এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের স্লিপ রিসার্চ সেন্টারের গবেষকেরা সম্প্রতি একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। যেখানে গবেষকেরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, যারা রাত জেগে থাকেন তাদের উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকির সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গেছে।

গবেষকেরা আরও জানান, মানুষের শরীরের একটি প্রাকৃতিক ছন্দ বা দেহ ঘড়ি রয়েছে যার ছন্দ হচ্ছে রাতে ঘুম আর দিনে কাজ। রাতে জাগার ফলে হরমোন পরিবর্তন, দেহের তাপমাত্রায় রদবদল, মেজাজ ও মস্তিষ্কের কাজকর্মে ব্যাপক প্রভাব পড়তে দেখা যায়। গবেষণা সংক্রান্ত নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’ সাময়িকীতে। গবেষকেরা ২২ জন ব্যক্তিকে নিয়ে শারীরিক পরিবর্তনের বিষয়গুলো খেয়াল করেন।

গবেষণা প্রসঙ্গে সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সিমন আর্চার জানিয়েছেন, গবেষণায় দেখা গেছে মানুষের জিনের ৬ শতাংশ ক্ষেত্রে রাত জাগার ফলে পরিবর্তন দেখা যায়। অনিয়মিতভাবে রাত জেগে কাজ করার ফলে দেহ ঘড়ির ছন্দ রক্ষাকারী জিন ৯৭ শতাংশ ক্ষেত্রেই কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে।

গবেষকেরা এ বিষয়টির ব্যাখায় বলেন, একটি বাড়িতে যদি সব ঘরে ঘড়ি থাকে এবং সব ঘড়িতে উল্টা-পাল্টা সময় দেখায় তবে ঘরের অবস্থা যা হতে পারে এক্ষেত্রে রাত জাগার ফলে দেহ ঘড়ির সেরকম তছনছ অবস্থা হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সুস্থ থাকার জন্য প্রতিটি মানুষেরই পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। কেউ যদি টিভি দেখে বা কম্পিউটারে কাজ করে ঘুমাতে যায়, তার মস্তিষ্ক উত্তেজিত থাকে। ফলে ভালো ঘুম হয় না। এতে করে সে ক্ষুধামান্দ্য, বিষণ্নতা, স্নায়ুবৈকল্য ইত্যাদি সমস্যায় ভুগতে পারে। অনেকে রাতে জাগার জন্য ঘন ঘন চা-কফি খান, এটিও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

তাই অকারণ রাতজাগার ‘বদ অভ্যাস’ পরিহার করতে সবার আগে নিজেকে সচেতন হতে হবে। কারও যদি পাঁচটায় ঘুমানোর অভ্যাস থাকে, চাইলেই সে পরদিন ১২টায় ঘুমাতে পারবে না। ধীরে ধীরে অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। প্রথম দিন চারটা, তারপর রাত তিনটা, কিছু দিন পর দুইটা…এভাবে আস্তে আস্তে সময়মতো ঘুমানোর অভ্যাস রপ্ত করতে হবে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version