এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে সামান্য যোগাযোগ রাখাটাও ভারতের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। দিল্লিতে ‘অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ (ওআরএফ) আয়োজিত ‘ইন্দো-বাংলাদেশ : ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক দৃষ্টিকোণ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

এইচটি ইমাম বলেন, বিএনপির কিছু নেতা ভারতে এসে তাদের নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হল, তারা শুধু পাকিস্তান এবং সে দেশের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই’র লোকই নন, চিনপন্থীও বটে। জামায়াতের মতোই মৌলবাদী জঙ্গিদের খপ্পরে চলে গেছে বিএনপি। এ দলটি এখন জামায়াতেরই একটি বর্ধিত অংশ।

অনুষ্ঠানে এইচটি ইমাম ভারতকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বাংলাদেশ তার মাটিকে কোনো সন্ত্রাসী বা জঙ্গি কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করতে দেবে না। এ ব্যাপারে আমরা ভারতকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব। আমাদের সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্সে (শূন্য সহনশীলতা)’ নীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এবং তার সরকার সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে মনোভাব পোষণ করে। কেউ বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারতের জন্য ক্ষতিকারক কিছু করতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, বিতর্কিত ইসলাম প্রচারক জাকির নায়েককে কখনও বাংলাদেশে আসতে দেয়া হবে না। বাংলাদেশ থেকে তিনি (জাকির নায়েক) কোনো সহযোগিতা পাবেন না।

বিএনপি নেতাদের সাম্প্রতিক ভারত সফরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা ভারতে এসেছিলেন। কারা এসেছিলেন আমরা তাও জানি, তবে নাম বলতে চাই না। তারা শুধু পাকিস্তান এবং সে দেশের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই’র লোকই নন, চিনপন্থীও বটে। যা ভারতের স্বার্থের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি পুরোপুরি ইসলামিক মৌলবাদীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে দাবি করেন তিনি। এইচটি ইমাম বলেন, জামায়াতের মতোই মৌলবাদী জঙ্গিদের খপ্পরে চলে গেছে বিএনপি। কোনো ধর্মনিরপেক্ষ সরকার এই দলকে সহ্য করতে পারে না। জামায়াতেরই একটি বর্ধিত অংশ এখন বিএনপি। বাংলাদেশে ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশের পাকিস্তানপন্থী শক্তিগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গোটা পরিস্থিতির দিকে সরকার সতর্ক নজর রাখছে। নাশকতা শুরুর চক্রান্ত করছে এই অংশ। পাকিস্তান ভেঙে আমরা যে স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি করেছিলাম, সেটা ফের পাকিস্তানে ফিরে যাব বলে নয়! ভোটের প্রচারে বিএনপি-জামায়াত জোট ভারতবিরোধী তাস খেলবে, এটা আমরা জানি। বলা হবে হাসিনা সরকার ভারতের অনুগত এবং হিন্দুপন্থী।

ভারত থেকে ইউরোপে : রোববার দিল্লির অনুষ্ঠান শেষ করেই বেলজিয়ামে ব্রাসেলসের উদ্দেশে রওনা দেন এইচটি ইমাম। ১০ জুলাই ইউরোপীয় পার্লামেন্টে অনুষ্ঠেয় ‘বাংলাদেশ ইলেকশন ২০১৮, দ্য স্টে অব পলিটিক্স, ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি’ শীর্ষক সেমিনারে যোগ দেবেন তিনি। এ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে তার সঙ্গী হবেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য ড. মশিউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দিপু মনি, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি। সেখানে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন এবং সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন এ টিমের একজন সদস্য।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version