এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক দল মুসলিম ব্রাদারহুডের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাসহ অন্তত ৭৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছে মিসরের একটি আদালত। ২০১৩ সালে রাজধানী কায়রোতে সরকারবিরোধী এক বিক্ষোভের মামলায় এ রায় দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগসহ সহিংসতায় উসকানি এবং অবৈধ বিক্ষোভ সংগঠিত করার অভিযোগে তাদের এ সাজা দেয়া হয়। রায়ের নিন্দা জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, বিচার প্রক্রিয়ায় ‘চরম অনিয়ম’ করা হয়েছে। এ রায় মিসরের সংবিধানেরই পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে তারা।

বিবিসি জানায়, মিসরের সেনাশাসিত সরকারের ওই আদালত শনিবার প্রায় ৭০০ আসামির রায় প্রকাশ করে। রায়ে ধর্মীয় নেতাসহ ৭৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৪৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। জুলাইয়ে ওই ৭৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়। শনিবার আরও কিছু রায়ের মধ্য দিয়ে মুরসি সমর্থকদের গণবিচারের সমাপ্তি হল। এ রায়ে মুসলিম ব্রাদারহুডের জ্যেষ্ঠ নেতা এসাম এল-এরিয়ান ও মোহাম্মদ বেলতাগিকে মৃত্যুদণ্ড এবং দলটির আধ্যাত্মিক নেতা মোহাম্মদ বদিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয়া হয়েছে।

আলজাজিরা জানায়, শাওকান নামে পরিচিত দেশটির প্রখ্যাত চিত্রসাংবাদিক মাহমুদ আবু জেইদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০১৩ সালে কায়রোতে হত্যাযজ্ঞের ছবি তোলার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

তার আইনজীবী বলেছেন, তিনি অল্প কিছুদিনের মধ্যে ছাড়া পাবেন। ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র এক বছরের মাথায় ২০১৩ সালে তৎকালীন সেনাপ্রধান ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির নেতৃত্বে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মিসরের প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি। এর প্রতিবাদে ওই বছরের ১৪ আগস্ট রাস্তায় নামে জনগণ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্য অনুযায়ী, ৮৫ হাজার বিক্ষোভকারী ওই বিক্ষোভে অংশ নেয়।

পরে ৪৫ দিনের দীর্ঘ এ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং তা আরও বেশি সংগঠিত হয়।

একপর্যায়ে কায়রোর রাবা আল আদাবিয়া ও তাহরির স্কয়ারে বিক্ষোভে জড়ো হয় লাখো মানুষ। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী সহিংস অভিযান চালায়। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীর হতাহত হওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিক্ষোভ। এরপর সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় মুরসি সমর্থকদের।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version