নিজস্ব প্রতিবেদক:

যুক্তরাজ্যভিত্তিক ২১ টি মানবাধিকার সংগঠন নিয়ে গঠিত ‘গ্লোবাল বাংলাদেশিস এলায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটস (জিবিএএইচআর)’ উদ্যোগে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ, সীমান্ত হত্যা ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ এবং ভারতীয় ভারতীয় পণ্য বর্জনের সমর্থনে লণ্ডনে ইন্ডিয়া হাউজ অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।
গত ২২শে এপ্রিল সোমবার উক্ত ঘেরাও কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।কর্মব্যস্ত দিনেও এতে প্রায় অর্ধ সহস্র প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন। বিক্ষোভ চলাকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও আদানির মুখোশ সম্বলিত প্রতিকৃতিতে জুতার মালা পরিয়ে বিক্ষোভকারীরা তাদের তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করেন।
সোমবার দুপুর ১২টা থেকেই সেন্ট্রাল লণ্ডনের টেম্পল এর অল্ডউইচ এ অবস্থিত ইন্ডিয়ান হাউজের সামনে প্রবাসী বাংলাদেশি মানবাধীকার কর্মীরা জমায়েত হতে শুরু করেন। বিকাল ৪টা পর্যন্ত সেখানে তাঁরা অবস্থান করেন। ইনডিয়ান হাইকমিশন অবরোধ করে বাংলাদেশি মানবাধীকার কর্মীরা ‘ইন্ডিয়া আউট’ ও ‘বয়কট ইন্ডিয়ান প্রোডাক্টস’সহ ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী নানান স্লোগান দেন। হাইকমিশন অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি মানবাধীকার কর্মীদের উত্তপ্ত স্লোগানে গোটা এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে। এ সময় রাস্তায় চলাচলরত গাড়ির গতি ধীর হয়ে যায়। ইন্ডিয়ান হাইকমিশনে কর্মরতদের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ মূল ফটকে অবস্থান নেয়। পরে সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবিতে সমাবেশকারী মানবাধীকার কর্মীরা ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শংকর বরাবরে হাই কমিশনে স্মারকলিপি প্রেরণ করেন।
‘গ্লোবাল বাংলাদেশিস এলায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটস (জিবিএএইচআর)’ এর আহবায়ক ও সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক শামসুল আলম লিটনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ‘ইন্ডিয়ান হাইকমিশন ঘেরাও ও বিক্ষোভ সমাবেশ’ এর সাথে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও মানবাধীকার কর্মী ড. শহিদুল আলম, প্যারিস থেকে মানবাধীকার কর্মী ও ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলনের উদ্যোক্তা ড. পিনাকী ভট্টাচার্য এবং বাংলাদেশ থেকে সাবেক ডাকসু ভিপি নূরুল হক নূর।

মানবাধিকার সংগঠন ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল (ইআরআই) ওই সমাবেশে অংশ নেয়

ড. পিনাকী ভট্টাচার্য ভার্চুয়াল বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের এই কর্মসুচি ধারাবাহিক থাকবে এবং ভারত যদি আমাদের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় তাহলে অতিসত্তর বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিরপেক্ষতার উদাহরণ দেখাতে হবে। না হয় আমাদের আন্দোলন শুধু ভারতীয় পণ্য বর্জন নয়, বাংলাদেশ থেকে সকল ভারতীয় স্বার্থ উচ্ছেদ করা হবে।’
সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ‘বাংলাদেশের নিপীড়িত মানুষ তাঁর রক্তাক্ত সীমান্ত ও অধিকৃত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয়ার জন্য প্রস্তুত। ভারতকে দায়িত্বশীল ভূমিকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু পণ্য বর্জন নয়, ভারতের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে ইন্ডিয়া আউট কর্মসূচি বাস্তবায়নে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ‘গ্লোবাল বাংলাদেশিস এলায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটস (জিবিএএইচআর)’ এর আহবায়ক ও সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক শামসুল আলম লিটন বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করা হচ্ছে। এর দায় সম্পূর্ণ ভাবে নরেন্দ্র মোদি আর বাংলাদেশের অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহন করতে হবে।
ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাও ও বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ‘জিবিএএইচআর’ এর সিনিয়র ফেলো রুপম রাজ্জাক, ‘জিবিএএইচআর’ এর মিডিয়া সেক্রেটারি ও ইক্যুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি নওশিন মুস্তারি মিয়া, ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ এর সভাপতি মুসলিম খান, ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস’ এর সভাপতি কামরান হাসান রাজীব, মানবাধীকার কর্মী ও কলামিস্ট রাকেশ রহমান, মানবাধীকার কর্মী ব্যারিষ্টার জাকির হাসান, সাংবাদিক ও মানবাধীকার কর্মী শেখ মুহিতুর রহমান বাবলু, মানবাধীকার কর্মী ও সাংবাদিক মিনহাজুল আলম মামুন, মানবাধীকার কর্মী ও সাংবাদিক হাসান জাভেদ ও ‘গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিফেন্ডারস ফোরাম’ এর চেয়ারপার্সন হাসনাত আরিয়ান খান।
এছাড়াও মানবাধীকার কর্মীদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ এর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রায়হান আহমেদ, ‘ই আর আই’ এর সহসভাপতি মোঃ ওসমান গনি, সহসভাপতি মোঃ রোকতা হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, অর্থসম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদুল হাসান, ফাইট ফর রাইট ইন্টারন্যাশনালের সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন চৌধুরী, মানবাধীকার কর্মী ও মহিলা নেত্রী অন্জনা আলম, তাসলিমা তাজ, জাহানারা আক্তার শিমলা, এ্যাডভোকেট সুফিয়া পারভীন, তোবারক হোসেন, মিশুক হোসেন, মোঃ শরীফ রানা, ‘ই আর আই’ এর জয়েন্ট সেক্রেটারি মোঃ মহিবুল্লাহ, মাইনোরিটি সেক্রেটারি তাহমিনা আক্তার, মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ রনি, প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শাহীন আহমদ, গুম বিষয়ক সম্পাদক খালেদ আহমেদ, প্রচার সম্পাদক আবু জেহাদ, সিনিয়র জয়েন্ট সেক্রেটারি মাহমুদ হোসাইন, জয়েন্ট সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল জাবির, প্রচার সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন রুমান, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি একেএম রুহুল আমিন সরকার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি তাম্মাম ইসলাম, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আব্দুল আলিম, এক্সিকিউটিভ মেম্বার শাহরিয়ার কালাম আজাদ, গুম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ তফুর আহমদ, ফাইট ফর রাইটস ইন্টারনেশনাল এর আইন বিষয়ক সম্পাদিকা নাদিয়া ফাতেমা আলী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোসাম্মৎ নাজমুন নেছা দ্বীনা, সাবেক শিবির নেতা মো: গিয়াস উদ্দিন, মানবাধিকার কর্মী শাকিলা শারমিন, মানবাধীকার কর্মী মোঃ নিজাম উদ্দীন, মানবাধিকার কর্মী ছদরুল ইসলাম লোকমান প্রমূখ।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version