এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : সালটা ১৯৫৮। ইউরোপের শক্তিশালী দল সুইডেনে মারিও জাগালোর শিষ্যরা। ১৭ বছরের টগবগে তরুণ পেলে সেমিফাইনালে হ্যাটট্রিক করে ফাইনাল খেলতে নেমেছেন। গারিঞ্চা, পেলেরা সুইডেনের জালে বল জড়িয়েছিলেন পাঁচবার। ফ্রান্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা ‘কালো মানিক’ ফাইনালেও পেয়েছিলেন জোড়া গোল। সুইডেনের স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে ব্রাজিলকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ উপহার দেন ফুটবল সম্রাট। পেলের পরে অনেক পেলে এসেছেন ব্রাজিলের হয়ে। কেউ তার জায়গা নিতে পারেননি।

এবার বিশ্বকাপে ফ্রান্সের বিস্ময়বালক কিলিয়ান এমবাপ্পেকে দেখে অনেকেই পেলের সঙ্গে তুলনা করছেন। রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে তার জোড়া গোলে আর্জেন্টিনাকে হটিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় ফ্রান্স। শিরোপা থেকে এক পা দূরে এখন তারা। পেলের রেকর্ড ছোঁয়ার সুযোগ এমবাপ্পের সামনে। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে পেলে নকআউট পর্বে ছয় গোল করেছিলেন। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম এবং কোনো টিনএজারের প্রথম। কোয়ার্টারে তার একমাত্র গোলে জিতে সেমি নিশ্চিত করেছিল ব্রাজিল। ফ্রান্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে ফাইনালে পা রেখেছিল সেলেকাওরা। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে সুইডেনকে গোলবন্যায় ভাসানো ম্যাচে পেলের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। জোড়া গোল করেছিলেন তিনি।

এমবাপ্পের সামনে সেই রেকর্ড ছোঁয়ার হাতছানি। বেলজিয়াম-বাধা পার করা ফ্রান্স টগবগে আছে। এমবাপ্পেও আছেন ফুরফুরে মেজাজে। পেলের রেকর্ড ছোঁয়ার মাধ্যমে হয়তো দ্বিতীয় বিশ্বকাপের মুখ দেখতে পারে ফ্রান্স। ফুটবলে অসম্ভব বলে কিছু নেই। এমবাপ্পে যেভাবে খেলে যাচ্ছেন তাতে চার বিশ্বকাপে পেলের ১২ গোলের রেকর্ড হুমকির মুখে পড়তে পারে।

এমবাপ্পেকে বিদ্রূপ করেন নেইমার : গোল না পেলেও বেলজিয়ামের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ভালো খেলেছেন ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পে। বেলজিয়াম-বধ করে ফাইনালে পৌঁছে গেছে ফ্রান্স। এরইমধ্যে বোমা ফাটালেন এমবাপ্পের মা। তার অভিযোগ, পিএসজিতে এমবাপ্পের সতীর্থ নেইমার তার ছেলের পেছনে লেগে থাকেন। তাকে বিদ্রূপ করেন। এই কাজে নাকি নেইমারের সঙ্গী দানি আলভেজ। এতে বিরক্ত এমবাপ্পের মা ফায়জা লামারি। নেইমার ও ফায়জার মধ্যে এ নিয়ে একবার কথা কাটাকাটিও হয়েছে।

নেইমারকে তার ছেলের কাছ থেকে দূরে থাকার জন্য কড়া হুশিয়ারি দিয়েছেন ফায়জা। তিনি বলছেন, ‘হতে পারে নেইমার ও দানি আলভেজ অনেক বড় ফুটবলার। আমার ছেলের এখন নিজেকে তৈরি করার বয়স। ও আরও বড় হতে চায়। ফুটবলের বাইরে ওর কোনো জীবন নেই। উচ্ছৃঙ্খলতার মধ্যে ও গা ভাসায় না। বান্ধবীদের সঙ্গে সময় কাটাতে চায় না। নেইমাররা উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করে। এমবাপ্পেকেও ওরা ওদের সঙ্গে ফুর্তি করার জন্য ডেকেছিলেন। আমার ছেলে তাতে রাজি না হওয়ায় পরিকল্পনা করে ওকে নিয়মিত বিদ্রূপ করা হয়। শুধু তাই নয়, পোশাক বা অন্য বিষয়ে আমার ছেলে কখনও বিলাসিতা করে না। আমার ছেলে একজন সাধারণ মানুষের মতো থাকতে ভালোবাসে। সেটা নিয়েও ওকে কটু কথা বলা হয়।’

পিএসজির ড্রেসিংরুমে এমবাপ্পেকে মজা করে ‘ডোনাতেলো’ বলে ডাকা হয়। এটি একটি কার্টুন চরিত্র, যে খুবই সরল প্রকৃতির এবং চালাকিতে বন্ধুদের সঙ্গে পেরে ওঠে না। ফায়জার অভিযোগ, এই নামকরণের পেছনে রয়েছে নেইমারের হাত! এমবাপ্পের ব্যাগে নাকি একবার ডোনাতেলোর একটি মুখোশ ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন নেইমার। এই রসিকতা পছন্দ করেননি এমবাপ্পে। তবে প্রকাশ্যে বিবাদে জড়াননি। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘মেনে নাও ডোনাতেলো যথেষ্ট ভালো খেলেছে।’ ওয়েবসাইট।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version