এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : নতুন কমিটি গঠন ছাড়াই শেষ হলো বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন। শনিবার সকালে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হলেও বয়স ইস্যুতে একপর্যায়ে তা মুলতবি করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ। এরপর বিকাল সাড়ে ৩টায় দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হলে সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ
সম্পাদক কমিটির বিষয়ে সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং তিনি জানানোর পর নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে জানিয়ে ২৯তম সম্মেলন শেষ করেন। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগাঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, আবদুর রহমান, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ। দ্বিতীয় অধিবেশনের শুরুতে ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান লিমন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশনা মোতাবেক ঘোষণা দেন ১৯৯০ সালের ১১ই মে’র আগে যাদের জন্ম হয়েছে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এরপর তিনি ২৮ বছরের ঊর্ধ্ব পদপ্রত্যাশীদের নাম প্রকাশ করেন এবং সবাইকে সম্মেলনস্থল ত্যাগ করার নির্দেশ দেন।
কিন্তু কেউ বের না হওয়ায় লিমন পুনরায় তাদের সম্মেলনস্থল ত্যাগের নির্দেশ দেন। এবং বৈধ প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। এ সময় বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও সম্মেলনের প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বয়স ২৮ রাখার পক্ষে মত দেন। তবে উপস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কয়েকজন প্রধানমন্ত্রী বয়স ২৮ বছর ৩৬৪ দিন করেছেন বলে জানান। এই নিয়েই আলোচনা শুরু হলেও তারা কেউই একমত হতে পারেননি। এক পর্যায়ে দুপুরে পৌনে ১১টার দিকে সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন স্থগিত করেন। এরপর সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন ও উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতারা গণভবনে যান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে। বেলা পৌনে ৩টার দিকে কোনো ধরনের সমাধান ছাড়াই সোহাগ-জাকির ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ফিরে আসেন। সাড়ে ৩টায় ফের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হলে এসএম জাকির হোসাইন বলেন, ‘আমরা নতুন কমিটি গঠনের জন্য কয়েকটি নাম প্রধানমন্ত্রীর হাতে দিয়েছি। তিনি সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দ্রুতই আমাদের জানাবেন। এরপর নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। হয়তো দু’একদিন সময়ও লাগতে পারে।’ এ সময় সংগঠনটির সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন সমাপ্ত ঘোষণা করে বলেন, ‘সকল সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনার। নতুন কমিটি নিয়ে তার দেয়া সিদ্ধান্ত আমরা আপনাদের পরবর্তীতে জানিয়ে দিবো।’ এর আগে গত শুক্রবার ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বয়স ২৭ বছর। কিন্তু বর্তমান কমিটি ইতিমধ্যে ৯ মাস বিলম্ব করে ফেলেছে। তাই এক বছর গ্রেস দিচ্ছি।’ ছাত্রলীগের শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী বয়স ২৮ বছর ধরে বৈধ এবং বয়সের কারণে বাদ পড়া প্রার্থীদের তালিকা ছাত্রলীগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায় সভাপতি পদে বৈধ প্রার্থী ৬৬ জন এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ১৬৯ জন। এদের মধ্যে অনেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উভয় পদেই আবেদন করেছেন। এদিকে গতকাল সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন সমাপ্ত ঘোষণাকালে মহাকাশে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আনন্দ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন সাইফুর রহমান সোহাগ। আজ সংগঠনটির সকল সাংগঠনিক ইউনিট এ কর্মসূচি পালন করবে এছাড়াও শনিবার বিকেলে তাৎক্ষণিকভাবে একটি আনন্দ মিছিল করা হয়েছে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version