এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : কয়েকদিন ধরে সিরিয়ার ইদলিবে ছিল যুদ্ধের ঢাকঢাক রব। অবশেষে প্রদেশটিতে রাশিয়ার যুদ্ধবিমানগুলো নতুন হামলা শুরু করেছে। ইদলিবের দক্ষিণ-পশ্চিমে বিদ্রোহীদের অবস্থান টার্গেট করে এ হামলা চালানো হয়েছে। শুক্রবার তেহরানে ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠকে সামরিক অভিযান বন্ধে ঐকমত্য না আসার পরপরই এ অভিযানের খবর এলো। রাশিয়ার বিমান হামলায় ইদলিবের ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস। শনিবারও তিন ঘন্টা ধরে বিদ্রোহীদের ৬০টি স্থাপণায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ৪ সদস্য নিহত হয়েছেন।

বিবিসি জানায়, সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের একমাত্র বড় ঘাঁটি ইদলিবে অভিযান চালানোর জন্য রাশিয়া ও ইরান সমর্থিত সরকারি বাহিনী আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল। তুরস্কসহ আরও কয়েকটি দেশ সামরিক হামলার অভিযানের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিল। তারা জানিয়েছিল, ইদলিবে মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে। ইদলিবে হামলা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা আগে থেকেই শঙ্কিত ছিলেন। শুক্রবার জুমার নামাজের পর কয়েক লাখ মানুষ রাস্তায় বিক্ষোভ করেন এবং আন্তর্জাতিক সুরক্ষার দাবি জানান।

অবজারভেটরি জানায়, রুশ যুদ্ধবিমান জিহাদি জোটের মিত্র হায়াত তাহরির আলশাম ও আহরার আলশাম গোষ্ঠীর অবস্থান লক্ষ্য করে শুক্রবার হামলা চালায়। অবজারভেটরি প্রধান রামি আবদেল রহমান বলেন, এ হামলার টার্গেট ছিল বিদ্রোহীদের দুর্গ ধ্বংস করা। রুশ বিমান আহরার আলশামের একটি ঘাঁটিকে ধ্বংস করতে পেরেছে। এছাড়া গোষ্ঠীটির ৪ সদস্য নিহত হয়েছে। এক মাস ধরে রাশিয়া ইদলিবে হামলা অব্যাহত রাখবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীটি।

হায়াত তাহরির আলশামকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। ইদলিবে সংগঠনটির ১০ হাজার যোদ্ধা রয়েছে। এই সংগঠনকে প্রতিবেশী তুরস্ক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে এ সপ্তাহে রাশিয়ার বোমারু বিমান পশ্চিম ইদলিবে বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে ৩০টি হামলা চালায়। শুক্রবার তেহরানে ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠকে রাশিয়া, তুরস্ক ও ইরান সিরিয়ার ইদলিবে অস্ত্রবিরতি কার্যকর করার বিষয়ে একমত হতে পারেনি। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগানের অস্ত্রবিরতি প্রস্তাব নাকচ করে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইদলিব যুদ্ধে তুরস্ক দর্শক হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এরদোগান। অস্ত্রবিরতি প্রস্তাব নাকচের পর এ হুমকি দেন তিনি। এরদোগান বলেন, ‘সিরিয়ার বেসামরিকদের জীবননাশ ও তাদের ক্ষয়ক্ষতি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে না তুরস্ক। দেশটির হাজার হাজার নিষ্পাপ নাগরিকের মৃত্যুতে বিশ্ব চুপ থাকলেও তুরস্ক নীরব ভূমিকা পালন করবে না।’

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version