এশিয়ান বাংলা, লন্ডন : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের উস্কানি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হতে নির্দেশ দেয়ার পর থেকে যুক্তরাজ্য বিএনপি’র নেতা কর্মীদের হুমকি এবং দেশে অবস্থানরত আত্মীয় স্বজনদের হয়রানির প্রতিবাদে ৫মে দলীয় অফিসে প্রেস ব্রিফিং করেছে যুক্তরাজ্য বিএনপি।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদের পরিচালনায় প্রেস ব্রিফিংয়ে তাদের বক্তব্যে জানানো হয়, লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যাকারী বর্তমান অবৈধ সরকার প্রধান শেখ হাসিনা গত এপ্রিলে লন্ডনে এসে তার দলের নেতা কর্মীদের সন্ত্রাসবাদ তথা জঙ্গি হামলার উস্কানি ও হুকুম দিয়ে গিয়েছেন । তারা বলেন, নিজের দলীয় লোকজনকে আইন হাতে তুলে নিতে এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে লিপ্ত হতে উস্কানি দিয়ে ব্রিটেনের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছেন শেখ হাসিনা। প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয় যে, গত ২১ এপ্রিল ওয়েস্টমিনিস্টার সেন্ট্রাল হলে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সভায় শেখ হাসিনা এই হুকুম দিয়ে যান।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক জানান যে, শেখ হাসিনার এই সন্ত্রাসী হামলার হুকুমের আসকারা পেয়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কিছু নেতা কর্মী যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের টেলিফোনে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের আত্মীয়-স্বজনদের আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কিছু সদস্য প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের আত্মীয় স্বজনরা প্রাণে বাঁচতে বাসা বাড়ি ছেড়ে পলাতক জীবন যাপন করছেন। এছাড়া অনেকের দেশের বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রতিদিন ভিজিট করে হুমকি প্রদান করছেন বলেও তিনি জানান ।

যুক্তরাজ্য বিএনপি’র পক্ষ থেকে এ ধরণের হুমকি ও হয়রানির ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে তা বন্দ্ করার জোর দাবি জানানো হয় । যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক বলেন, শেখ হাসিনা তার বিরোধী মতকে দমন করতে এবং দেশে একদলীয় শাসন টিকিয়ে রাখতে এ ধরণের স্বৈরতান্ত্রিক কাজে লিপ্ত হচ্ছেন । তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পর থেকে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের হুমকি প্রদানের বিষয়টি ব্রিটিশ পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ বিষয়টগুলো খতিয়ে দেখছে বলেও জানানো হয় ।

তিনি বলেন, লন্ডনে শেখ হাসিনা তার দলের নেতা কর্মীদের সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গি হামলার যে উস্কানি ও হুকুম দিয়ে গিয়েছেন সেই বিষয়টি স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের মাধ্যমে তদন্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ বলেন, শেখ হাসিনা এর আগেও ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর তার নেতাকর্মীদের লগি বৈঠা নিয়ে ঢাকায় আসার আহবান জানিয়েছিলেন। তার হুকুমে ঢাকার রাজপথে ওইদিন সাপের মতো করে নিষ্ঠুর ও বর্বরোচিতভাবে বিরোধিমতের মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই হত্যাকাণ্ডের পর শেখ হাসিনার বিরুদ্বে হত্যা মামলাও করা হয়েছিল। কিন্তু ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করে সেই মামলা নির্বাহী ক্ষমতাবলে এবং দলীয় বিচারপতি দিয়ে বাতিল করে দেয়া হয়। সর্বোচ্চ আদালত শেখ হাসিনাকে রং হেডেড হিসেবে ঘোষণা করে। শেখ হাসিনা প্রকাশ্য হুকুম দিয়ে মানুষ হত্যাকারী। চট্রগ্রামে একটির বদলা দশটি লাশ ফেলে দেবার যে হুকুম শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন দেশের জনগণ তা ভুলে যায়নি।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য হেফাজতের নেতা কর্মীদের গ হত্যা করেছিল । তিনি বলেন, তাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে রং হেডেড, হাজার হাজার নেতাকর্মীর গুমখুনের সাথে সম্পৃক্ত, সন্ত্রাসী কার্যক্রমের হুকুমদায়ী, গণ হত্যাকারী সর্বোপরি দুর্নীতিপরায়ণ, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক থেকে টাকা লুন্ঠনকারী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিচার শুরু করার দাবি জানাচ্ছি ।

তিনি বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্বৈরাচারী সরকার। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা জানেন তার বিরুদ্বে আন্তর্জাতিক আদালতে এসব গুম খুনের বিচার অচিরেই শুরু হবে তাই তিনি এখন দিশেহারা হয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, মাদার অব ডেমোক্রেসি খ্যাত, মা বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অন্যায়ভাবে আজ্ঞাবহ আদালতের মাধ্যমে জেলে আটক রাখা হয়েছে ।যুক্তরাজ্য বিএনপির পক্ষ থেকে অনতিবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয় ।

তিনি বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমানের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে শেখ হাসিনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছেন । বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানকে যে বিচারক খালাস দিয়েছিলেন তিনি এখন দেশছাড়া। এর পরে আজ্ঞাবহ আদালত দিয়ে বিএনপির নেতৃত্বের বিরুদ্বে ফরমায়েশি রায় করানো হচ্ছে। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে, যুক্তরাজ্য বিএনপির পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার বক্তব্যের মাধ্যমে ব্রিটেনে সন্ত্রাসবাদকে উস্কে দেয়া এবং বহু মত ও বহু সংস্কৃতির ব্রিটিশ কমিউনিটিতে যে হানাহানি ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে গিয়েছেন স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের মাধ্যমে তদন্ত পূর্বক বিচার দাবি করা হয় । স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নির্দেশে শুরু হওয়া যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ এবং দেশে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের আত্মীয় স্বজনদের হয়রানি বন্ধেরও জোর দাবি জানানো হয়। পরিশেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে ধন্যবাদ জানানো হয় ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল হামিদ চৌধুরী, সাবেক সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ খান, কামাল উদ্দিন, সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আলম, আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু, সাবেক সিনিয়র সদস্য মিছবাউজ্জামান সোহেল, যুক্তরাজ্য যুবদলের সভাপতি রহিম উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. নাসির আহমেদ শাহীন, জাসাসের সভাপতি এমাদুর রহমান এমাদ, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, নিউহাম বিএনপির সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, বিএনপি নেতা মাওলানা শামিম আহমেদ, আব্দুল আজাদ, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল হক রাজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান, সৈয়দ আতাউর রহমান, জোবায়ের ইসলাম, মিয়া মির্জা সুজন, লাকি আহমেদ, আলমগীর শেখ, সাংবাদিক মাফফুজুর রহমান খান, মোহাম্মদ মাসুদুজ্জামান মাসুদ, আবদুর রহিম, সরদার মারুফুর রহমান, মো. হাসনাইন প্রমুখ।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version