এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : প্রায় ১২ লাখ সদস্যের ভারতীয় সেনাবাহিনী আকারে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম। এবার এই বাহিনীকে ছেঁটে ছোট ও প্রযুক্তিতে আরও দক্ষ করার পরিকল্পনা করছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। আগামী পাঁচ বছরে কয়েক ধাপে প্রায় দেড় লাখ সেনাসদস্য ছাঁটাই করা হবে বলে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের এক পরিকল্পনায় জানা গেছে। ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় থাকবে পদাতিক সৈন্য থেকে শুরু করে ব্রিগেডিয়ার ও মেজর জেনারেলদের নামও। সেনাবাহিনীর হেডকোয়ার্টার থেকেই সেনা কর্তন অভিযান শুরু করতে চান রাওয়াত। মূলত অদক্ষ সেনাদের সরিয়ে সেনাবাহিনীকে ঢেলে সাজাতে এ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তিনি। সেনাবাহিনীকে একুশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ের যোদ্ধাবাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার চিন্তা করছেন বিপিন রাওয়াত। খবর হিন্দুস্থান টাইমসের।
ভারতে স্বাধীনতার পর থেকেই উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে সেনাবাহিনীর আকার। পাকিস্তান-চীনের হুমকি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নতাবাদী সমস্যার কথা বিবেচনায় সেনাবাহিনীর আকার কমানোর কথা কখনও ভাবেনি কোনো সরকার। বরং বছর বছর বাড়ানো হয়েছে প্রতিরক্ষা বাজেট। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সেনাপ্রধান হওয়ার পর থেকে সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ, চৌকস ও প্রযুক্তিকৌশলী করে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন রাওয়াত। সহায়তা নেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের। মন্ত্রণালয়ের দাবি, প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কর্মী রয়েছে সেনাবাহিনীতে। আবার একই কাজ করে এরকম পৃথক পৃথক দফতরও রয়েছে।
সেনাবাহিনীতে বাড়তি কর্মী সংখ্যা জানতে গত বছর লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেএস সান্ধুর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের এক প্যানেল তৈরি করেন রাওয়াত। সামরিক বাহিনীতে অদক্ষ ও অতিরিক্ত সেনাসদস্যের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে কমিটি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট জমা দেয়ার আগে চলতি মাসের মধ্যে রাওয়াতের সঙ্গে এ তালিকা নিয়ে আলোচনায় বসবেন প্যানেল সদস্যরা। কমিটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে নভেম্বর মাসে।
সেনা ছাঁটাই প্রক্রিয়া আগামী মাস থেকেই শুরু হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আগামী দু’বছরের মধ্যে ৫০ হাজার জওয়ানকে ছাঁটাই করা হবে। তারপর ২০২২ ও ২০২৩ সালের মধ্যে আরও প্রায় এক লাখ কর্মী ছাঁটাই হবে। ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবারের মতো সেনা অপসারণ করা হচ্ছে। কারগিল যুদ্ধের আগে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল ভিপি মালিক ৫০ হাজার সেনা ছাঁটাই করার চিন্তা করেন। কয়েকজন অদক্ষ পদাতিক সেনাকে তিনি বরখাস্ত করতে সক্ষম হন। এরপর সেনাসদস্যদের অদক্ষতার দিকে আর নজর দেয়া হয়নি।
বিপিনের পরিকল্পনায় সেনাসদস্যদের পদোন্নতির ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। পদাতিক সেনাদের কমান্ড ব্যাটালিয়ন হতে বয়স হতে হবে ৩৬-৩৭। একজন অফিসার ৪৫ বছর বয়সে ব্রিগেডিয়ার, ৫০ বছরে মেজর জেনারেল ও ৫৫ বছরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হবেন। সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত দফতর একীভূত করে দেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে রাওয়াতের।