এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : নির্বাচনী বছরে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রত্যাশা করছে চীন। দেশটির মতে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য সুষ্ঠু ও স্থিতিশীল পরিবেশ প্রয়োজন। এ পরিবেশ নিয়ে চীনের কোম্পানিগুলোর উদ্বেগ রয়েছে।
সংহাইয়ে আন্তর্জাতিক আমদানি প্রদর্শনী ও দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর আলোকপাত করে গতকাল চীনা দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিমত প্রকাশ করা হয়। বহির্বিশ্ব থেকে আমদানি বাড়ানোর মাধ্যমে চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এ বছর নভেম্বর থেকে প্রতি বছর নিয়মিতভাবে এ প্রদর্শনী অনু্িষ্ঠত হবে। এতে প্রদর্শনীর পাশাপাশি বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপায় নিয়েও আলোচনা হবে। বিশ্বে সর্ববৃহত বাণিজ্যিক অংশীদার চীনের সাথে বাংলাদেশের রয়েছে ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি।
বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে বাংলাদেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সইয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে চীনা দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর লি কোয়াং জুন বলেন, এফটিএ’র মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহজীকরণের পাশাপাশি বিনিয়োগও বৃদ্ধি পাবে। বিনিয়োগ বাড়লে চীনের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণে ভূমিকা রাখতে পারবে। একই সাথে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা বাড়বে। চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে বাংলাদেশী পণ্যের বহুমুখীকরণের পাশাপাশি বাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। তিনি বলেন, এফটিএ সইয়ের জন্য বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই করছে। ঈদের পর দুই দেশের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে বেইজিংয়ে আলোচনায় বসবেন।
লি কোয়াং জুন বলেন, গত বছর চীন থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছে এক হাজার ৬০০ কোটি ডলারের পণ্য। আর রফতানি করেছে ১০০ কোটি ডলারের পণ্য। বাংলাদেশী পণ্য চীনের বাজারে পরিচিত করার জন্য সংহাইয়ে আন্তর্জাতিক আমদানি প্রদর্শনী একটি ভালো সুযোগ। বাংলাদেশের সরকারি সংস্থা রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং বেসরকারি কোম্পানিগুলো এ প্রদর্শনীতে অংশ নিতে ক্রমেই আগ্রহী হয়ে উঠছে।
কমার্শিয়াল কাউন্সিলর বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বন্দর নির্মাণসহ বাংলাদেশের অবকাঠামোগত খাতে চীন বিনিয়োগ করছে। পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগ স্থাপনে আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ সরকার ও চীনের এক্সিম ব্যাংকের মধ্যে ঋণ চুক্তি হবে। ২৬০ কোটি ডলারের এ ঋণ পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরে শোধ করা যাবে। রেয়াতি এ ঋণের সুদহার ২ শতাংশ।
বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার (বিসিআইএম) অর্থনৈতিক করিডোর বাস্তবায়ন কঠিন হলেও বেইজিং আশাবাদী মন্তব্য করে লি কোয়াং জুন বলেন, এটি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগেরই অংশ।
চীন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার একটি উদ্যোগ নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এতে মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির পরিকল্পনা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে চীনের উপ-রাষ্ট্রদূত উই চেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version