এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : পরস্ত্রী কামনা করেও অপরাধবোধে ভোগার কোনো কারণ নেই পুরুষের। বরং এমন সম্পর্কের ক্ষেত্রে শাস্তি বিধান করাটাই অসাংবিধানিক। নারী-পুরুষের সমান অধিকারবিরোধী।

ব্যভিচার কোনো ‘অপরাধ’ নয় জানিয়ে এ সংক্রান্ত প্রায় দেড়শ’ বছরের পুরনো একটি আইন বাতিল করে দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে আইনটি বাতিলের রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চে আরও ছিলেন বিচারপতি এএম খানবিলকর, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, আরএফ নারিমান ও ইন্দু মালহোত্রা।

সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিরা বলেছেন, ‘বিবাহিত নারী যদি পরপুরুষের অঙ্কশায়িনী হন তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়।’ এতদিন অবশ্য এটি অপরাধ ছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় সেই অপরাধের সাজা ৫ বছরের জেল বা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ড।

সুপ্রিমকোর্ট সেই আইন খারিজ করে দিলেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা হল অ্যাডালট্রি ল বা পরকীয়া আইন। ১৮৬০ সালে তৈরি ওই আইনে বলা আছে, কোনো বিবাহিত নারীর সঙ্গে যদি তার স্বামীর অমতে অন্য কেউ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়, আর সেই সম্পর্ক যদি ধর্ষণ না হয়ে থাকে, তবে তা ফৌজদারি অপরাধ।

পরকীয়া আইনে ওই বিবাহিত নারীকে পরিস্থিতির শিকার হিসেবে গণ্য করা হবে। দোষী হবেন সেই ব্যক্তি যিনি ওই নারীর স্বামীর অমতে তার সঙ্গে যৌন সংসর্গ করেছেন। অভিযোগ দায়ের বা মামলা করার সুযোগও থাকবে ওই নারীর স্বামীর হাতে, তাকে এ ঘটনায় ‘প্রতারিত’ বলে গণ্য করা হবে।

১৫৮ বছরের পুরনো এ আইনে ছত্রে ছত্রে পুরুষতন্ত্রের ছোঁয়া। এ আইনে নারী কোনো ব্যক্তি নয়। তার কোনো নিজস্বতা নেই। নারী অধস্তন, স্বামী তার মালিক। বলা যেতে পারে, নারী স্রেফ তার বিবাহিত পুরুষটির মর্জিতে চলা সম্পত্তি। যা বেহাত হলে মালিক জবাব চাইবে যে নিয়েছে তার কাছে। আর স্বেচ্ছায় দিলে কোনো সমস্যা নেই।

জোসেফ শিনে নামের এক ব্যক্তি এ আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে আবেদন করেন।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version