এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার নির্বাচিত আরও ১০ হাজার শরণার্থীকে নিজ ভূখণ্ডে ঠাঁই দিতে সম্মত হয়েছে জার্মানি। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচআরসি) ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে সোমবার এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানান জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। মার্কেল বলেন, শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচির অংশ হিসেবে এসব শরণার্থীকে জার্মানিতে ঠাঁই দেয়া হবে। তবে কোন দেশ থেকে শরণার্থীদের নেয়া হচ্ছে, তা না জানালেও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর শরণার্থীদেরকে প্রাধান্য দেয়া হবে বলেই সবার ধারণা।
জার্মানি গত কয়েক বছরে কয়েক লাখ শরণার্থী ও অভিবাসীকে ঠাঁই দিয়েছে। এতে বিরোধীদের সমালোচনার কবলে পড়ে মার্কেলের সরকার। কিন্তু শরণার্থীদের ব্যাপারে বরাবরই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে মার্কেলের। জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে যে অবৈধ অভিবাসন চলছে তা প্রতিরোধ করতেই এ সিদ্ধান্ত রয়েছে।’ মার্কেলের এ ঘোষণায় তাকে ধন্যবাদ জানান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাকে আর্থিক সহযোগিতার জন্যও জার্মানিকে ধন্যবাদ জানান তিনি। ওয়াশিংটনের পর বার্লিনই জাতিসংঘে সর্বোচ্চ অর্থ সহায়তাকারী।

মঙ্গলবার ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থায় (ইউএনএইচআরসি) প্রতি বছর প্রায় ৪৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার অর্থ সহায়তা দিচ্ছে জার্মানি। এছাড়া উদার হস্তে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে আসা লাখ লাখ শরণার্থীকে গ্রহণ করেছে দেশটি। শরণার্থীদের প্রতি এই উদারনীতির কারণে গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হয় মার্কেলের দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (সিডিইউ)। আঞ্চলিক দল ক্রিশ্চিয়ান সোস্যাল ইউনিয়নের সমর্থন নিয়ে প্রায় দু’মাস পর অবশেষে সরকার গঠন করেন মার্কেল। তবে শর্ত হিসেবে শরণার্থী গ্রহণের সংখ্যা কমাতে হয় তার দলকে।

এদিকে জার্মানিতে আসা বেআইনি শরণার্থীদের দেশে ফেরাতে পারছে না জার্মান অভিবাসন দফতর। কারণ তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। গত কয়েক বছরে জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। সিরিয়া সংকট শুরু হওয়ার পর শরণার্থীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পায়। এসব শরণার্থীর অনেকেই জার্মানিতে ঢুকেছেন বেআইনিভাবে। বেশির ভাগই আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। কেউ পেয়েছেন, কেউ পাননি। যারা পাননি, তাদের দেশে ফেরানোর চেষ্টা করেছে জার্মানি। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্ট বলছে, অধিকাংশ শরণার্থীকেই দেশে ফেরাতে পারছে না জার্মানি।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version