সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন উৎস থেকে আসা অভিযোগের তদন্ত করতে আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহম্মদ মেহেদী হাসানকে সভাপতি করে প্রাথমিক পর্যায়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন এটুআই প্রোগ্রামের যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক মোল্লা মিজানুর রহমান এবং আইসিটি বিভাগের উপসচিব মো. শাহীনুর আলম। তদন্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাপে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ও অডিট অধিদপ্তর থেকে একজন করে প্রতিনিধিকে কমিটিতে যুক্ত করা হয়।
কমিটি গঠনের দীর্ঘ ২২ দিন পর, গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বুধবার প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, তদন্ত কমিটির ৩ সদস্যের সঙ্গে ইতোমধ্যেই এটুআই-এর অভিযুক্ত কিছু কর্মকর্তার গোপন যোগাযোগ হয়েছে এবং প্রায় দেড় কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তারা এটুআই-এর পলিসি এডভাইজার ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বন্ধু আনীর চৌধুরীর উপর সমস্ত দোষ চাপিয়ে অন্যদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে তদন্ত কমিটির সভাপতি, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহম্মদ মেহেদী হাসানের সম্পৃক্ততার প্রাথমিক অভিযোগও উঠেছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপদেষ্টা জনাব নাহিদ ইসলাম তদন্তের শুরুতেই সতর্ক করেছিলেন যে, “তদন্ত যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়,” এবং দ্রুততার সাথে তা শেষ করার নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। উপদেষ্টার আশঙ্কা সত্য প্রমাণ করে অবশেষে তদন্ত কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এই অবৈধ লেনদেন এটুআই-এর ১৪ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও তদন্ত কমিটির প্রধান ড. মেহেদী সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ার পর একটি জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল এই বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করে। তবে, তদন্ত কমিটি দাবি করেছে যে তারা কোনো অভিযোগ খুঁজে পায়নি। বরং, তদন্ত কমিটির প্রধান ড. মেহেদী গত ১২ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন, যেখানে সাত কর্মদিবসের মধ্যে ইমেইলের মাধ্যমে অভিযোগ জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আইসিটি প্রকৌশলী পরিষদের সমন্বয়ক জনাব তালহা ইবনে আলাউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমরা তদন্ত কমিটির নিকট দুই দফায় লিখিত ও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দাখিল করেছি। আমরা বেশ কিছু ডকুমেন্ট, আইসিটি মন্ত্রণালয় ও এটুআই প্রোগ্রামের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নাম ও মোবাইল নম্বর সরবরাহ করেছি, কিন্তু আজ পর্যন্ত (১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা) তারা কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমরা আশঙ্কা করছি, তদন্ত কমিটি অনৈতিক সুবিধা নিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে।”