অর্ধশতাধিক প্রবাসী আইডি চিহ্নিত

মোঃ মাহবুব আলী খানশূর

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা ও ভুয়া গুজব ছড়ানো রুখতে বাড়তি তৎপরতা শুরু করেছে সরকার। গোয়েন্দা ইউনিটের স্পেশাল একটি ইউনিটকে নতুনভাবে শক্তিশালী করা হয়েছে। তাদের জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক ‘অপপ্রচারকারী আইডি‘ তারা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। অপপ্রচারের মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
গত কয়েক মাসে গুজবের নামে প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, বিচারপতিসহ রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সেলিব্রেটিদের নাম জড়ানো হয়। কোনো গুজবে সশস্ত্র বাহিনীর মতো সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানের নামও জড়ানো হয়েছে। গুজব থেকে রেহাই পাচ্ছে না দেশের প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমও। গত শনিবার যার সর্বশেষ নজির পাওয়া গেল। সমকাল, প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ দেশের প্রায় সবগুলো প্রথম সারির গণমাধ্যমের মাস্টহেডের স্ট্ক্রিনশট নিয়ে অনলাইনে প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে ১৪ অক্টোবর প্রকাশিত পত্রিকার ভুয়া প্রথম পাতা তৈরি করা হয়। সেখানে প্রধান বিচারপতি ও সরকারকে জড়িয়ে সংবাদের মনগড়া শিরোনাম দিয়ে ছড়ানো হয় বিভ্রান্তি। গণমাধ্যমের এসব ভুয়া পাতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসার পর বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ বলছে, এটি সাইবার ক্রাইম।
অনুসন্ধানে ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটারে এমন কিছু আইডি পাওয়া গেছে, যেখান থেকে বিরামহীনভাবে রাষ্ট্রের অত্যন্ত স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য বিকৃত করে গুজব ছড়ানো হয়েছে। ফেসবুকের অন্তত ৭৮টি পেজ ও আইডি এরই মধ্যে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
সরকারের সংশ্নিষ্ট শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, এর সঙ্গে জড়িতদের কঠোর আইনের আওতায় আনা না গেলে সমাজে নানা সন্দেহ ও সংশয় বাড়বে। বিশ্বাস-অবিশ্বাস ও সন্দেহের দেয়াল শক্ত হবে। এমনকি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্য তা হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। নিকট অতীতে যার একাধিক উদাহরণ রয়েছে। নাসিরনগরে তান্ডব, কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা ও প্রধান বিচারপতিকে অস্ত্র ঠেকানোর ঘটনা এর প্রমাণ।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত গুজবের ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে সরকারের জরুরি উদ্যোগ নেওয়া উচিত। অনেকে মনে করেন, যখন কোনো ঘটনার পর সংশ্নিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পরিস্কারভাবে জনগণের কাছে তার বার্তা পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হয়, তখন গুজব ডালপালা ছড়ায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রধান তথ্য কমিশনার ড. মো. গোলাম রহমান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো ফিল্টারিং ছাড়া তথ্য বা মতামত দেওয়া হয়, যেটা অনেক সময় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে রাষ্ট্রকেন্দ্রিক যে কোনো স্পর্শকাতর তথ্য অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে মূলধারার গণমাধ্যম নিতে পারে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, বলা হয়ে থাকে গুজব সত্যের চেয়েও শক্তিশালী। যখন সঠিক তথ্য জানা সম্ভব না হয় বা অর্ধেক তথ্য জানা যায়, তখনই গুজবের ডালপালা ছড়ায়। অনেক সময় ব্যক্তি ও রাজনৈতিক স্বার্থে গুজব ছড়ানো হয়। সম্প্রতি দেশের মূলধারার কিছু গণমাধ্যমও রাষ্ট্রের স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে গুজবে পা দিয়েছে। নিজস্ব একাধিক সূত্র থেকে তথ্য যাচাই না করে খবর প্রচার করা হয়। বর্তমান বাস্তবতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আধুনিক ও শক্তিশালী হলেও তা সংবাদমাধ্যম নয়। তাদের কোনো গেটকিপার নেই। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্য সতর্কতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই ছাড়া সংবাদ হিসেবে ব্যবহার করা হলে বিপদে পড়ার ঝুঁকি থাকবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ডিসি আলিমুজ্জামান বলেন, ভার্চুয়াল জগতে প্রধান বিচারপতিসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে গুজব ছড়ানোর বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে এসেছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের শনাক্ত করতে কাজও শুরু হয়েছে। তবে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে যারা এসব মিথ্যা তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তির জন্ম দিচ্ছে তাদের ধরা খুব সহজ নয়। কারণ, অধিকাংশ আইডির আইপি ঠিকানা দেশের বাইরে। তাদের অনেককে আমরা চিহ্নিত করেছি। যারা নিজের পরিচয় প্রকাশ করেই এসব প্রোপাগান্ডা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে লন্ডন, মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি-জামাতের অর্ধশতাধিক আইডি আমরা ইতোমধ্যে চিহ্নিত করতে পেরেছি।
তিনি জানান, ফেসবুক বা গুগলের কাছে তথ্য চাওয়া হলে তা সহজে পাওয়া যায় না, যেটা নাসিরনগরের বেলায় দেখা গেছে। ফেসবুকে কথিত যে ছবি ব্যবহার করে ইসলামের অবমাননার কথা বলা হয়েছে সেটা সরাতে অনুরোধ করা হলেও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তা সরায়নি। তবে মিয়ানমারের ঘটনায় গুজব ছড়ানো ১০টি আইডির ব্যাপারে চিঠি দেওয়ার পর দ্রুত সাড়া দেয় ফেসবুক।
অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে, সম্প্রতি প্রধান বিচারপতির ছুটির ইস্যুকে কেন্দ্র করে কথিত দূরবীন টিভি, সোনালী টিভি, এআর টিভি, এসকে টিভি, রিয়েল নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম ভয়ঙ্কর সব গুজব ছড়িয়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচার করে। গত ৩ অক্টোবর কথিত দূরবীন টিভির বরাত দিয়ে ইউটিউবে পাওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ‘মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে এসকে সিনহাকে আটক করা হচ্ছে। অশুদ্ধ বাংলা উচ্চারণে সেখানে আরও বলা হয়, প্রধান বিচারপতি সিনহাকে সুপারসনিক গতিতে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ওই ভিডিওটি দেখেছেন ১২ লাখ আট হাজার ৮৬৮ জন। এআরটিভির আরেকটি বানোয়াট খবরের শিরোনাম দেওয়া হয়, ‘এই মাত্র পাওয়া খবর, প্রধান বিচারপতি নিখোঁজ।’ ইউটিউবে এই ভিডিও হিট করেছেন ১০ লাখ চার হাজার ৮৮৫ জন। এ গুজবে অনলাইনে হিট করেন ১০ লাখ ৪৮৪ জন। পদ্মা সেতু নিয়ে একটি গুজব ছড়ানো হয় কথিত এমকে টিভি নামে প্রচারিত ভিডিওতে। সেখানে বলা হয়, ‘পদ্মার তলদেশে দানব গিলে খাচ্ছে পিলার।’ এ ছাড়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতনকে কেন্দ্র করেও ভুয়া ছবি ব্যবহার করে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছে। এতে মিয়ানমার লাভবান হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা। কারণ, তারা বিশ্বকে বোঝানোর চেষ্টা করছে রোহিঙ্গা নির্যাতনের যে ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন- এমন ভুয়া খবর প্রকাশ করা হয় টুডে নিউজ-৭১ নামের একটি অনলাইনে। এ ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় এরই মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা পোস্ট দিয়ে গুজব ছড়ানোয় গ্রেফতার করা হয় বিএনপি নেতা তানভীর সিদ্দিকীর ছেলে ইয়াদ আহমেদ সিদ্দিকীকে। নেদারল্যান্ড থেকে ঢাকায় ফিরলে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অপরাধের ঘটনায় ২৬টি মামলা রয়েছে। আরও যাদের নাম ব্যবহার করে গুজব ছড়ানো হচ্ছে তারা অনেকেই বিদেশে অবস্থান করছেন। বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি এ তালিকায় সরকার বিরোধী মতের সাংবাদিক-ব্লগারদের নাম বেশী বলে সূত্র জানায়। এরা হলেন- লন্ডনে সাংবাদিক ও ব্লগার শেখ মহিউদ্দিন, অলিউল্লাহ নোমান, মুশফিকুল ফজল আনছারী, মাহবুবুর রহমান, এসএম শামসুর রহমান, মাহবুব আলী খানশূর, যুক্তরাষ্ট্রে ইমরান আনসারী, আশিক ইসলাম, দুবাইয়ে আবদুর রহমান, সাবেক শিবির নেতা নাওশীন মোস্তারী মিঞা সাহেব, কলিম উদ্দিন, সাবেক ছাত্রদল নেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল, ওয়াহিদ নবী, লন্ডন প্রবাসী সাবেক ছাত্রদল নেতা পারভেজ মল্লিক, এডভোকেট এনাম আসগর, মোঃ  আব্দুল্লা আল মামুন, মোঃ তোফাজ্জল হোসাইন, লন্ডন মহানগর বিএনপি‘র সহ সভাপতি নাসির ও গিয়াস উদ্দিন, নিউহ্যাম বিএনপির সহ সভাপতি মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন,লন্ডন মহানগর বিএনপি‘র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মারুফ আদনান চৌধুরী , মোহাম্মদ সাদিক, খুলনা জেলা বিএনপি‘র সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জুর  হাসান, আব্দুল আলীম, হেভেন খান, জাহাঙ্গীর আলম শিমু, সাবেক ছাত্রনেতা মোঃ আরিফুর রহমান খান, এসেক্স বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ সামসুল ইসলাম, কামরান জাকি বিল্লাহ, আব্দুস সামাদ, কাজী মোঃ নুরুজ্জামান , মোঃ সাকোয়াত হোসেন,  মোশাররফ ভুইয়া, আবু তালেব (রায়হান), মোঃ ফয়েজ উল্লাহ,আব্দুল কাদের জিলানী, মানবাধিকার কর্মী ও জামাত নেতা মো্ঃ রোকতা হাসান, সাবেক ছাত্রনেতা শেখ কামরুজ্জামান, মোঃ মহিন উদ্দিন, ইস্ট লন্ডন বিএনপি নেতা মনজুরুল ইসলাম, যুবদল নেতা  মোঃ সাকোয়াত হোসেন, মোঃ নাজমুল আহসান, ফয়সাল আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক লাকি আহমেদ, মোহাম্মদ আব্দুল গনি, আবদুর রহিম, পিনাক রহমান, কমিউনিস্ট পার্টি নেতা মোঃ ইলিয়াস শাহ্ , মোঃ সালাহ উদ্দিন সজিব,  মোঃ খালেদ মাহামুদ রাকিব, সায়েম আহমেদ, এ এ ওয়াহিদুল ইসলাম, মোঃ কবির উদ্দিন,মোঃ আরিফুর রহমান খান, মোঃ রাসেল মাহমুদ, মো. জোবায়ের ইসলাম শিশির, শেখ বুরহান প্রমুখ।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের যে ৭৮ আইডি পেইজ থেকে বেশি গুজব ছড়ানো হয়, তার মধ্যে রয়েছে ফেসবুকে ‘কামরুল ইসলাম, রসিক হাকিম ডট, নির্যাতিতা ডট, জনতার ডট কণ্ঠ, অফিসিয়াল ডট জেসিডি বিডি, আবদুল বারেক ডট মিয়া ডট ফাইভ, ফোরবাংলাদেশ, তুহিন ডট মালিক ডট ডক্টর, উইআর দ্য পিপল উইথ জ্যাকব মিলটন, ইসলামিক নিউজএসটিভিবিডি, বিডিডিএডব্লিউএনফোর, বিডিনেটওয়ার্ক টু, কিন্তু , বাঁশের কেল্লা, রফহান্নান, কুমিল্লা জেসিডি, মিনা ডট ফারাহ ডট টোয়েন্টিফোর, চেঞ্জ বাংলাদেশ, সানি আহমেদ বিডি সেভেন, রোমান ডট রায়হান ডট সিক্সটিন, বুলবুল ডট খান ডট ১৬৫৪৭, নাফিস ডট হোসেন ডট টেন, টুসি ডট তালুকদার, সাইদ ডট সাতকানিয়া, নিজাম ডট চৌধুরী ডট ৩৯৯০, কামাল ডট শেখ ডট ৫৮৩৬৭১, টিপু ডট সুলতান ডট ১৮৪, প্রোফাইল ডট পিএইচডি, ক্যাপটেন নিমো, পিনাকি ডট ভট্টাচার্য ডট নাইন, রেজাউল করিম ২৭, বশির ডট সাফারি ডট ফাইভ, সুমনআকন, বাবরুল ডট আলম ডট ফাইভ, আলী ডট আশরাফ ডট ৭৫২ প্রভৃতি। কিছু কিছু সাইট থেকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিক্ষামন্ত্রীসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও সিনিয়র নেতাদের ছবি অশালীনভাবে ব্যবহার করে প্যারডি ভিডিও ছাড়া হয়েছে।
গোয়েন্দাদের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এসব আইডির অধিকাংশের ইন্টারনেট প্রটোকল ঠিকানা (আইপি) দেখা যায় মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে। খুব অল্প অর্থে ডোমেইনের জন্য এসব সাইটের হোস্টিং কেনা যায়। কখনও একটি সাইটের পেছনে মাত্র এক ডলার খরচ হয়। অল্প অর্থের বিনিময়ে কথিত খবর ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব, যাকে বলা হয় ‘বুস্ট’।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া তথ্য বা ছবি দেখে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইউটিউবে যার যা খুশি প্রচার করছে। সেখানে ভুল তথ্য দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি করেন এমন একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, জনপ্রিয় তারকাদের ছবি ব্যবহার করে ভুয়া পরিচয়ে ফেইক ফেসবুক পেজ খোলা হয়। অনেকে তারকাদের ছবি দেখে সেই পেজে যান। মূলত এসব পেজ থেকে যারা গুজব ছড়ায়, তাদের ৮০-৯০ শতাংশের টার্গেট সরকার, প্রশাসন ও মুক্তিযুদ্ধ। অনেকে সরকারের জনপ্রিয় পরিকল্পনাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে থাকে। এতে সংশ্নিষ্টদের ধারণা, গুজব ছড়ানোর ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের হাত রয়েছে। নিজের পরিচয় লুকাতে অনেক কুৎসা রটনাকারী ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করেন। আইন অনুযায়ী অনলাইনে গুজব ছড়ালে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ৫৭ ধারার মামলার বিধান রয়েছে। ৫৭ ধারার প্রয়োগ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও অনেকে মনে করেন, তথ্যপ্রযুক্তির এহেন অপব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version