এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ গণতন্ত্র ও আইনের শাসন চরম হুমকির মুখে। কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা জনগনের অধিকারকে করছে ভূলন্ঠিত। পর্যায়ক্রমে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে দেশটি! সম্প্রতি বৃটিশ পার্লামেন্ট হাউস অব কমন্সে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সেমিনার এমন শংকা ও উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন বৃটেনের আইনপ্রণেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

বৃটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটি এলায়েন্স’র আয়োজনে সংগঠনের সভাপতি বারিস্টার আফজাল জামি সৈয়দ আলীর সভাপতিত্বে চীফ এডভাইজার মুজাক্কির আলীর পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সেক্রেটারি ফয়জুন নূর।

অনুষ্ঠানের হোস্ট ছিলেন বৃটেনের সরকার দলীয় হুইপ এবং লর্ড চেম্বারলাইন অ্যান্ড্রু স্টিফেনসন এমপি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লর্ড কোরবান হোসাইন, কনসারভেটিভ ফ্রেন্ডস অফ বাংলাদেশের ভাইস চেয়ার বব ব্লাকমান এমপি, পল স্কালি এমপি, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক সাউথ এশিয়া ডিরেক্টর আব্বাস ফাইজ, বাংলাদেশের রাজনীতিক শ্যামা ওবায়েদ, ভয়েস ফর জাস্টিসের ড. হাসনাত হোসাইন এমবিই, ইমাম আজমল মাসরুর, মাহিদুর রহমান, এম এ মালেক, শিক্ষাবিদ সৈয়দ মামনুন মোর্শেদ, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিদ্দিক, আবরার ইলিয়াস প্রমুখ।

লর্ড কোরবান বলেন, গোয়েন্দা দিয়ে রাজনীতি হয় না। নিজ নাগরিক অপহরণ করে সরকার নিজেকে গণতান্ত্রিক বলতে পারেন না।

অ্যান্ড্রু স্টিফেনসন এমপি বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে বলেন, যে পদ্ধতিতে আপনি নিজে নির্বাচত হয়ে আসলেন আর এসেই সেই পদ্ধতি বদলে ফেলবেন! সেটাকে শ্রদ্ধা করবেন না। এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

পল স্কালি এমপি বলেন, বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ তিনি নিজে দেখে এসেছেন। কিন্তু বিএনপিকে অর্থপূর্ণ ক্ষমতার বাইরে থেকে রাষ্ট্রীয় নীতি কতটা প্রভাবিত করতে পারবে তা ভাবার পরামর্শও দেন তিনি।

বব ব্লাকমান এমপি বলেন, যদিও আমি দেখেছি বাংলাদেশের পার্লিয়ামেন্টে এদেশের মত করে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব করা হয়, কিন্তু যখন সবগুলো প্রশ্নই নিজদলীয় লোকরা করে তখন জবাবদিহিতা কায়েম হয় না। জনইচ্ছার কোনো প্রতিফলন সরকারে নেই।

ড. হাসনাত বলেন, সাম্য ও ন্যায় বিচারের যে রাষ্ট্র আমরা চেয়েছিলাম তার থেকে বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে দূরে।

আব্বাস ফাইজ বলেন, রাজনীতি নিরপেক্ষ থেকেও একথা নিঃসংশয়ে বলা যায় বিচার বিভাগ স্বাধীন নয। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে রায় দেওয়া হয়েছে তা বিপদজনক ও ন্যায়ভ্রষ্ট।

অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী বলেন, রাষ্ট্র তার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাগুলো বর্তমান সরকারের অধীনে ক্রমান্বয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে। যে কারণে, অন্তরাষ্ট্রীয় ভাবে দেশের সমস্যাগুলো সমাধান হচ্ছে না।

শামা ওবায়েদ তার দীর্ঘ বক্তব্যে তুলে ধরেন কিভাবে গণতান্ত্রিক সরকার পরিচালনার জরুরি সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য এক উদ্বেগের কারণ হবে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা এর জনগণ, তাদের কথা শুনুন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের বিভিন্ন উপাত্ত তিনি উপস্থাপন করেন।

আজমল মাসরুর বলেন, সরকার দেশের অভ্যন্তরে জননিরাপত্তা বিধানে সম্পূর্ণ ব্যর্থ এবং নিজদলীয় ডাকাতদের ব্যাপারে চোখবন্ধ করে বসে আছে। এটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version