এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া দ্রুত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। ঐক্য প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে জোটের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকে জোট নেতারা বলেন, বর্তমান সরকারকে হটাতে বৃহত্তর ঐক্যের বিকল্প নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
‘জামায়াতকে না ছাড়লে বৃহত্তর ঐক্য হবে না’- কয়েকটি দলের এমন অবস্থান প্রসঙ্গে জোটের এক নেতা বৈঠকে জোট ও জামায়াতের বক্তব্য জানতে চান। এ সময় জামায়াতের প্রতিনিধি আবদুল হালিম বলেন- আমরা চাই, যে কোনো মূল্যে বৃহত্তর ঐক্য হোক। আমাদের দলের অবস্থান হল- এ সরকারকে দ্রুত হটাতে হবে। কারণ তারা জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়েছে। তাদের হটাতে আমাদের দল যে কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজি আছে। এক্ষেত্রে আমাদের কারণে ঐক্য প্রক্রিয়া বাধা হয়ে দাঁড়ালে এবং প্রয়োজন হলে এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমাদের রাখবেন না। প্রত্যক্ষভাবে এ ঐক্যের সঙ্গে আমরা থাকব না। এরপরও ঐক্য হোক।
বৈঠকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার বিষয়ে জোট নেতাদের অবহিত করা হয়। এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এককভাবে বিএনপি জনসভা করতে চায়। বিএনপির জনসমর্থন নেই বলে সরকার যে দাবি করে আসছে, সেই চ্যালেঞ্জ নিতেই এককভাবে বিএনপি জনসভা করার চিন্তা করছে। জনসভায় ব্যাপক লোক-সমাগমের মাধ্যমে প্রমাণ করা হবে বিএনপির জনসমর্থন কমেনি বরং বেড়েছে।
এছাড়া বৈঠকে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য, কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তি, আগামী দিনের আন্দোলন ও নির্বাচনসহ সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এসব ইস্যুতে জোট নেতাদের মতামত নেয়া হয়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, ইসি পুনর্গঠন, সংসদ ভেঙে দেয়া, বিএনপি চেয়ারপারসনসহ রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে জাতীয় ঐক্যের পক্ষে তারা মত দেন। আগামীতে সরকারবিরোধী কি ধরনের কর্মসূচি দেয়া যায় সে ব্যাপারে শরিকদের মতামত জানাতে আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জোটের সমন্বয়কারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক আবদুল হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের এমএ রকীব, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, লেবার পার্টির এক অংশের মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার তাসমিয়া প্রধান, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ডিএল’র সাইফুদ্দিন মনি, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম চৌধুরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর দুই অংশের মাওলানা নুর হোসেন কাশেমী ও মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম।