এশিয়ান বাংলা, লন্ডন : জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডনে অবস্থানের প্রতিবাদে বরাবরের মতো এবারো বিক্ষোভ করছে যুক্তরাজ্য বিএনপি। শনিবার দ্বিতীয় দিনে দুপুর ১২.৩০ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সেন্ট্রাল লন্ডনের হোটেল ক্লারিজের সামনে বিক্ষোভ করে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীরা। মিছিলে নেতৃত্ব দেন যুক্তরাজ্য বিএনপি সভাপতি এম এ মালিক ও সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ। ‘যেখানে হাসিনা সেখানে প্রতিরোধ কর্মসূচীর অংশ হিসাবে এ বিক্ষোভ সমাবেশ ও অব্যাহত রেখেছে তারা। গত শুক্রবার বিকালে লন্ডনের হিথরো বিমান বন্দরের টার্মিনাল ফোরে প্রথম দিন প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। রোববার পর্যন্ত যুক্তরাজ্য বিএনপির এ বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক নাজমুল হাসান জাহিদ। কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ যুক্তরাজ্য বিএনপি, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিএনপির নেতৃবৃন্দ, যুক্তরাজ্য বিএনপির জোনাল কমিটি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ যুক্তরাজ্য প্রবাসী কমিউনিটির শত শত নাগরিক এবং যুক্তরাজ্যে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীরা ‘ফিরে যাও শেখ হাসিনা, স্টেপ ডাউন শেখ হাসিনা’ ডিক্টেটর শেখ হাসিনা’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল। এসময় তাদের হাতে ছিল নানান স্লোগান সম্ভলিত প্লেকার্ড, গুম ও খুন হওয়া নেতাকর্মীদের ছবি, বাংলাদেশে নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ছবি এবং ফ্রি খালেদা জিয়া সম্ভলিত প্লেকার্ড । বিক্ষোভ সমাবেশ অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা জানান, শেখ হাসিনার সরকার অনির্বাচিত সরকার। তিনি জনগনের ভোটে নির্বাচিত নন । ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ তিনবারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই অবৈধ সরকার তাকে অন্যায় ভাবে বন্দি করে রেখেছে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহ দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উপর ষড়যন্ত্রমুলক রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা দায়েরর মাধ্যমে হয়রানি করছে। তাই ব্রিটেনের মত গণতান্ত্রিক দেশে ভোট ও ব্যাংক ডাকাত এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃত স্বৈরাচারের পদচারনায় কুলসিত হতে দেয়া যায় না । দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে স্লোগানে স্লোগানে হোটেলের আশে পাশের এলাকা প্রকম্পিত করে তুলে। এ সময় নো মোর হাসিনা, গো ব্যাক হাসিনা, স্টপ কিলিং, ফ্রি ফ্রি খালেদা জিয়া, সেভ বাংলাদেশ, রিস্টোর ডেমোক্রেসি ইত্যাদি শ্লোগান সম্বলিত ব্যনার, প্ল্যাকার্ড ও কালো পতাকা পদর্শন করেন। যেখানেই হাসিনা সেখানেই প্রতিরোধ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য বিএনপির সরকার বিরোধী আন্দলনে নতুন মাত্রা সংযোজন করা হয়েছে। রোববার পর্যন্ত যুক্তরাজ্য বিএনপির ঘোষিত ‘যেখানে হাসিনা সেখানে প্রতিরোধ’ কর্মসূচীর অংশ হিসাবে টানা ৩ দিনের বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত থাকবে। বিক্ষোভ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদের খবর ফলাও করে প্রচার করছে। প্রথম দিনের িবক্ষোভে কিছুটা ব্যাকফুটে ছিল যুক্তরাজ্য বিএনপি। হিথরো বিমানবন্দরে বিক্ষোভ করলেও দলটির একটি অংশ েনতাকর্মী শেখ হাসিনার হোটেলের সামনে জড়ো হন। সেখানে আওয়ামী লীগের বড় শোডাউন থাকায় বিএনপির ২৫/৩০ জনের জমায়েতে কিছুটা ভীতি লক্ষ্য করা যায়। আওয়ামী লীগের হামলার ভয়ে কিছু নেতাকর্মী দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। বিএনপি কর্মী আবদুর রহমি এ প্রতিবেদককে জানান, বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মী হিথরোতে জমায়েত হয়েছেন। শেখ হাসিনার হোটেলের ঠিকানা পেতে দেরী হওয়ায় আমরা সিদ্ধান্তহীনতায় ছিলাম। আমি আসার পর আওয়ামী লীগের নেতা আনোয়ার চৌধুরী আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন। আমার পরিচিত এক সাংবাদিকের সাথেও আওয়ামী লীগ নেতা ও লেবারপাটিতে সক্রিয় ব্যারিস্টার হাফিজুর রহমান আমার সামনে দুর্ব্যবহার করেন। পরিস্থিতি বিপদজনক হওয়ায় আমি চলে যাচ্ছি। তবে হোটেলের সামনেই অবস্থান নিয়ে যুক্তরাজ্য বিএনপির যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নাসিম আহমেদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক সভাপতি নিয়াজ আহমেদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির রাজা মিয়া, সাবেক ছাত্রনেতা আমিনুল ইসলাম, মির্জা সুজন মিয়া, আরিফ মইনুল হোসেন, বুরহান আহমেদ, ইস্ট লন্ডন বিএনপির মো. হাসনাইনের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন নেতাকর্মী বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন। এদিকে শনিবারের বিক্ষোভে বিএনপি নেতাকর্মীদের জমায়েত কিছুটা বড় হলেও তাদের মধ্যে ভীতি লক্ষ্য করা গেছে। সাংবাদিকরা ছবি তুলতে এলেই অনেককে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতে দেখা গেছে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version