এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : ডা. জাফরুল্লাহবেসরকারি সময় টেলিভিশন চ্যানেলের এক টকশোতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। ডা. জাফরুল্লাহর সেই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সেনা সদর। এ নিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গণস্বাস্ত্য নগর হাসপাতালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তিনি। এখানে তার বক্তব্য হুবহু তুলে দেওয়া হয়।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, দেশে বিদ্যমান সামগ্রিক রাজনৈতিক অস্থিরতমার বিপরীতে কি করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলোদেশে শান্তি ও ন্যায়ভিত্তিক ব্যবস্থা স্থাপন করা যায় সে আকাঙ্ক্ষায় সব সচেতন নাগরিকের ন্যায় আমি স্বভাবত চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন। দেশে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের আইনের সংকীর্ণতার কারণে আমার বিকল কিডনি রোগের উত্তম চিকিৎসা সুলভে কিডনি প্রতিস্থাপন বাংলাদেশে সম্ভব নয় বিধায় জীবনরক্ষার জন্য আমাকে প্রতি সপ্তাহে তিনদিন প্রতিবাদ চার ঘণ্টা করে হোমাডায়ালিইসিস করতে হয়। ডায়ালাইসিস সমাপনের পর স্বাভাবিক কারণে শারিরীক দুর্বলতা বাড়ে এবং মানসিক স্থিতি কিছুটা কমে।
তিনি আরও বলেন, সময় টেলিভিশনের বিশেষ অনুরোধে শারিরীক দুর্বলতা নিয়েই আমি ৯ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে রাত ১০টায় তাদের একটি টক শোতে অংশ নেই। উত্তর টক শোকে অপর অতিথিরা ছিলেন সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য নুহ আলম লেলিন। আলোচনাকালে আমি দেশের বর্তমানে সেনাপ্রধান জেনারেল এম এ আজিজ সম্পর্কে অসাবধানতাবশত একটি ভুল তথ্য উল্লেখ করেছিলাম। জেনারেল আজিজ একজন দক্ষ আর্টিলারি সেনা কর্মকর্তা। তিনি চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ‘জিওসি’ ছিলেন না ‘কমান্ডডেন্ট’ও ছিলেন না। তিনি তার কর্মজীবনের এক সময় সময়ে চট্টগ্রাম সেনাছাউনিতে আর্টিলারি প্রশিক্ষক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কোর্ট মার্শাল হয়নি একবার কোর্ট অব এনকোয়ারি হয়েছিল। ভুল বক্তব্য ও শব্দ বিভ্রাটের জন্য আমি আন্তিরিক দুঃখিত ও মর্মাহত।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বা জেনারেল আজিজের সম্মানহানি করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না এবং এরূপ কোন অভিপ্রায়ও আমার নেই। আমাদের সেনাবাহিনীর গৌরবে আমি গর্বিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর কর্মখর্তাদের সাথে কালাতিপাত করেছি। তাদের সুখ-দুঃখের ভাগিদার হয়েছি এবং যুদ্ধ শেষে আমিউ প্রথম কুমিল্লা কম্বাইন্য মিলিটারি হাসপাতাল চালু করি। পরে আমি ও ডা. আজিজুর রহমান ঢাকা কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতাল চালু করি। জেনারেল আজিজের সম্মান হানি করার কোনও চিন্তা বা উদ্দেশ্য আমার ছিল না। আমি খোলা মনে আরও বলেছিলাম তার ছোট ভাই শীর্ষ সন্তাসী জোসেফের দায় দায়িত্ব জেনারেল আজিজের ওপর বর্তায় না। চরম দণ্ডপঅপ্ত হোসেফের দণ্ড মুক্ত করেছন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ খান।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, জেনারেল আজিজকে আমি অসাবধানতাবশত কোনও মনকষ্ট দিয়ে তাকলে সেজন্য আমি পুনরায় আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। উল্লেখ প্রয়োজন যে আমি ইতিমথ্যে বিগত দুই দিন কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে আমার বক্তব্যে ভুল শব্দচয়ন ও শব্দবিভ্রাটের বিষয় প্রকাশ করে সেনাপ্রধানের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি।
চূড়ান্তভাবে ভুল বোঝাবুঝির অবসানকল্পে এই সংবাদ সম্মেলন।