এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে আওয়ামী লীগ অখুশি নয় আবার পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিলম্বিত হলেও এ রায়ে আমরা পুরোপুরি অখুশি নই, আবার পুরোপুরি সন্তুষ্টও নই। কারণ, বর্বরোচিত ও নৃশংস গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট হওয়া উচিত ছিল। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এমআরটি লাইন-১ এর কন্ট্রাক সাইন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ বছর পর এই নৃশংস গ্রেনেড হামলার বিচার হলো। যার প্রাইম টার্গেট ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাকে টার্গেট করেই এই হামলা চালানো হয়েছিল। এই হামলার মাস্টার মাইন্ড ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। হাওয়া ভবন থেকে এই হামলার পরিকল্পনা হয়েছিল।

তিনি বলেন, গত ১৪ বছর ধরে মানুষের আলোচনা ও সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই গ্রেনেড হামলা। এই হামলায় মোট ২৪ জনের প্রাণ ঝরে গেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের মামলার কোনো গুরুত্ব ছিল না। তারা আলামত নষ্ট করেছিল। এফবিআই দিয়ে মামলার তদন্ত করলেও স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে দেশ ঢুকতে দেয়া হয়নি। এই মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছিল। তখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু ছিল হাওয়া ভবন। তিনি বলেন, এই মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নান অপারেশনের আগে তারেক রহমানের অনুমতি নিয়েছিল বলে আদালতে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে।

ওদিকে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানকে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে তার ফাঁসির দাবি জানান ওবায়দুল কাদের। দলের পক্ষে তিনি বলেন, আমরা তারেক রহমানের ফাঁসি দাবি করছি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফাঁসি দাবি করছি। তিনি আরও বলেন, ‘এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে সরকারের কাছে আবেদন করব। ওবায়দুল কাদের বলেন, ২১শে আগস্ট মামলার রায় হয়েছে আজকে। আমরা ন্যায়বিচার চেয়েছি। আমরা জাস্টিস চেয়েছি, আমরা বিচারকে প্রভাবিত করিনি। আজকে আদালত বিলম্ব হলেও রায়টি দিয়েছেন। আমরা মনে করি এটা একটা ভালো রায়, এই রায়ে আমরা আদালতকে ধন্যবাদ জানাই, অন্তত একটা বিচার তো হয়েছে।

কিন্তু আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। তিনি বলেন, ২১শে আগস্টের মাস্টারমাইন্ড, প্ল্যানার, বিকল্প পাওয়ার হাউস তারেক রহমান সর্বোচ্চ শাস্তি পেতে পারতেন। তিনি যা করেছেন, তার প্রাপ্য শাস্তিটুকু পেতে পারতেন। তিনি বলেন, যে বর্বর তাণ্ডব করেছেন ওই দিন, মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে তা এসেছে। বাস্তবে তো তা-ই। খালেদা জিয়া দায় এড়াতে পারেন না অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রী না থাকায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান জানতেন, আর তিনি (খালেদা জিয়া) জানতেন না, এটা নয়। তাই তিনিও এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। এই মামলার রায়ে আপিল করা হবে কি না, জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সরকারের কাছে আপিলের আবেদন জানাব। এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদৃক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, একেএম এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version