এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের তারিখ আরও এক দফা পেছাল। আগামী ৪ মে ফ্লোরিডার লঞ্চ প্যাড থেকে এটি উৎক্ষেপণের কথা ছিল। এটি এখন আগামী ৭ মে উৎপেক্ষণ হবে। বিটিআরসিকে এ তথ্য জানিয়েছে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস এক্স।
বুধবার বিটিআরসি কার্যালয়ে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত গোলটেবিলে এ কথা জানান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, উৎক্ষেপণের সময়ে যে পরিবর্তন আসতে পারে, তা আগেই বলা হয়েছে। টিআরএনবি সভাপতি জাহিদুল ইসলাম সজলের সভাপতিত্বে ‘বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট : সম্ভাবনার মহাকাশ’ শীর্ষক এ গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পরিচালনায় গঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মেজবাহউজ্জামান, তথ্যপ্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান লার্ন এশিয়ার সিনিয়র ফেলো আবু সাঈদ খান, একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু এবং ব্র্যাক ন্যানো স্যাটেলাইট প্রকল্প পরিচালক খলিলুর রহমান। গোলটেবিল আলোচনায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন টিআরএনবি সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দে।

মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত উৎক্ষেপণের জন্য আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করতে হয়। এখানে মানুষের কোনো হাত নেই। ফলে একাধিকবার তারিখ পেছানো হয়েছে। নতুন নির্ধারিত তারিখকেও সম্ভাব্য তারিখই বলতে হবে। কারণ উৎক্ষেপণের দু’ঘণ্টা আগেও তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অন্য রকম গর্বের যুগে প্রবেশ করবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ তাই এখন অপরিহার্য ভাবনা। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে বড় উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের জন্য রাশিয়ার স্পুটনিকের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদে যে কক্ষপথ লিজ নেওয়া হয়েছে, সেখানে তিনটি স্যাটেলাইট প্রবেশ করানো সম্ভব। তিনি বলেন, নিজস্ব কক্ষপথ পাওয়ার প্রচেষ্টাও অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের দক্ষ নিজস্ব ৩০ জন কর্মী তৈরি করা হয়েছে। দুটি ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এর একটির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট পরিচালিত হবে এবং অপরটি বিকল্প হিসেবে ‘স্ট্যান্ডবাই’ রাখা হবে।

নবগঠিত কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সর্বোত্তম বাণিজ্যিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

লার্ন এশিয়ার সিনিয়র ফেলো আবু সাঈদ খান বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। এটির পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণে এমন কোনো পদক্ষেপ যেন না নেওয়া হয়, যাতে এর সুফল থেকে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী বঞ্চিত হতে পারে।

একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের কক্ষপথের অবস্থান এবং কারিগরি দিক সম্পর্কে কিছু সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে সেগুলো দূর করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, টেলিভিশন স্টেশনগুলো যাতে স্যাটেলাইটের সুবিধা পায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version