এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই তেহরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনরায় বহাল করেছে ওয়াশিংটন। তার মধ্যেই দেশটিকে আবারও পরমাণু অস্ত্র তৈরির রসদ দিচ্ছে রাশিয়া।

তেহরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণু চুক্তির আওতায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম শিগগিরই সরবরাহ করা হবে। সমৃদ্ধ করার জন্য এ ইউরেনিয়াম মস্কোয় পাঠানো হয়েছিল। শনিবার ইরানের আণবিক শক্তি কমিশনের মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, এসব ইউরেনিয়াম তেহরানের পারমাণু চুল্লিতে ব্যবহৃত হবে। টাইমস অব ইসরাইল ও স্পুটনিক নিউজ এ খবর জানিয়েছে।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় বিশ্ব শক্তির সঙ্গে জয়েন্ট কম্প্রিহেন্সিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) বা ইরান পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান।

চুক্তি অনুযায়ী তেহরান মধ্য-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পরিত্যাগ ও নিু-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমাতে সম্মত হয়। গত এপ্রিলে ইরান সতর্ক করে দিয়ে জানায়, যদি যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে তারা কৌশলগতভাবে উচ্চ-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করবে। চুক্তি স্বাক্ষরের আগে তারা ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করতে পারত।

কামালভান্দি বলেন, ‘আমরা যখন পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করি, তখন আমরা ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ জ্বালানি উৎপাদন বন্ধ করে দিই। দিয়ে প্রায় দশ কিস্তিতে তা রাশিয়ায় মজুদ করি। প্রায় সাত মাস আগে আমরা সেখান থেকে প্রথম কিস্তি ফেরত পেয়েছি। আর দ্বিতীয় কিস্তি ইরানে পৌঁছানোর অপেক্ষায় রয়েছে। এসব কিস্তির যে কোনোটি এক বছর ধরে ব্যবহার করা যায়। আর তেহরান পারমাণু চুল্লির জন্য আমাদের কাছে সাত-আট বছরের ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ জ্বালানি রয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী বাইরে থেকে জ্বালানি সরবরাহের শর্তে ইরান ইউরেনিয়াম উৎপাদন বন্ধ রেখেছিল বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। কামালভান্দি বলেন, পারমাণবিক চুক্তি সক্রিয় থাকলে, অন্য পক্ষগুলো আমাদের কাছে জ্বালানি বিক্রি করবে। আর চুক্তি বাতিল হয়ে গেলে আমরা নিজেদের জন্য নির্বিঘ্নে ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করব।

চলতি বছরের মে মাসে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশ ও সংস্থা চুক্তিটি বহাল রাখার বিষয়ে একমত পোষণ করেছে। চুক্তিতে স্বাক্ষর করা অন্য দেশগুলো হচ্ছে চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version