এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ অধিবেশন। গুরুগম্ভীর পরিবেশ, পিন-পতন নীরবতা। বিশ্বের ১৯৩টি দেশের রথী-মহারথীরা মিলিত হয়েছেন। গুরুগম্ভীর পরিবেশে বিশ্বের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। এবার কথা বলার পালা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। চিরাচরিত খামখেয়ালি-দাম্ভিক স্বভাবে বক্তব্য শুরু করলেন তিনি। আর তখনই ঘটল সেই অপ্রত্যাশিত ঘটনা। নেতাদের চাপা হাসির গড়গড়াতে ভেঙে গেল অধিবেশনের ছদ্ম-গম্ভীর দেয়াল। সবার মুখে তখন অট্টহাসির আমেজ। এমনটা সচরাচর ঘটে না। কিন্তু তাই ঘটল। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তার প্রশাসন এই করেছে সেই করেছে বলে গুণগান করে আসছেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ অধিবেশনে দাঁড়িয়েও তিনি বলেন, গত দুই বছরে তার প্রশাসন মার্কিন অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও পররাষ্ট্রনীতিতে এত উন্নতি করেছে, মার্কিন ইতিহাসে আর কোনো সরকার তা করতে পারেনি। তার এ মন্তব্যেই বিশ্বনেতাদের মধ্যে হাসির রোল পড়ে যায়।

শ্রোতারা যা অনুমান করছিলেন তাই বলতে শুরু করেন ট্রাম্প। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য যেমন হওয়ার কথা তার সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখল জাতিসংঘ। রাষ্ট্রনায়কের বদলে ট্রাম্পকে তাই বিশ্বমঞ্চের নতুন জোকার হিসেবেই দেখছেন অনেকেই। জাতিসংঘের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি যে কথাই বলেছেন তাতেই হাসিতে ফেটে পড়েছেন সবাই।

অপ্রত্যাশিত এই হাসিতে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলেও ট্রাম্প ঠিকই প্রতিক্রিয়া দেখান। হেসে বলেন, ‘এই ধরনের প্রতিক্রিয়া আশা করিনি। তবে এটা ব্যাপার না।’ ট্রাম্প আরও বলেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এখন যুক্তরাষ্ট্র ‘শক্তিশালী, নিরাপদ ও সম্পদশালী’। তার প্রশাসন ‘যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে’। ট্রাম্পের এ কথাতেও আবারও তুমুল হাসি। নিজের বক্তব্যের একপর্যায়ে ট্রাম্প বলেন, জার্মানি ‘যদি রাস্তা না বদলায়’ তাহলে তারা ‘পুরোপুরি রাশিয়ান জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল’ হয়ে পড়বে। এ সময় ক্যামেরা জার্মান প্রতিনিধিদের দিকে ঘোরানো হয়। সেখানে দেখা যায়, ট্রাম্পের এমন হুশিয়ারিতে তারাও হাসছেন।

২০১৪ সালের আগস্টে এক টুইটে ট্রাম্প লিখেছিলেন, আমাদের এমন একজন প্রেসিডেন্ট দরকার যিনি বিশ্বের কাছে হাসির পাত্র হবেন না। আমাদের একজন সত্যিকারের নেতা দরকার, যিনি কৌশল ও জয়ে একজন জিনিয়াস হবেন। চার বছর আগে ট্রাম্পের করা সেই টুইট এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। সেদিনের সেই বিজ্ঞ ট্রাম্প বিশ্বদরবারে আজ নিজেই হাসির পাত্র।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version