এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাই কোর্ট যে জামিন দিয়েছিল, তা বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।

পাশাপাশি ওই দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হাই কোর্টে নিষ্পত্তি করার আদেশ এসেছে সর্বোচ্চ আদালত থেকে।

দুই মাস আগে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানির পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ বুধবার এই রায় দেয়।

তবে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার থাকায় এখনই খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলছে না বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে এ মামলার রায়ের পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদাকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তি এখনই না- মওদুদ : বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ আপিল বিভাগে বহাল থাকলেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি পেতে বিলম্ব হবে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লায়, ঢাকায় এবং নড়াইলে কয়েকটি মামলা রয়েছে। সেগুলো থেকে জামিন নেয়ার পরই তিনি মুক্তি পাবেন। তবে শিগগিরই তিনি আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন মওদুদ।

বুধবার হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বহালের রায় দেয়ার পর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এ কথা বলেন।
বুধবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ আপিল বিভাগ বহাল রেখেছেন। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হাইকোর্টের আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।

দুই মাস আগে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানির পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এই রায় দেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে কুমিল্লায় দুটি ও নড়াইলে একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলাগুলোয় জামিন পেলে তবেই খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। যেগুলোতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। বিশেষ করে কুমিল্লায়। এগুলোতে তিনি যদি জামিন পান তা হলে তার মুক্তি পেতে বাধা থাকবে না।

এর আগে মঙ্গলবার রায়ের জন্য ধার্য থাকলেও অ্যাটর্নি জেনারেল আবার যুক্তিতর্ক তুলে ধরার আবেদন জানালে অনুমতি দেন আপিল বিভাগ।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫।

এর পর থেকে খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। রায়ের পর আপিল করে জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া, যার ওপর শুনানি নিয়ে গত ১২ মার্চ হাইকোর্ট তাকে চার মাসের জামিন দেন।
এ জামিন স্থগিত চেয়ে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক আবেদন করে। শুনানি নিয়ে ১৪ মার্চ আপিল বিভাগ ওই জামিন স্থগিত করে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে এ সময়ের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলেন।

অন্যদিকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা, যা সেদিন চেম্বার বিচারপতির আদালতে ওঠে।

আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। পরে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল করে। ১৯ মার্চ আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত রেখে শুনানির জন্য ৮ মে নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগ।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version