এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার দানা পানি বিশুদ্ধকরণে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপায়। উপস্যুলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা সন্দর্ভে বলা হয়েছে, সজিনার দানা পানি দূষণ রোধ করে, পানিতে কোনো রকম দূষণীয় ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো অণুজীব উপদান দ্রবীভূত হতে দেয় না। আমেরিকা, নামিবিয়া, ফ্রান্স ও বতসোয়ানার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার আণবিক্ষণিক প্রোটিন উপাদান পানি বিশুদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। একইভাবে সজিনা শরীরকে বিশুদ্ধ রাখে। সজিনাকে আজকের বিশ্বে ‘সুপার ফুড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই সুপার ফুডের অন্তত ছয়টি গুণ আছে, যা একে তারকাখ্যাতি দিয়েছে-
১. পুষ্টির ভান্ডার : লেখার শুরুতেই সজিনার পুষ্টি গুণের কথা বলা হয়েছে। প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি এতে আয়রনও আছে। আয়রনের দিক থেকে এটি পালং শাকের চেয়ে ৫ গুণ বেশি শক্তিশালী।
২. এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি : সজিনার পাতাকে এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি বলা যায়। এর মধ্যে ভিটামিন সি, বেটা-কেরোটিন, কিউরেকটিন এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড বিদ্যমান। উল্লেখ্য, এসব উপাদানই মানবদেহের জন্য উপকারী। বিশেষ করে, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তের চাপ ও শর্করা কমাতে বিশেষ কাজে দেয়। এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অব ক্যানসার প্রিভেনশন দারি করছে, সজিনার পাতায় বিদ্যমান এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়।
৩. ডায়েবেটিস প্রতিরোধক : এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং আইসোথিয়োকাইনেটস নামের উপাদানগুলো নিয়মিত গ্রহণে ডায়েবেটিস কমে যায়। প্রতিদিন মাত্র ৫০ গ্রাম সজিনার পাতা খেয়ে ডায়বেটিস ২১ শতাংশ হ্রাস পায়। তিন মাস এক চা চামচ করে সজিনার পাতার গুড়া খেয়ে ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
৪. তেলেসমাতি : সজিনার বীজের তৈরি তেলে সত্যিই তেলেসমাতি আছে। অন্য যেকোনো ভেজিটেবেল অয়েল-এর চেয়ে এর গুণাগুণ বেশি। দীর্ঘদিনের লিভারের রোগীর জন্য এ তেল খুব উপকারী। সজিনা গ্রহণে খাদ্যের গুণগত মান অটুট থাকে। পচনশীল খাবারকে দীর্ঘস্থায়ীত্ব দিতেও সজিনার তেলের তুলনা নেই। বাতের ব্যথা-বেদনায় যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনি শীতের আর্দ্রতা থেকে ত্বককে রক্ষা করা, রূপচর্চাতেও এই তেল কাজে লাগে।
৫. কোলেস্টেরল কিলার : ঘাতক কোলেস্টেরলকে হত্যা করে সজিনা আপনার হৃদপি-ের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। থাইল্যান্ডে বহু বছর ধরে সজিনাকে হৃদরোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩ মাসের ব্যবহারে এটি কোলেস্টেরল লেভেল অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।
৬. আর্সেনিক দূষণ আর নয় : পানিতে আর্সেনিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা নিরোধে সজিনার বীজ কিংবা পাতা ভূমিকা রাখে। এমনকি আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করতে সজিনা বীজ বা পাতা ব্যবহার কার্যকরী।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version