এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি তার শরীরজুড়ে চাক বেঁধে আছে। এমনকি তার চোখ-মুখও ঢেকে ফেলেছে। হাজার হাজার মৌমাছি এসে তার শরীরে বসছে, উড়ে যাচ্ছে। হাত-পায়ে হুল ফুটাচ্ছে। এভাবে ৮০ মিনিট কাটিয়েছেন তিনি।
এমন একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে পুরোদস্তুর সেলিব্রেটি বনে গেছেন সৌদি মৌচাষী জোহায়ের ফাতানি।
সৌদি মৌচাষী কমিটির এই সদস্যের শরীর চাদরের মতো ঢেকে রেখেছিল প্রায় ৪৯ কেজি ওজনের মৌমাছি। এ সময় মৌমাছি তার শরীরে হুল ফুটিয়েছে। এমনকি তার নিঃশ্বাসও বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।
বহু লোকের কাছে এ পরিস্থিতি দুঃস্বপ্নের মতো মনে হতে পারে। কিন্তু জোহায়ের ফাতানি সবকিছু সুস্থভাবেই সামলেছেন।
তিনি বলেন, মৌমাছিগুলো আমার পায়ে হুল ফুটিয়েছে। শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। এ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা আমার জন্য কঠিনই ছিল। কাজেই ৮০ মিনিটের বেশি মৌমাছির এই চাদর সহ্য করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
ফাতানি বলেন, মৌমাছিগুলো আমার মুখ ঢেকে ফেলে। এতে আমি কথা বলতে পারছিলাম না। শ্বাস-প্রশ্বাসেও কষ্ট হচ্ছিল।
এসব সত্ত্বেও মৌমাছি নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসেন তিনি। ফাতানি বলেন, মৌমাছি আতঙ্কের কারণ হলেও মানুষের জন্য উপকারী।
বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেছেন ফাতানি। তিনি জানালেন, মৌমাছি হুল ফুটায়, আবার মানুষের জন্য তারা অমূল্য মধু সংগ্রহ করে আনে। বহু রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে সেই মধু।
মৌমাছি নিয়ে তিনি যখন প্রথম কাজ করেন, তখন তার মাত্র তিনটি মৌচাক ছিল। এখন সেগুলো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ত্রিশটিতে। এসব মৌচাক থেকে তিনি আটশ কেজির বেশি মধু আহরণ করতে পারেন।
ভালো ফুলের জন্য তিনি দেশজুড়ে ঘুরে বেড়ান। দাবদাহ ও ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে মৌমাছিকে বাঁচাতে তিনি ব্যবস্থা নেন। ফাতানির ভাষায়, এ বিষয়ে আমি বৈজ্ঞানিক ও বাস্তবিক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। মৌচাষ নিয়ে কৃষি প্রকৌশলীরাও আমাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।