এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : জাতীয় নির্বাচনে ইসি ইভিএমের পক্ষে সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিধান যুক্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার ইসি সচিবালয়ে দিনব্যাপী কমিশনের মুলতবি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা এবং তিন কারণ দেখিয়ে নোট অব ডিসেন্ট (লিখিত আপত্তি) দিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার কমিশনের সভা বর্জন করেন।

পরে চার কমিশনারের উপস্থিতিতে আরপিও সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠক শেষে সিইসি জানান, আরপিওতে ৮-১০টি সংশোধনী আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এসব সংশোধনীর মধ্যে ইভিএমই গুরুত্বপূর্ণ।

তবে বাকি সংশোধনীগুলোর বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি কিছু বলতে পারেননি। সিইসি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কথাও জানান সিইসি।
বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে মত দিয়েছিল। আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে সায় দিয়েছিল।

এছাড়া কয়েকটি অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলও প্রকাশ্যে ইভিএমের বিরোধিতা করছে। একইভাবে সংলাপে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল আরপিও সংশোধনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী শব্দ যুক্তের প্রস্তাব করেছিল। এছাড়া আরপিও নিয়ে কমবেশি একশ’ প্রস্তাব উঠে এসেছিল ওই সংলাপে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন অনেকটা তড়িঘড়ি করে ইভিএমের বিধান অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী অন্তর্ভুক্তের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

অন্যান্য সুপারিশও খুব একটা গুরুত্ব পায়নি। তবে আগামী নির্বাচনে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া, ইসির নির্দেশে নির্বাচন কর্মকর্তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলি, জামানত বৃদ্ধিসহ কয়েকটি ছোটখাটো সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ইভিএম বিধান অন্তর্ভুক্তের কারণে কয়েকটি নতুন ধারা ও উপধারা যুক্ত করতে হচ্ছে। ২৬, ২৭, ২৮ ও ৩৬ ধারার কোথাও কোথাও সংশোধনী আনা হচ্ছে। শিগগিরই আরপিওর এ সংশোধনী ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রিসভা হয়ে সংসদে উঠবে। ৯ সেপ্টম্বর সংসদ অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আরপিও সংশোধনী নিয়ে কমিশনারদের মধ্যেও মতভেদ ছিল প্রকাশ্য। এছাড়া সংশোধনীর বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা বক্ষা করা হয়। সাধারণত কমিশন সভায় উপস্থিত ইসির কর্মকর্তাদের আইন সংশোধনের সুপারিশের কপি দেয়া হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার অবস্থা ছিল ভিন্ন। এদিন বেলা ১১টায় কমিশনের মুলতবি সভার শুরুতে আইন সংস্কার কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম একগুচ্ছ সংশোধনীর প্রস্তাব তুলেন।

এতেই আপত্তি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেন, ২৬ আগস্টের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল শুধু আরপিও সংক্রান্ত সংশোধনী আনা হবে। এছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তেমন সময় হাতে নেই। অন্য সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন নেই। এরপরই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ইভিএমের বিরোধিতা করে তিন পৃষ্ঠার নোট অব ডিসেন্ট সভায় পড়ে শোনান।

এরপরই তিনি সভা বর্জন করে বেরিয়ে যান। পরে পাওয়ার প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে আরপিওর বিভিন্ন ধারায় সংশোধনীর প্রস্তাব তুলে ধরেন কবিতা খানম। মধ্যাহ্নভোজের বিরতি দিয়ে সভা চলে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
বৈঠকের পর আরপিও সংশোধনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সিইসি বলেন, আমরা যেমন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে থাকি, তেমনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এটা ব্যবহারের ক্ষেত্র তৈরি করা যায় কি না, সেদিকটি মাথায় রেখে আরপিওতে কিছুটা সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধনীটি পাস হলে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না। তবে ইভিএম প্রদর্শনীমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তখন সব ধরনের স্টেকহোল্ডাররা ইভিএম সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আরপিও সংশোধনীগুলো সংসদের মাধ্যমে অনুমোদন নেয়া প্রয়োজন। সে কারণে কয়েকদিনের মধ্যে সংশোধনীগুলো আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব। আইন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। সংশোধনীর মধ্যে মূলত আমরা ইভিএম প্রবর্তনের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

কী কী সংশোধনী এসেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, উল্লেখ করার মতো আর কোনো সংশোধনী নেই। ইভিএমের সঙ্গে আনুষঙ্গিক কিছু সংশোধনী এসেছে। জরুরি উল্লেখ করার মতো সংশোধনী নেই। সংখ্যা কত তা মনে নেই, তবে ৮-১০টির বেশি হবে না। আইন সংস্কার কমিটি কয়টি ধারা সংশোধনী প্রস্তাব করেছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, কয়টি প্রস্তাব করেছিল, আর কয়টি অনুমোদন করেছি, তা মনে নেই। তবে কমিটি ১৫টির মতো প্রস্তাব করেছে, সব নিইনি। কিছুটা নেওয়া হয়েছে। সংখ্যাটা বলা যাবে না। মূলত ইভিএম নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কেন এখন এ সিদ্ধান্ত- এই প্রশ্নে সিইসি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম হবে সে রকম না। আমরা ইভিএম স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যবহার করে ভালো ফল পেয়েছি। সে কারণে আমরা জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা যায় কি না, সেটার প্রেক্ষাপট তৈরির জন্য আইনের পরিবর্তন এনেছি। কারণ একসময় যদি মনে হয়, আমরা যদি দেখি কমিশন যদি মনে করে ইভিএম করা দরকার, তখন আইন যদি হাতে না থাকে তবে এটা ব্যবহার করা যাবে না। সে কারণেই প্রস্তুতি নেয়া। সিইসি জানান, আমাদের একজন কমিশনার দ্বিমত পোষণ করেছেন। আমরা চারজন কমিশনার সম্মত হয়েছি যে এটার পরিবর্তন আনলে ভালো হবে।

ইভিএম সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের এসেসমেন্ট হল- ভালো রেজাল্ট পাওয়া গেছে। লোকজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলেছে যে, প্রথমদিকে কষ্ট হলেও নির্বিঘ্নে ভোট দেয়া সম্ভব হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ১০০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার হবে, সে রকম সিদ্ধান্ত হয়নি। কমিশন এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। আইন যদি পার্লামেন্ট পাস করে তারপর আমরা আমাদের প্রদর্শনী দেখাব, সেখানে যদি স্টেকহোল্ডারদের সম্মতি থাকে কমিশন বসবে, যদি পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে তাহলে হবে।

বেশির ভাগ দল সেনা মোতায়েন চেয়েছে, এ বিষয়ে আরপিও সংশোধন হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটি নিয়ে কথা হয়নি। ইভিএম বেশির ভাগ দল চায় না- এ প্রশ্নে বলেন, মুভ নিয়েছি। আইন পরিবর্তন করে পরিবেশ যদি অনুকূলে থাকে, তাহলে ব্যবহার করব। ব্যবহার করবই, সে কথা না। প্রস্তুতিমূলক এটা। কমিশনের এমন সিদ্ধান্তে অনাস্থা তৈরি হবে কি না- এমন প্রশ্নে বলেন, আমার মনে হয় না।

দুর্নীতির জন্য এই ইভিএম কেনা হচ্ছে- এমন প্রশ্নে বলেন, আমাদের হাতে টাকা নেই। এ টাকার ব্যবহার আমরা করি না। টাকাপয়সা যা বরাদ্দ হবে, তা নির্বাচন কমিশনের কাছে না, সরকারের কাছে থাকবে।

মাহবুব তালুকদারের সংবাদ সম্মেলন : সিইসির বক্তব্যের পর নিজ কার্যালয়ে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, তিন কারণে আমি নোট অব ডিসেন্ট (লিখিত আপত্তি) দিয়েছি। প্রথমত, নির্বাচন কমিশন ইভিএম আলোচনার প্রথম থেকেই বলে আসছে সব রাজনৈতিক দল না চাইলে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। ইসির সঙ্গে সংলাপের বইয়ে দেখলাম, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে, আর কিছু কিছু রাজনৈতিক দল ইভিএমের পক্ষে। তাহলে আমরা (ইসি) ইভিএম নিয়ে যে বক্তব্য দিলাম, তা রাখতে পারছি না। তাই আমি মনে করি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্তত ইভিএম ব্যবহার করা ঠিক হবে না।

দ্বিতীয়ত, ইভিএম ব্যবহারের জন্য ইসি যাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, আমার নিজের বিবেচনায় এ প্রশিক্ষণ অপ্রতুল। জাতীয় নির্বাচনের প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যাপারে আমি অত্যন্ত সন্দিহান। আর প্রশিক্ষণ দেয়ার যে সময়ের প্রয়োজন হবে, তা আমাদের হাতে নেই।

তৃতীয়ত, ইভিএম ব্যবহারে ভোটারদের মধ্যে অনীহা রয়েছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোয় পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, অনেক ভোটার ইভিএম ব্যবহার করতে চাচ্ছেন না। এর কারণ হচ্ছে- ভোটারদের প্রশিক্ষণ দেয়া দরকার ছিল। তাদের অভ্যস্ত করে তোলা দরকার ছিল। আমাদের মেয়াদকালে প্রথম থেকে যদি আমরা ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতাম, তাহলে এতদিনে তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারতাম। এতদিনে মোটামুটি একটা বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণ দেয়া যেত। এছাড়া কর্মপরিকল্পনার কোথাও ইভিএম ব্যবহারের কথা নেই। এটা হঠাৎ করেই নির্বাচনের আগে আগে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে গেল। এতে আমার মনে হয়, ভোটারদের অভ্যস্ত না করলে ইভিএম সাকসেস হবে না।

তিনি বলেন, আমি ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে নই। তবে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি আমাদের নেই। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোয় ইভিএমের ব্যবহার যদি আরও বাড়ানো যায়, তাহলে আশা করি ৫-৭ বছরের মধ্যে এ মেশিন ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে উঠবে। তখন ৫ বা ১০ বছর পর হোক, ইভিএম ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে উঠবে।

দেড় লাখ ইভিএম মেশিন কেনার প্রকল্পে পাঁচ কমিশনার সম্মতি দিয়েছেন- সিইসির এমন বক্তব্যের বিষয়ে তার অবস্থান জানতে চাইলে মাহবুব তালুকদার বলেন, কাগজ কোথায়? তিনি বলেন, পরিকল্পনা কমিশনের যে প্রকল্প গেছে সে বিষয়ে যদি অনুমোদন দেয়া হয় তাহলে কমিশন সভার কার্যবিবরণীতে থাকবে। কোন সভার কোন কার্যবিবরণীতে এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে, তা আমি দেখিনি। এ সময় তিনি সিইসির বক্তব্যের বিপরীতে কথা বলতে রাজি হননি।

তিনি বলেন, আমি নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছি, তা কারও বিরুদ্ধে নয়। আমি দ্বিমত বা ভিন্নমত পোষণ করতে পারি। তাই বলে আমার সহকর্মী কারও সঙ্গে (নির্বাচন কমিশনাররা) আমার মতবিরোধ নেই।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, বৈঠকের কার্যপত্রে আরপিও সংশোধনের বিষয় ছিল। আমি মোটেই চাই না আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হোক। এখন উনারা বসে বসে আরপিও সংশোধন করতে থাকবেন, আর আমি মূর্তি হয়ে বসে থাকব, তা আমার কাছে যথাযথ মনে হয়নি। আমার কাছে মনে হয়েছে, উনারা উনাদের কাজ করুক, আমি আমার কাজ করি।

আপনার আপত্তির পরও আরপিও সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন সংসদ নির্বাচনে এটি ব্যবহার করা হলে আপনার ভূমিকা কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি একজন গণতন্ত্রমনা মানুষ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হলে তখন সিদ্ধান্ত নেব, এখন বলতে পারি না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জার্মানির ফেডারেল বলেছে ইভিএম অসাংবিধানিক। আমি আইনবিশারদ নই। আমি জানি না, ইভিএম ব্যবহারের জন্য সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হবে কি না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয়েছে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএম চায়নি।

জনগণের আস্থার ব্যাপার আছে। জনগণের আস্থার পাশাপাশি আমার মতপ্রকাশ করতে পারব না, অন্যের মতকে সাপোর্ট করে চলতে হবে, এ ধরনের নীতিতে বিশ্বাস করি না।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version