এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ঘরোয়া ক্রিকেট ক্যারিয়ারের বয়স হতে চলল ১৫ বছর। বিসিবি হাই পারফরম্যান্স দল, ‘এ’ দলে ঘোরাফেরাও হয়েছে বেশ ক’বার। কিন্তু জাতীয় দলের চৌকাঠ মাড়ানো হয়নি কখনও। অবশেষে ৩০ বছর বয়সে এসে খুলল দুয়ার। বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে ডাক পেলেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের প্রথমবার সুযোগ পাওয়ার দিনে দলে জায়গা ফিরে পেয়েছেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।
গুরুত্বপূর্ণ দুই ক্রিকেটারের আগেই ছিটকে যাওয়া, আরও অনেকের টুকটাক চোট মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে স্কোয়াডের সম্ভাব্য চেহারা নিয়ে জল্পনা ছিল অনেক। তবে শেষ পর্যন্ত খুব বেশি পরিবর্তনের পথ বেছে নেননি নির্বাচকরা। সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের না থাকা নিশ্চিতই ছিল। বাকি তিন সিনিয়র ক্রিকেটার আছেন দলে। মাশরাফি মুর্তজার আঙুল ও ঊরুতে চোট থাকলেও খেলবেন সিরিজের শুরু থেকেই। পাঁজরের চোট কাটানোর লড়াইয়ে থাকা মুশফিকুর রহিমকেও শুরু থেকে পাওয়া যাবে বলে আশা। এশিয়া কাপ থেকে ফিরে ব্যাটিং অনুশীলনও শুরু করেছেন মুশফিক। তামিম ও সাকিব ফিরেছিলেন এশিয়া কাপের মাঝপথেই। এই দু’জন ছাড়া এশিয়া কাপের স্কোয়াড থেকে জায়গা হারিয়েছেন মুমিনুল হক, মোসাদ্দেক হোসেন ও সৌম্য সরকার। এশিয়া কাপে তিনটি ম্যাচ খেলেছেন মোসাদ্দেক, দুটি করে সৌম্য ও মুমিনুল। পারফর্ম করতে পারেননি কেউই।
নতুন মুখ হলেও গত কিছু দিনের পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিলে ফজলে রাব্বির ডাক পাওয়াকে সেই অর্থে চমক বলা যায় না। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সাতশ’র বেশি রান করা চার ব্যাটসম্যানের একজন এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে ১৬ ম্যাচে দুই সেঞ্চুরি ও তিন ফিফটিতে ৭০৮ রান করেছিলেন ৪৭.২০ গড়ে। সেই পারফরম্যান্স তাকে জায়গা করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দলে। শ্রীলংকা ‘এ’ দলের বিপক্ষে আনঅফিসিয়াল ওয়ানডে সিরিজে একটি মাত্র ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে করেছিলেন ৫৯ রান। এরপর আয়ারল্যান্ড সফরে আনঅফিসিয়াল ওয়ানডে সিরিজে তিনটি ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে দুই ইনিংসে খেলেছিলেন ৪১ বলে ৫৩ ও ৬৩ বলে ৭৪ রানের ইনিংস।
এবার জাতীয় লিগের প্রথম রাউন্ডে বরিশালের হয়ে খেলেছেন ১৯৫ রানের ইনিংস। ছিলেন এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলেও।
তার পক্ষে গেছে অনেক পজিশনে ব্যাট করতে পারার সামর্থ্যও। ওপেনিং কিংবা তিন নম্বর, মিডলঅর্ডারে চার-পাঁচ-ছয়, সব পজিশনে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা আছে তার। পাশাপাশি বিবেচনায় ছিল তার বোলিংও। ঠিক অলরাউন্ডার ক্যাটাগরিতে রাখা না গেলেও তার বাঁ-হাতি স্পিন বরাবরই বেশ কার্যকর।
সাইফ উদ্দিন সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন গত জানুয়ারিতে ঢাকায় ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে। তিন ওয়ানডে খেলে ৩০ রান ও এক উইকেট নেয়ার পর জায়গা হারিয়েছিলেন। একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার পাওয়ার তাড়নায়ই মূলত তার দিকে আবার হাত বাড়ানো। এখনও অভিষেক না হওয়া অলরাউন্ডার আরিফুল হক আছেন দলে। তবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়া মূলত বোলিং প্রধান পেস অলরাউন্ডার। আরিফুলকে দল দেখছে ব্যাটিং প্রধান অলরাউন্ডার হিসেবে। সাইফ উদ্দিনের বোলিংই মূল শক্তি। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে আয়ারল্যান্ড সফরে চারটি আনঅফিসিয়াল ওয়ানডেতে বোলিং করে নিয়েছিলেন ছয় উইকেট, তিনটি টি ২০তে বোলিংয়ে নিয়েছিলেন নয় উইকেট।
এশিয়া কাপে তিনটি ম্যাচ খেলে সুবিধা করতে না পারলেও দলে টিকে গেছেন তরুণ ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। ২১ অক্টোবর মিরপুরের ম্যাচ দিয়ে শুরু তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। পরের দুই ম্যাচ ২৪ ও ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রামে।
বাংলাদেশ দল : মাশরাফি মুর্তজা (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মাহমুদউল্লাহ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, আবু হায়দার, ফজলে রাব্বি, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।