এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক টিমের অনুসন্ধানে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি সংস্থা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এরপরই আছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি। এছাড়া ভূমি, গণপূর্ত অধিদফতর, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সসহ মোট ১০ খাতে ব্যাপক দুর্নীতির অস্তিত্ব পেয়েছে এই টিম। দুদকের ১০ টিমের অনুসন্ধানে এ চিত্র উঠে এসেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে দুদক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে ৯০ দফা সুপারিশ পাঠিয়েছে।

সরকারি সংস্থার দুর্নীতি রোধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রাতিষ্ঠানিক অনুসন্ধান টিম গঠন করে। ২৩টি সরকারি সংস্থা ও বিভাগের দুর্নীতি খুঁজে বের করতে ২০১৭ সালে পরিচালক ও উপপরিচালকদের নিয়ে টিম গঠন করা হয়েছিল ২৫টি। এর মধ্যে ১০টি টিমের অনুসন্ধানে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সরকারের ১০ খাতের দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। আরও ১৩টি সেবা সংস্থার দুর্নীতির উৎস খুঁজে বের করার লক্ষ্যে কাজ করছে দুদকের আরও একাধিক টিম। দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এই টিমের মতে, সওজের (সড়ক ও জনপথ) অধীন সড়কের সংস্কার ও উন্নয়ন কাজে ভয়াবহ দুর্নীতি হচ্ছে। কখনও ঠিকাদার-প্রকৌশলীর যোগসাজশ, কখনও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ, আবার কখনও দায়িত্বে অবহেলাসহ নানা কারণে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, সরকারি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো কাজ করে কিনা, সেখানে সেবা পেতে বাধা কোথায় বা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতির উৎস কি তা চিহ্নিত করতে একাধিক টিম মাঠে কাজ করে। আমরা গত বছর টিমগুলো গঠন করে দিয়েছিলাম। তার মধ্যে অনেকগুলো টিম প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে দুর্নীতি বন্ধে সুপারিশসহ তাদের প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করেছে। আমরা সেসব সুপারিশ নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর করেছি। আমাদের বার্ষিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে সুপারিশগুলো রাষ্ট্রপতির নজরেও আনা হয়েছে। আমরা আশা করছি, দুর্নীতি বন্ধে যে সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হলে মানুষের হয়রানি কমবে। মানুষ দুর্নীতিমুক্ত সেবা পাবেন।

সড়ক বিভাগে দুর্নীতির উৎস : দুদক টিমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সওজের কাজের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডারিং প্রক্রিয়া অনুসরণ করলেও শর্তানুসারে দেয়া স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন করে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ও ঠিকাদারের চাপে অথবা পরস্পর যোগসাজশে একশ্রেণীর প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। ঠিকাদার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রচলিত প্রথায় পরিণত হয়েছে। কাজ পাওয়ার জন্য অনেক সময় প্রভাবশালী ব্যক্তি, পরামর্শক সংস্থা, সরকারি কর্মকর্তাদের উৎকোচ (ঘুষ) দিতে হয়। ফলে ডিজাইন ও স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজের মান বজায় রেখে প্রকল্প শেষ করা ঠিকাদারের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে।’ এক্ষেত্রে নির্মাণ কাজের এস্টিমেশন ও ডিজাইন দুর্নীতির একটি উৎস। অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রাক্কলন, টেন্ডার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি, যেমন টেন্ডারের তথ্য ফাঁস, নেগোসিয়েশনের নামে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সাপোর্টিং বা এজেন্ট ঠিকাদার নিয়োগ, বারবার নির্মাণ কাজের ডিজাইন পরিবর্তন, নিুমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার, টেন্ডারের শর্তানুসারে কাজ বুঝে না নেয়া ইত্যাদি দুর্নীতির উৎস। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মেরামত বা সংস্কার কাজের নামে ভুয়া বিল-ভাউচার করে অর্থ আত্মসাৎ হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী ব্যক্তি কর্তৃক বেনামে অথবা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে ঠিকাদারি কাজ পরিচালনা, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ এবং ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর অনৈতিক সুবিধা লাভ দুর্নীতির উৎস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে কাজের গুণগত মান এবং পরিমাণ বজায় না রাখাও দুর্নীতির অন্যতম উৎস। পরিমাণগত দুর্নীতির উৎসের উল্লেখযোগ্য নিয়ামকগুলো হচ্ছে- সড়ক নির্মাণে ব্যবহৃত উপাদানের সঠিক অনুপাত নিশ্চিত না করা এবং সড়কের পুরুত্বের পরিমাণ টেন্ডারের স্পেসিফিকেশনের চেয়ে কম থাকা। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করে প্রকল্প মূল্য এবং সময় বৃদ্ধি দুর্নীতির পথকে প্রশস্ত করে।

সওজের দুর্নীতি বন্ধের সুপারিশে দুদক বলেছে, নিম্নমানের ইট, বালি ও খোয়া দিয়ে সড়ক নির্মাণের মধ্য দিয়ে যে দুর্নীতি হয় তা বন্ধ করতে হবে। সড়কের কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তা তদারকির জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে হবে। স্পেসিফিকেশনের চেয়ে কম বিটুমিন ব্যবহার করে সড়ক নির্মাণ বা মেরামতে ক্রমাগতভাবে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হচ্ছে- এটা বন্ধ করতে হবে। প্রভাবশালীদের চাপ থেকে প্রকৌশলীদের সুরক্ষা দিতে হবে। প্রকল্পের কাজে দরপত্রে টেকনিক্যাল ফাইন্যান্সিয়াল অফার মূল্যায়নে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

নির্মাণ কাজে গাফিলতি ও ঠিকাদার নিয়োগে নীতিমালা লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সুপারিশে বলা হয়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত বিল দেয়ার আগে তার কাজের পরিমাণগত ও গুণগত মান সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট এলাকার নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির মতামত গ্রহণ করা যেতে পারে। হিসাবরক্ষণ অফিসগুলোতে এ মর্মে একটি নির্দেশনা দেয়া প্রয়োজন। কোনো বিল সামাজিক নিরীক্ষা ছাড়া দেয়া হলে সংশ্লিষ্ট হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন।

এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম মঙ্গলবার বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশ পেয়েছি। ওই সুপারিশের আলোকে কী করণীয় রয়েছে সে সম্পর্কে মতামত দিতে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। এছাড়া দুর্নীতি বন্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন জেলায় আমরা গণশুনানি করছি। ইতিমধ্যে খুলনা, সিলেট, গাজীপুর, গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় গণশুনানি হয়েছে। ক্রমান্বয়ে সব জেলায় এ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

শিক্ষা খাতে দুর্নীতি : দুদকের শিক্ষা সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিম প্রশ্নপত্র ফাঁস, নোট বা গাইড, কোচিং বাণিজ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মাণ, এমপিওভুক্তি এবং শিক্ষক নিয়োগ ও বদলিসহ নানা খাতে দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করেছে। এসব খাতের দুর্নীতি বন্ধের জন্য সুনির্দিষ্ট ৩৯ দফা সুপারিশ করে কমিশনে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। শিক্ষা টিমের প্রধান ছিলেন দুদকের একজন পরিচালক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিমের এক সদস্য যুগান্তরকে বলেন, টিমের কাজ চলাকালে রাজধানীর বড় দুটি স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ নামিদামি ১৫ স্কুলের ভর্তি বাণিজ্য বন্ধে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হয়। এতে কাজও হয়েছে বেশ। ফলে টাকার বিনিময়ে ঢালাওভাবে সিটের অতিরিক্ত কোনো ছাত্রছাত্রী ওই নামি স্কুলে ভর্তি করাতে পারেনি কোনো চক্র। প্রাতিষ্ঠানিক টিমের সুপারিশে কোচিংবাজ ৫২২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও দীর্ঘদিন ধরে একই স্কুলে থেকে কোচিং করাচ্ছেন এমন ১১৩ জন শিক্ষককে বদলির সুপারিশ করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ নিয়ে বেশ সোচ্চার রয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

দুদকের শিক্ষা টিমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস করা হচ্ছে। এর ফলে দেশের মেধাবী তরুণদের মাঝে হতাশা নেমে আসছে। অদ্ভুত অন্ধকার গ্রাস করতে যাচ্ছে নতুন প্রজন্মকে। পাবলিক পরীক্ষার মাধ্যমেই রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে কিশোরদের প্রথম পরিচয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে সেখানে তাদের পরিচয় হচ্ছে পঙ্কিল দুর্নীতির সঙ্গে। অর্থের বিনিময়ে কতিপয় দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা এ জাতীয় অপরাধে জড়িত থাকেন বলে জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণের প্রতিটি স্থানেই দায়িত্বে রয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। অর্থের বিনিময়ে সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক প্রশ্নপত্র ফাঁস অপরাধমূলক অসদাচরণ, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধ। এসব অপরাধ দমনে দালিলিক প্রমাণাদি পাওয়া কষ্টকর। এ জাতীয় দুর্নীতি দমনের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।’

স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি : স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করেছে দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক অনুসন্ধান টিম। এদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডায়াগনসিসের ৪০ ভাগ কমিশন নেন চিকিৎসক। চিকিৎসকের কাছে কোনো রোগী গেলে কারণে-অকারণে একগাদা পরীক্ষা হাতে ধরিয়ে দিয়ে সেখান থেকে তারা ওই কমিশন নেন। আবার বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে উপঢৌকন বা কমিশন গ্রহণ করে অনেক চিকিৎসক রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের নাম লিখে থাকেন। সেই সঙ্গে কোনো কোনো চিকিৎসক কমিশনের লোভে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেন রোগীকে। কখনও বা অখ্যাত কোম্পানির ওষুধও প্রেসক্রাইভ করা হয়। সরকারি চিকিৎসক কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। কিছু চিকিৎসক আছেন, যারা ওষুধের জেনেরিক নামের পরিবর্তে সরাসরি ব্র্যান্ড নাম লেখেন। এভাবে অনেক চিকিৎসক বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কমিশনের বদৌলতে সম্পদের পাহাড়ও গড়েছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য খাতের মূল দায়িত্ব পালন করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু কারও কারও দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অবৈধ সম্পদ অর্জনের আকাক্সক্ষাসহ তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড মানসম্মত চিকিৎসার অন্তরায়। পাশাপাশি চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়-মেরামত, অবকাঠামো নির্মাণ, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, বদলি, পদায়ন ইত্যাদিও দুর্নীতির অন্যতম উৎস। দুদকের প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতির নানা চিত্র তুলে ধরে তা প্রতিরোধের জন্য ৭ দফা সুপারিশ করে অনুসন্ধান টিম।

এতে বলা হয়, চিকিৎসকদের ইন্টার্নশিপ এক বছর থেকে বাড়িয়ে দুই বছর বাধ্যতামূলক করতে হবে। এতে উপজেলা পর্যায়ে সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে পোস্টিং হওয়ার পরও কোনো চিকিৎসক যদি যোগদান না করেন বা কাজ না করেন তবে তাকে উচ্চশিক্ষার জন্য সুযোগ দেয়া যাবে না। চিকিৎসকদের জন্য সময় উপযোগী ক্যারিয়ার প্ল্যানিং এবং বদলির নীতিমালা করতে হবে। সরকারি কর্মকমিশনের পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসকদের পদোন্নতির বিষয়টি নিশ্চিত করা আবশ্যক। চিকিৎসক শতকরা ৪০ ভাগ কমিশন নিয়ে থাকেন বলে যে অভিযোগ এসেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ ক্ষেত্রে সব প্যাথলজিক্যাল টেস্টের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সরকারিভাবে নির্ধারণ করে দিতে হবে। এছাড়া চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের ব্র্যান্ড বা নাম না লিখে জেনেরিক নাম লেখা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

দুদকের প্রতিবেদন ও সুপারিশ পেয়েছেন কিনা বা পেয়ে থাকলে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান মঙ্গলবার বিকালে বলেন, আমি এখন একটু অফিসের বাইরে আছি। তাই সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না। তবে দুদক কোনো সুপারিশ পাঠালে সেটা ফেলে রাখার কথা নয়। যে সুপারিশ করা হয়েছে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সংস্থায় দুর্নীতির অন্ত নেই। বন্দরের জেটিতে প্রবেশের অনুমতি থেকে শুরু করে যন্ত্রপাতি ক্রয়, কনটেইনার হ্যান্ডলিং, পাইলটিং, ড্রেজিং, নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ, নিজস্ব তহবিল ব্যবস্থাপনা ও বন্দরের ভূমি ইজারাসহ নানা খাতে হয় দুর্নীতি। এই দুর্নীতি দমনে দুদক থেকে ৮ দফা সুপারিশ করা হয়। এতে বলা হয়, বন্দর ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রম পরিচালনায় দৈনন্দিন যান্ত্রিক মেরামতের উদ্দেশ্যে লিমিট টেন্ডারিং মেথডের মাধ্যমে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্রয় নিরুৎসাহিত করে ওপেন টেন্ডারিং মেথডের মাধ্যমে যন্ত্রাংশ ক্রয় করতে হবে। সব ধরনের টেন্ডার কাজে ই-টেন্ডার প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক টিমের প্রতিবেদনে গণপূর্ত অধিদফতরের দুর্নীতি রোধে ৯ দফা, বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের দুর্নীতি থামাতে ৯ দফা সুপারিশ করা হয়। এছাড়া ভূমি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি প্রতিরোধে ৫ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, ভূমি রেজিস্ট্রেশন, নামজারি করতে গিয়ে মানুষ সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয় এবং এসব ক্ষেত্রে অবৈধ আর্থিক লেনদেন হয়ে থাকে। এসব দুর্নীতি প্রতিরোধে ভূমি জরিপ কাজে প্রশিক্ষিত কর্মচারী নিয়োগ, চিহ্নিত অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ সব অধিদফতরের কাজে স্বচ্ছতা, জনগণের ভোগান্তি কমানো এবং সব কাজে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করার সুপারিশ করে দুদক।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version