আজ ২০ আগস্ট রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে আইটি খাতের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের নামের তালিকা সহ অভিযান চালিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সহ-সমন্বয়ক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদের নেতৃত্বে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ছাত্র এবং বিভিন্ন শ্রেণীর আইসিটি পেশাজীবীরা এতে অংশ নেন। প্রতিনিধি দলটি প্রথমেই বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের দুর্নীতির তালিকাসহ দুর্নীতিবাজ নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমারের সাথে দেখা করতে যায়। শিক্ষার্থীদের আগমনের খবর শুনে তিনি সটকে পড়েন, পরে সিনিয়র সচিবের কার্যালয়ে তাকে পাওয়া যায়।

এ সময় প্রতিনিধি দলটি তার কাছে জানতে চায় কেন সর্বশেষ নিয়োগ পরীক্ষাটি বুয়েটের মাধ্যমে না নিয়ে বিসিসির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। তিনি কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। এছাড়া EDGE প্রকল্প, জাতীয় ডাটা সেন্টারসহ বিসিসি এবং তার অধীনস্থ প্রকল্পগুলোর দুর্নীতির বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, “আমি বড় প্রকল্পগুলোর সাইনিং অথোরিটি নই, এ বিষয়গুলো সচিব মহোদয় এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী দেখতেন।” তবে প্রতিনিধি দলের কাছে তার দুর্নীতির যথেষ্ট প্রমাণ থাকায় এবং তার কোনো উত্তর সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে আগামীকালকের মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা তাদের তালিকায় দুর্নীতিবাজ হিসেবে থাকা বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ম্যানেজার (টেস্টিং) এবং ইনচার্জ (ডাটা সেন্টার) মোহাম্মদ সাইফুল আলম খানের বিষয়ে জানতে চাইলে, তারা জানায় যে তিনি গত ৫ আগস্টের পর থেকেই অনুপস্থিত।

শিক্ষার্থীদের অভিযানের খবর পেয়ে দুর্নীতিবাজদের তালিকায় থাকা EDGE প্রকল্পের চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট এবং সরকারের উপসচিব মো. তোফায়েল হোসেন, এনালিস্ট (নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি) এবং প্রকল্প পরিচালক বিশ্বজিৎ তরফদার, ম্যানেজার (ইন্টার্নশিপ) মো. মাহবুব করিম, আঞ্চলিক পরিচালক মধুসূদন চন্দ্রসহ অন্যরা কার্যালয় ত্যাগ করেন।

বৈষম্যবিরোধী আইসিটি উদ্যোক্তা কাউন্সিলের অন্যতম সমন্বয়ক বুয়েট শিক্ষার্থী তালহা ইবনে আলাউদ্দিন বলেন, “রনজিৎ কুমার সাহেব ইনফো সরকার তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের ২৬০০ ইউনিয়নে নেটওয়ার্ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পিপিপি চুক্তিতে সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন। বুয়েট কর্তৃক ফিজিবিলিটি স্টাডিতে রেভিনিউ শেয়ার বিসিসির ৪০% এবং প্রাইভেট কোম্পানির ৬০% প্রস্তাব করা

হলেও তা না মেনে তিনি রেভিনিউ শেয়ার বিসিসির ১০% এবং প্রাইভেট কোম্পানির জন্য ৯০% নির্ধারণ করেছেন। ২০ বছর মেয়াদী এই চুক্তির মাধ্যমে পলক এবং রনজিৎ গংদের পকেট ভারি হলেও সরকার প্রতি মাসে হাজার হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।”

পরে প্রতিনিধি দলটি এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মামুনুর রশিদ ভূঁইয়ার সাথে দেখা করে। এ সময় তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং স্মার্ট বাংলাদেশের নামে দুর্নীতি করা এটুআই এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাজেদুল ইসলাম, ফরহাদ জাহিদ শেখ, মানিক মাহমুদসহ প্রায় ১৫ জন কর্মকর্তার নাম এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তালিকা এটুআই পিডির হাতে তুলে দেয়। এ সময় তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উল্লেখিত কর্মকর্তাদের সাসপেন্ড করে তাদের দুর্নীতির তদন্ত এবং বিগত বছরগুলোতে দুর্নীতির বিরোধিতা করায় যাদের বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদেরকে অনতিবিলম্বে পুনর্বহাল করার আল্টিমেটাম দেয়।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version