্যাকাউন্ট থেকে পরে ছবিটি সরিয়ে ফেললেও, এর ক্যাশড ভার্সন এখনও অনলাইনে ঘুরছে। এ বিষয়টি অস্বীকার করেছে সৌদি সরকার।

দেশটির গণমাধ্যমে বলা হয়, কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে সৌদি সরকার তার তদন্ত করছে।

গত ১ আগস্ট হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছিল, সৌদি আরব কয়েকজন অধিকারকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে ছিলেন সৌদি আরবের নারী মুক্তি আন্দোলনের প্রখ্যাত নেত্রী সামার বাদাউই।

এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শুক্রবার অধিকারকর্মীদের ‘অবিলম্বে মুক্তি’ দাবি করেছিল কানাডা। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব।

এরই জের ধরে কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করাসহ বেশকিছু চুক্তিও বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। চুক্তিগুলোর মধ্যে নতুন বিনিয়োগের প্রস্তাব, সহস্রাধিক ডলারের প্রতিরক্ষা সমঝোতা ও শিক্ষাসংক্রান্ত চুক্তি।

এরপর কানাডার টরেন্টোতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত করে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স। এছাড়া কানাডা থেকে ৮ হাজার ৭৬ জন মেডিকেল শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে এনেছে সৌদি আরব।

সৌদি সরকার পরিচালিত আল-আরাবিয়ার খবরে বলা, কানাডার সঙ্গে শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচিও বন্ধ করবে সৌদি আরব।

এর পরিপ্রেক্ষিতে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিরিসতিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেন, এ সিদ্ধান্তের কারণে সৌদি আরবের যেসব শিক্ষার্থী এখানে পড়ার সুযোগ পাবে না, তাদের জন্য এটি লজ্জার।’ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ সৌদি সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারা’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version