এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরদিনই আরও দুটি মামলায় খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের আদেশ হয়েছে ঢাকার হাকিম আদালত থেকে।

মানহানির এই দুটি মামলায় ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতের দুজন হাকিম বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের মাঠে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে বসে আলাদা আদেশে পরোয়ানা কার্যকর করতে বলেন।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসনকে হাই কোর্টের জামিন আদেশ বহাল রেখে গত বুধবার রায় দেয় আপিল বিভাগ।

কিন্তু আরও অন্তত ছয়টি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোয় আপাতত মুক্তি মিলছে না গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি খালেদার।

সেই মামলাগুলোর সঙ্গে এখন মানহানির এই মামলা দুটি যোগ হচ্ছে। এই মামলাগুলোর একটি হয়েছে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে, আরেকটি ১৫ অগাস্ট জন্মদিন পালন নিয়ে।

বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার আদালতে মামলাটি করেন ‘জননেত্রী পরিষদ’র সভাপতি এ বি সিদ্দিকী।

মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম মামলাটি করেন ২০১৬ সালের ৩০ অগাস্ট।

মামলা দুটিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। কিন্তু তা তামিল করতে পারেনি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার মামলা দুটির ধার্যদিনে খালেদার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন।

অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, “খালেদা জিয়া চার মাস ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন। পুলিশ চার মাসেও তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে পারেনি, সেটা তাদের ব্যর্থতা। সব বিবেচনায় মাথায় রেখে খালেদা জিয়ার জামিন চাই।”

অন্যদিকে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আগে কার্যকর করে তারপর জামিন আবেদনের শুনানি করার আরজি জানান।

দুই পক্ষের শুনানি শেষে ভুয়া জন্মদিন পালন অভিযোগের মামলায় হাকিম খুরশীদ আলম এবং পতাকা অবমাননার মামলায় হাকিম আহসান হাবীব উভয়ই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের আদেশ দেন। সেই সঙ্গে আগামী ৫ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন রাখেন দুই হাকিম।

আইনজীবীরা জানান, যেহেতু খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন, এখন পুলিশ কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই দুটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর উদ্যোগ নেবে।

খালেদাকে বন্দি রাখতে তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর উদ্যোগ সরকার নেবে বলে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে আসছেন।

বুধবার আপিল বিভাগের আদেশের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, নিম্ন আদালতে মোট সাতটি মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ আছে। এর মধ্যে তিনটি মামলা কুমিল্লায়, দুটো মামলা ঢাকার আদালতে; আর নড়াইল ও পঞ্চগড়ে একটি করে মামলা।

তবে পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, এই ধরনের মামলার সংখ্যা ছয়টি।

তবে ঈদের আগেই খালেদার মুক্তির আশা রেখে তিনি বলেছিলেন, “ম্যাডামকে এখন ৬টা মামলায় শোন অ্যারেস্ট দেখানো আছে। সেই মামলাগুলো নিয়ে আমরা হাই কোর্টে মুভ করব। আমরা প্রত্যাশা করছি, আগামী ৭/১০ কর্ম দিবসের মধ্যেই ওইসব মামলায় জামিন পাওয়া যাবে।”

মুক্তি পেতে হলে এখন আগেরগুলোর সঙ্গে মানহানির এই দুটি মামলায়ও জামিন পেতে হবে বিএনপি চেয়ারপারসনকে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version