এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : সমকামিতা, সমপ্রেমে যৌনতা আর অপরাধ নয়। সমকামীরা এখন থেকে নিজেদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক করতে পারবেন। ইচ্ছা করে জীবনসঙ্গী হিসেবে বিয়েও করতে পারবেন। বৃহস্পতিবার এমনই ঐতিহাসিক রায় দিলেন ভারতীয় সুপ্রিমকোর্ট। সেই সঙ্গে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭৭ ধারাকে অযৌক্তিক ও স্বৈরাচারী বলে মতপ্রকাশ করল দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে প্রশংসা করেছে জাতিসংঘও।

ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন পুরনো ধ্যান-ধারণা বদলে ফেলার জন্যও দেশবাসীর কাছে আবেদন জানায়। ৫৪৭ পৃষ্ঠার এ রায়ে বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন, ‘কেউ তার ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যকে এড়িয়ে যেতে পারে না। বর্তমান সমাজ ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের প্রশ্নে অনেক বেশি অনুকূল।’ এই রায় সমাজের ‘স্বাভাবিক’ ও ‘অস্বাভাবিক’ তত্ত্বের ভিতকে নড়িয়ে দিয়েছে। রায় ঘোষণার পর দিল্লির পাশাপাশি কলকাতা, মুম্বাই, বেঙ্গালুরুতেও প্রকাশ্য রাস্তায় সমকামীরা উল্লাস মিছিল করেছে।

রায় ঘোষণা হতেই আদালতের বাইরে অকাল দীপাবলি শুরু করে দেয় সমকামী, রূপান্তরকামী ও দেশের বিভিন্ন এলজিবিটি গোষ্ঠীর সদস্যরা। ২০০৯ সালে সমকামিতাকে আইনি বৈধতা দেয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন দিল্লি হাইকোর্ট। এরপর ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় আইআইটি পড়–য়াদের একাংশ।

সেই মামলারই নিষ্পত্তি হল। সুপ্রিমকোর্টের পাঁচ বিচারপতি এদিন আলাদা আলাদা করে নিজেদের বক্তব্য পেশ করেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সমাজের সবার মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার রয়েছে। সমান অধিকার রয়েছে এলজিবিটি সম্প্রদায়েরও। সম্মতিক্রমে সমপ্রেম অপরাধ নয়।’ সমকামীদের পক্ষে আইনজীবী মেনকা গুরুস্বামী বলেন, ‘এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দীর্ঘদিনের লড়াইয়ে অবশেষে জয় মিলল। এলজিবিটিদের সুরক্ষার জন্য এই রায় জরুরি ছিল।’

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version