এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ভারতের সীমান্ত ঘেঁষে আবহাওয়া স্টেশন তৈরি করে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে চীন। ভারত–তিব্বত সীমান্তে চীন গড়েছে আবহাওয়া স্টেশন। তিব্বতের এমন দূর্গম এলাকার ইউমাই শহরে আবহাওয়া স্টেশন তৈরি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভারত।

তবে চীনের সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের দাবি, তিব্বতের শানান এলাকায় আবহাওয়ার গতিবিধি বুঝে কাজ করতে সুবিধা হবে সীমান্তে নিযুক্ত চীনা সেনাদের। এছাড়া পরিবহন ক্ষেত্রে কাজ করতে সহজ হবে।

ইউমাইয়ের এ স্টেশনের কর্মকর্তা তাশি নরবু বলেন, এ স্টেশন থেকে আবহাওয়ার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। এলাকার তাপমাত্রা, বায়ুচাপ, জলীয় বাস্প ও হাওয়ার গতিবিধি বিষয়ে খবর দেবে এই স্টেশন।

ভারতের দাবি, মুখে এক কথা বলা বললেও মূলতঃ অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত লাগোয়া স্থানীয় আবহাওয়ার গতিবিধি বুঝেই চীনের সেনা সেখানে ঘাঁটি গড়বে। কারণ সীমান্তে নিযুক্ত দুইদেশের সেনার কাছে নজরদারি চালানো সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তাই ইউমাই শহরে এই স্টেশন তৈরি করে ভারতকে কূটনৈতিক স্তরে চাপে রাখতে চাইছে বেজিং। ভারতের কূটনৈতিক মহলও মনে করছেন এটা ভারতের উদ্দেশ্যে চীনের ছুঁড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ।

সোনার খনি নিয়ে ভারত-চীন নতুন যুদ্ধ!

দোকালাম-পরবর্তী প্রেক্ষিতে অরুণাচল নিয়ে ফের চীন-ভারত সঙ্ঘাতের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে! ইঙ্গিত অন্তত তেমনটাই। সৌজন্যে, ভারত সীমান্তে সোনার খনির সন্ধান পাওয়া গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অরুণাচল সীমান্তবর্তী নিজেদের ভূখণ্ডে জোরকদমে খননকাজ শুরু করেছে বেইজিং। যেখানে সোনা, রুপোসহ অন্যান্য মূল্যবান খনিজের বিশাল সম্ভারের খোঁজ পাওয়া গেছে। যার আনুমানিক মূল্য ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। আর এই স্বর্ণখনির সন্ধান অরুণাচলকে কেন্দ্র করে নতুন করে চীন-ভারত সঙ্ঘত উস্কে দিয়েছে।

হংকংয়ের ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চীনের অধীনে থাকা হুনজে কাউন্টিতে এই খননকাজ শুরু হয়েছে। ভারতীয় সীমান্ত লাগোয় হল এই হুনজে প্রদেশ। অরুণাচলকে দীর্ঘ দিন ধরেই চীন দক্ষিণ তিব্বত বলে দাবি করে আসছে। সে কারণেই প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি বা ভারতের যেকোনো পদস্থ কর্মকর্তা সেখানে পা রাখলে তার প্রতিবাদ জানায় বেইজিং। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই স্বর্ণখনির সন্ধান ও সেখানে খননকাজ চীনের পালে হাওয়া দেবে বলে জানিয়েছে মর্নিং পোস্ট। জোরদার করবে অরুণাচলের দাবিকে।

প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক সম্পদের সম্ভার এই অঞ্চল দক্ষিণ তিব্বতের দাবিকে আরো সুদৃঢ় করবে। খনিজ উত্তোলনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সীমান্তে ব্যাপক নির্মাণকাজ অরুণাচলকে আরেকটা ‘দক্ষিণ চীন সাগরে’ পরিণত করতে পারে বলে জানিয়েছে ওই পত্রিকা।

গত এপ্রিলের শেষে ইনফর্মাল বৈঠকে যোগ দিতে চীনে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার একমাস কাটতে না কাটতেই অরুণাচল লাগোয়া প্রাকৃতিক সম্পদের ভাণ্ডার নিয়ে এই রিপোর্ট প্রকাশ করল মর্নিং পোস্ট। ভারত-ভুটান-চীনের ত্রিদেশীয় অঞ্চল দোকালাম অচলাবস্থা নিয়ে বেইজিং-নয়াদিল্লির সম্পর্কের যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল, তাতে প্রলেপ দিতেই ‘হার্ট টু হার্ট’ বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি। বেআইনি নির্মাণকে কেন্দ্র করে ৭৩ দিন চলেছিল দোকালাম অচলাবস্থা।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version