এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ফিলিপাইনে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী টাইফুন মাংখুট। এতে প্রবল ঝড়ে বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ঝড়টিকে সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি তথা পাঁচ মাত্রার বলে জানান আবহাওয়াবিদরা। চলতি বছরের ১৫তম এবং সবচেয়ে শক্তিশালী এই ঝড়কে ‘সুপার টাইফুন’ বলা হচ্ছে। প্রতি বছর গড়ে ২০টি টাইফুন দেশটিতে আঘাত হেনে থাকে।
বিবিসি শনিবার জানায়, শনিবার ভোর রাতে দেশের উত্তর উপকূলীয় দ্বীপ লুজনে ২০০ কিমি. গতিবেগে আছড়ে পড়ে ঝড়টি। এ সময় দ্বীপজুড়ে ভারি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে প্রচণ্ড ঝড় বয়ে যায়।
সৃষ্টি হয় বন্যা, ঘটে ভূমিধসের মতো ঘটনা। দুপুর ২টা নাগাদ উত্তর-পূর্বের বাগাও শহরে আঘাত হানে। উত্তরে মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জ ও গুয়াম অঞ্চলও টাইফুনের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে। খবরে বলা হয়, দ্বীপের বহু গাছপালা উপড়ে গেছে। উড়ে গেছে বহু ঘরবাড়ির ছাদ। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে অনেক এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, উপকূলীয় তুগুয়েগারো শহরের প্রায় সব ভবনেরই কিছু না কিছু ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থাও ধসে পড়েছে।
লুজন দ্বীপ তছনছের পর কিছুটা মন্দ গতি নিয়ে ঝড়টি ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে চীন ও ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি রোববার বিকালের মধ্যে হংকং অতিক্রম করবে বলে মনে করা হচ্ছে। অগ্রসরমান মাংখুটের পথে ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের বাস। বাতাসের এ বেগ কোথাও কোথাও আরও বাড়তে পারে বলেও আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছেন।
হংকংয়ের কর্তৃপক্ষও বাসিন্দাদের ঘরের ভেতর থাকার পরামর্শ দিয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যেই ঝড়টি দুর্বল হয়ে নিুচাপে পরিণত হবে বলে ধারণা আবহাওয়াবিদদের।
২০১৩ সালে ফিলিপাইনে আঘাত হানা সবচেয়ে প্রাণঘাতী সুপার টাইফুন হাইয়ানের আঘাত হানার সময় চার নম্বর সতর্কতা জারি করা হয়।
এতে ৭ হাজারেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির ঊর্ধ্বতন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ক্রিস পেরেজ সতর্ক করে বলেন, লুজনের উত্তরাঞ্চলের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ঝড়ের কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা তিন থেকে ছয় মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিসের তথ্য মতে, প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি লোককে উদ্ধার করা নিরাপদ স্থানে নেয়া হয়েছে। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এখনই বৈদেশিক সাহায্য আহ্বানের প্রয়োজন নেই। তবে সংকটের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।