যুক্তরাজ্যে কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে আসা একাত্তর টিভির সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল রোডে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান একাত্তর টিভির লন্ডন প্রতিনিধি তানভীর আহমদ।
তিনি বলেন, একাত্তর টিভির দুটি টিম কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের বৈঠকের সংবাদ সংগ্রহ করছে। একাত্তর টিভির সাংবাদিক ফারজানা রূপা, প্রযোজক রিপন হক ও ক্যামেরাম্যান অপূর্ব ঘটনার শিকার হয়েছেন।
“তারা পূর্ব লন্ডন মসজিদের পাশে একটি পেট্রল পাম্পের সামনে ক্যামেরা বসিয়ে লাইভ ব্রডকাস্টের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় একটি মোটরবাইকে হেলমেট পরা দু’জন এসে ঝাপটা মেরে ট্রাইপডসহ ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।”
তানভীর জানান, হেলমেট পরা থাকায় ছিনতাইকারীদের চেহারা চেনা যায়নি। তারা কেউই মোটরসাইকেলের নম্বরও রাখতে পারেননি।
পুলিশ এসে ছিনতাইয়ের শিকার তিন বাংলাদেশির বিবৃতি নিয়ে আশপাশে সন্ধান চালালেও ছিনতাইকারীদের ধরতে পারেনি। তবে আশপাশের সিসিটিভি পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
ওই একালায় বসবাসরত প্রবাসীরা জানান, লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে টাওয়ার হ্যামলেটসে এভাবে মোটরসাইকেলে মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা ইদানিং বেড়েছে।
নানা রকম অপরাধ বিশেষ করে ছুরিকাঘাতে খুনের ঘটনা নিউ ইয়র্ককেও ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান তারা।
এসব ঘটনায় নগরীর পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মেয়র সাদিক খান ‘চাপের মুখে’ রয়েছেন বলে জানান প্রবাসীরা। অপরাধ দমন ও জননিরাপত্তার ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছেন বলে গত সপ্তাহেই তিনি নতুন করে অঙ্গীকার করেছিলেন স্থানীয় গণমাধ্যমে।
‘একাত্তর বিরোধীরাই রূপাকে আক্রমণ করেছে’ : এদিকে একাত্তরবিরোধী কোনো অপশক্তি ফারজানা রূপাকে আক্রমণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু।
তিনি বলেন, “একাত্তর একটা চেতনা। কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দেওয়া সরকারের প্রতিনিধি দলের অংশ আমাদের এ সাংবাদিক। ব্রিটেনের দায়িত্ব ছিল তাকে নিরাপত্তা দেওয়া। ব্রিটেন এক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে।
“আমি মনে করি, একাত্তর নাম শুনলেই যাদের মাথা গরম হয়ে যায় সেরকম কেউই রূপাকে আক্রমণ করে থাকবে। কোনো সাধারণ সন্ত্রাসী একাজ করেনি। একাত্তরবিরোধী কেউ তাকে আক্রমণ করে থাকতে পারে।”
একাত্তর টেলিভিশনের হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ বলেন, “এ ধরনের হামলা কাঙ্খিত ছিল। এ ধরনের আক্রমণ ধারণা করা গিয়েছিল; সন্ত্রাসীদের ওরা আশ্রয় দিয়েছে। এতে আমরা বিস্মিত হইনি। ওখানে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে এরকম ঘটনাই ঘটবার কথা।”
ফারজানা রূপার স্বামী শাকিল জানান, জঙ্গি বিরোধী বেশ কিছু প্রতিবেদন করার পর রূপাকে ফেসবুবসহ নানাভাবে হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল। লন্ডনে গিয়ে হামলার শিকার এরই একটা প্রতিক্রিয়া বলে মনে করেন তিনি।