এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে কৌশল বদলাবেন না বলে জানিয়েছেন ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। রাশিয়া বিশ্বকাপের আগের ম্যাচগুলোর মতো ‘একই খেলা’ সেমি-ফাইনালে শিষ্যদের কাছে চান তিনি।
আজ লুজনিকি স্টেডিয়ামে রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় মুখোমুখি হবে দুই দল।
চলতি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হওয়া প্রতিপক্ষদের মধ্যে ক্রোয়েশিয়াই সবচেয়ে কঠিন। তবে সাউথগেট জানিয়েছেন আগের ম্যাচগুলোর মতো আক্রমণাত্মক ছকে খেলবে তার দল।
দলের কাছে কি চান এমন প্রশ্নের জবাবে সাউথগেট আইটিভিকে বলেন, “আমরা যেটা করছি সেটাই করে যেতে পারাটা। রক্ষণভাগের শৃঙ্খলা ধরে রাখা, ভালোভাবে সংগঠিত হয়ে এবং কৌশলগত সতর্কতার সঙ্গে খেলা এবং বল পেলে আগের ম্যাচগুলোতে যে ছকে আমরা নিজেদেরকে স্বাধীনভাবে মেলে ধরেছি এ ম্যাচেও একইভাবে মেলে ধরা।”
রিয়াল মাদ্রিদের লুকা মদ্রিচ ও বার্সেলোনার ইভান রাকিতিচের উপস্থিতিতে ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠকে বলা হচ্ছে সেরা মাঝমাঠ। এ দুজনকে আটকাতে জর্ডান হেন্ডারসনের সঙ্গে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এরিক ডায়ারকে আনার ইঙ্গিত অবশ্য দেননি সাউথগেট। তবে প্রতিপক্ষের মাঝমাঠের শক্তি নিয়ে ভালোভাবে সতর্ক তিনি।
“অবশ্যই তাদের শক্তিশালী মিডফিল্ড আছে। তাদেরকে খেলার জায়গা না দেওয়া এবং মাঠে দূরত্ব ও আওতার ধারণা সঠিক রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। আক্রমণে উঠে ক্রোয়েশিয়াকে সঠিক সময়ে চাপ দেওয়াটাও আমাদের জানতে হবে। কেননা তারা খুবই উঁচু মামের প্রতিপক্ষ। যদি আপনি অপরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করেন, তাহলে তারা সুযোগ নেবে এবং আমাদের এটা নিয়ে সচেতন থাকতে হবে।”
রাহিম স্টার্লিংকে আক্রমণভাবে খেলানো নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কেননা ম্যানচেস্টার সিটির এই উইঙ্গার ২০১৫ সালের অক্টোবরের পর জাতীয় দলের হয়ে কোনো গোল পাননি। স্টার্লিংয়ের অবদান দলের জন্য প্রয়োজনীয় মনে করছেন ইংল্যান্ড কোচ।
“আমি মনে করি, আমরা যেভাবে খেলছি সেখানে রাহিম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তার মুভমেন্ট, যেভাবে সে পজেশন নেয়, তার বল প্রেস করা, দলের জন্য তার পরিশ্রম, ফ্রি কিক ও কর্নার আদায় করা এবং তার গতি-এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।”
“সে সুইডেনের জন্য ধারাবাহিক হুমকি ছিল। অবশ্যই সে যেটা করতে পছন্দ করত সেই গোলটা পায়নি কিন্তু আমার এবং দলের কাছে আমরা যেভাবে খেলছি সেখানে সে একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।”
কোয়ার্টার-ফাইনালে সুইডেনকে সহজেই ২-০ গোলে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। রাশিয়াকে হারাতে অবশ্য যথেষ্ট বেগ পেতে হয় ক্রোয়েশিয়াকে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা সমতায় শেষের পর টাইব্রেকারে জিতে ক্রোয়াটরা। সেরা আটে অতিরিক্ত সময়ে খেলার দরকার না হওয়ায় শক্তি সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের সুবিধা হয়েছে বলে মনে করেন না সাউথগেট।
“কলম্বিয়ার বিপক্ষে আমাদের অতিরিক্ত সময়ে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছিল এবং ওই পরিস্থিতিতে শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা আমরা জানি।”
“কিন্তু বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালের জন্য যে কোনো দল শক্তি সঞ্চয় করবে এবং অনুপ্রেরণা খুঁজবে। তাই তিন দিন আগে ক্রোয়েশিয়া আমাদের চেয়ে আধ ঘণ্টা বেশি খেলেছে বলে আমরা ম্যাচটা জিতব না; আমাদের ভালো খেলে জিততে হবে।”
১৯৯০ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল খেলা নিয়ে দল আত্মতুষ্টিতে ভুগছে না বলে জানিয়েছেন সাউথগেট।
“আমরা কেউ তুষ্ট নই এবং কেউ উচ্ছ্বাসে ভেসেও যাচ্ছে না। এটা খুবই উন্মুক্ত ম্যাচ; আমরা জানি আমরা কি করতে চাই এবং প্রস্তুতির দিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।”
“সারাটা পথ আমরা যেটা করে এসেছি শুধু সেই পরিকল্পনা নিয়েই লেগে থাকব আমরা।”