এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : রায় দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা। এখন থেকে এই রাজ্যের নাম হবে বাংলা। ‘পশ্চিম’ শব্দটি বাদ দেওয়াটা যুক্তিযুক্ত মনে হয়। কারণ, পূর্ব বাংলা বলে এখন কিছু নেই। ওই নাম অনেক আগেই প্রতিস্থাপন করেছে বাংলাদেশ নামে রাষ্ট্রটি। সেই কারণে ‘পশ্চিম’ শব্দটি অপচয় ছাড়া কিছু ছিল না।
আর যারা যুক্তি দেখান যে, ‘পশ্চিম’ শব্দটি ঐতিহাসিক অতীতের নির্দেশক, তাদের উচিৎ বর্তমানের সঙ্গে তাল মেলাতে শেখা। তারা কি জানে না যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা দিদির শাসনাধীনে এসব শুধুই পরিবর্তন, পরিবর্তন আর পরিবর্তন! ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম বদলে বাংলা করার বিষয়ে এক সম্পাদকীয়তে এসব বলেছে দেশটির টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকা।
এতে বলা হয়, এখন রাজ্য বিধানসভার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্রের। এই নাম পরিবর্তন নিয়ে দুই বছর ধরে দোদুল্যমান অবস্থায় আছে দিল্লি। এর আগে তিনটি নাম প্রস্তাব করেছিল পশ্চিমবঙ্গ: ইংরেজি ভাষায় বেঙ্গল, বাংলা ভাষায় বাংলা আর হিন্দিতে বাঙ্গাল। তবে কেন্দ্র চেয়েছিল শুধু একটি নামের সুপারিশ। তাই রাজ্য বিধানসভা কেবল ‘বাংলা’ই বেছে নিল।
পুরো বিষয়টি নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ এর উদ্দেশ্য ছিল সামনে এগিয়ে যাওয়ায় অন্তত রাজ্যগুলোর বর্ণনানুক্রমে তো বটেই। দৃশ্যত, মমতা দিদি রাজ্য সরকারগুলোর বৈঠকে বর্ণনানুক্রমে সবার শেষে বক্তব্য দিতে দিতে ক্লান্ত আর অসুস্থ হয়ে উঠেছেন। বাংলা নামকরণের ফলে তিনি একলাফে সামনের সারিতে চলে গেলেন।
নিজের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে এটি বেশ কাজের একটি কৌশল। যখন সাধারণ একটি নাম পরিবর্তনই আপনাকে শীর্ষে তুলে দিতে পারে, তখন রাজ্যের উন্নয়ন সূচক নিয়ে এত চিন্তার কী আছে!
এখন কি উত্তর প্রদেশ রাজ্যও নাম পরিবর্তন করে ‘অধঃপ্রদেশ’ হওয়ার কথা ভাববে? একই ভাবে ত্রিপুরাও নিজের প্রাচীন নাম ‘কিরত দেশ’-এ ফেরত যেতে পারে। শোনা যাচ্ছে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব রাজ্যটিকে তার প্রাচীন শেকড়ে ফিরিয়ে নিতে চান।
তবে বাংলা আবার বাংলা ভাষারও নাম। আবার এটা নিয়ে বেশি চিন্তা করবেন না যে, ‘কালচার’ ছাড়া লোকেদের কাছে বাংলা নামের প্রথম ও প্রধান অর্থই হলো দেশী মদ।