এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : মন্ত্রী-এমপিরা যাতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রচার চালাতে পারেন সেজন্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভারতের বিধানসভা নির্বাচনে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রচারে অংশ নিতে পারেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, এমপিরা কেন স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ক্যাম্পেইন করতে পারবেন না? এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমাদের কথা বলতে হবে। খুব শিগগির আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল এ নিয়ে কথা বলতে নির্বাচন কমিশনে যাবে বলে জানান তিনি। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির প্রথম সভায় রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এমন কি অসুবিধা যে, এমপিরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ক্যাম্পেইন করতে পারবে না। এ বিষয়ে ইসির সঙ্গে সিরিয়াসলি আলোচনা করতে চাই। আমাদের কথাগুলো তাদের জানাব। খুব শিগগিরই আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল কথা বলতে নির্বাচন কমিশনে যাবে।

এ সময় ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার পুরো নির্বাচন কমিশনের’- প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্যের সঙ্গে তিনি দ্বিমত পোষণ করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের হাত নেই। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব আর সরকারের দায়িত্বটা সংবিধান ঠিক করে রেখেছে। আমাদের সংবিধানে সব আছে। এখানে সংবিধানবহির্ভূত কিছু করার সুযোগ নেই। নির্বাচনকালীন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালন করবে, তখন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যাবে। কিন্তু সেনাবাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে, নির্বাচন কমিশনের অধীনে যাবে না। নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ, সে অবস্থায় নির্বাচন কমিশন সরকারকে সেনা মোতায়েনের অনুরোধ করতে পারে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের সেনাবাহিনী নিয়োগের কোনো ক্ষমতা নেই। তারা অনুরোধ করতে পারবেন। বাস্তবতা বা প্রয়োজন এবং অবস্থা অনুযায়ী সেনাবাহিনী অনেক সময় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করে। যদি প্রয়োজন হয় তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করতে পারে এখানে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়া হবে কিনা- এটা নির্ধারণ করবে সরকার।

‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নামে সরকার নাটক করছে’- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে জোর করে নিয়ে আসার কি প্রয়োজন? এতে অনেক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকদের কষ্ট করতে হয়। এখানে হ্যাসেলেরও বিষয় থাকে। কাদের বলেন, নিশ্চয়ই চিকিৎসকরা প্রয়োজন মনে করেছেন বলেই তাকে আনা হয়েছে। সেখানে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাকে দেখেছেন। এখন যদি এটা না করত, আর এর জন্য খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতো, তখন কি হতো? ‘এটা করলেও দোষ ওটা করলেও দোষ’- মন্তব্য করে কাদের বলেন, তিনি সুস্থ আছেন, ভালো আছেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এটা আমরাও চাই।

উপকমিটির সদস্যদের সহসম্পাদক ও সদস্যদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচনী বছরে তাদের পোস্টার বা বিলবোর্ডে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ছোট করে নিজের ছবি বড় করে ছাপানো বরদাশত করা হবে না। কোথাও এমন চোখে পড়লে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাদের ভিজিটিং কার্ড ও ব্যানার করারও সমালোচনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এখন থেকে বিদেশে যেসব জায়গায় দলের শাখা কমিটি আছে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করবে আন্তর্জাতিক উপকমিটি।

সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমিরের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারুক খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদ প্রমুখ।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version