এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি চাকরির কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর দ্রুত গেজেট প্রকাশ ও মামলা প্রত্যাহারসহ কয়েকটি দাবি রেখে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেছে কোটা কমানোর দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে আসা শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
গত কয়েক দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে যেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছিলেন আন্দোলনকারীরা, সেখান থেকেই বৃহস্পতিবার দুপুরের আগে আন্দোলন স্থগিতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।
তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ সমাজের প্রাণের দাবি মেনে নিয়েছেন। আমরা আমাদের কর্মসূচি প্রজ্ঞাপন জারি করা পর্যন্ত স্থগিত করলাম।”
আন্দোলনকারীদের এ প্ল্যাটফর্মের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর লিখিত বক্তব্যে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।
>> কোটা ব্যবস্থা বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা দ্রুত গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে।
>> গত কয়েক দিনের কর্মূসচির মধ্যে গ্রেপ্তার আন্দোলনকারীদের সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
>> পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভ-ভাঙচুরের ঘটনায় যেসব মামলা করেছে, সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে।
>> ‘পুলিশি নির্যাতনে’ আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করতে হবে।
>> আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের যাতে পরবর্তীতে কোনোভাবে হয়রানি করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
নুরুল হক নূর বলেন, কোনো রকম হয়রানি করা হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আবার আন্দোলন শুরু করা হবে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে এই আন্দোলনে ‘সহমত পোষণ করায়’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের ধন্যবাদ জানান আন্দোলনকারীরা।
আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর ছাড়াও পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান ও মো. ফারুক হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নূর বলেন, “আমরা ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মাদার অব এডুকেশন উপাধিতে ভূষিত করলাম।”
রাশেদ বলেন, “দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমরাও বলছি, আমরা আপনার পাশে আছি, পাশে থাকব।”
ফারুক বলেন, “ছাত্র সমাজের মধ্যে কোটা বাতিল নিয়ে কিছু কনফিউশন কাজ করছে। সেগুলো দূর করার জন্য গেজেট প্রকাশ করতে হবে। আটকদের মুক্তি ও আহতদের চিকিৎসা দিতে হবে। আন্দোলনকারীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলন শেষে আন্দোলনকারীরা আনন্দ মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যায়। সেখান থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এরপর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে তারা শ্রদ্ধা জানাবেন। প্রধানমন্ত্রীর জন্য তাদের ফুল নিয়ে যাওয়ারও কথা রয়েছে।