এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনের মা আলিয়া ঘানেম বলেছেন, তাঁর ছেলে ‘ভালো’ ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ওসামার ‘মগজধোলাই’ করা হয়েছিল। ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন আলিয়া।

গার্ডিয়ান বলছে, ছেলের বিষয়ে এই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে কথা বলেছেন আল-কায়েদা নেতার মা আলিয়া ঘানেম। ২০১১ সালে ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার পরও সংবাদমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

আলিয়ার দাবি, ওসামা বিন লাদেন শৈশব ও কৈশোরে ছিলেন মুখচোরা স্বভাবের। বেড়ে ওঠার সময়টাতে তিনি ছিলেন ‘ভালো ছেলে’। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েই তাঁর ‘মগজধোলাই’ হয়।

গার্ডিয়ান লিখেছে, নাইন-ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার পর ওসামা বিন লাদেন ও তাঁর নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদা আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসে। তবে এর আগ থেকেই লাদেনের পরিবার সৌদি আরবে প্রভাবশালী ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে হামলা বা ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন অভিযানে ওসামার মৃত্যুর পরও সেই প্রভাবে কোনো ভাটা পড়েনি।

টুইন টাওয়ারে হামলার পর বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসের সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছিলেন ওসামা বিন লাদেন। পরিবারের দাবি, ১৯৯৯ সালে ওসামার সঙ্গে সর্বশেষ দেখা হয়েছিল তাঁদের। ওই সময় থেকেই আফগানিস্তানে থাকতেন আল-কায়েদা নেতা। তৎকালীন সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে ১৯৮০-এর দশকে আফগানিস্তানে গিয়ে ডেরা বাঁধেন ওসামা বিন লাদেন।

ওসামাকে যখন বিশ্বব্যাপী জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছিল, তখন কেমন লাগছিল তাঁর মায়ের? আলিয়া ঘানেম বলেন, ‘আমরা খুব বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম। আমি এসবের কিছুই চাইনি। কেন সে এমন এমন করেছিল?’ আলিয়া জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিলেন তাঁর ছেলে।

ওসামা বিন লাদেনের বাবা হলেন মোহাম্মদ বিন আওয়াদ বিন লাদেন। ওসামার জন্মের তিন বছর পরই আলিয়া ঘানেমকে তালাক দিয়েছিলেন আওয়াদ। সব মিলিয়ে তাঁর সন্তানের সংখ্যা ৫০। আলিয়া পরে আবার বিয়ে করেন। তাঁর দ্বিতীয় স্বামী মোহাম্মদ আল-আত্তাস লালন-পালন করেছিলেন ওসামাকে। আলিয়ার ভাষায়, ওসামাকে ভালোভাবেই গড়ে তুলেছিলেন আল-আত্তাস।

যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার পর সৌদি সরকার লাদেনের পরিবারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তদন্ত চালিয়েছিল। ওই সময়টাতে ওসামা বিন লাদেন থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলেও তাঁর পরিবারের রেহাই মেলেনি। পরিবারের সব সদস্যের ভ্রমণ ও চলাচল সীমিত করে দিয়েছিল সৌদি সরকার।

গার্ডিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় ওসামা বিন লাদেনের মা আলিয়া ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দুই ভাই হাসান ও আহমাদ। গার্ডিয়ানকে আহমাদ বলেন, ‘আমরা সবাই তাঁর জন্য লজ্জাবোধ করি।’

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version