এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : মানুষের এ পৃথিবীতেই একসময় রণাঙ্গনে যুদ্ধ করবে রোবটসেনা। যুদ্ধের জন্য তৈরি করা হবে জিন প্রযুক্তি। ওষুধ প্রয়োগে বিশেষ শক্তিধর ‘ঔষধি মানব’সেনা। এখন যুদ্ধ করে রিমোট কন্ট্রোল ড্রোন তখন করবে রিমোট কন্ট্রোল মানুষ। যুদ্ধে প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রয়োগে কমতে থাকবে আবেগ, অনুভূতির গুরুত্ব। সেদিন বেশি দূরে নয়। একেবারেই হাতের নাগালে, নাকের ডগায়। আসছে ৩০ বছরের মধ্যেই বিশ্বের এ ভয়ংকর রূপ দেখবে মানুষ। আগামী দিনের মানবসমাজের যুদ্ধকৌশল নিয়ে এমন চরম হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন এক গবেষণা রিপোর্টে। ভবিষ্যতে ব্রিটেনকে কী ধরনের প্রতিরক্ষা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হতে পারে, সে সম্পর্কে আগাম ধারণা দিতেই সোমবার ‘দ্য ফিউচার স্টার্ট টুডে’ (এখনই ভবিষ্যতের শুরু) শিরোনামে রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে। খবর ফোর্সেস নেটওয়ার্কের।
ব্রিটেন ছাড়াও জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস এবং অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের বিশেষজ্ঞরা এ গবেষণা রিপোর্ট তৈরিতে অংশ নেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘যদিও আরও অনেকদিন হয়তো যুদ্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার মুখ্য ভূমিকা মানুষেরই থাকবে, কিন্তু রোবটের ক্রমবর্ধমান প্রয়োগ এবং আধা-সরকারি স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার কারণে যুদ্ধের মৌলিক চরিত্র বদলে যাবে। আবেগ, অনুভূতির গুরুত্ব কমতে থাকবে।’
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, দিন দিন প্রযুক্তির যে দ্রুত উন্নতি হচ্ছে, তাতে আগামী ৩০ বছরে মানুষের ক্ষমতা দ্রুত বাড়তে থাকবে। যুদ্ধক্ষেত্রে এসব প্রযুক্তি প্রয়োগ এবং সেইসঙ্গে মানুষ ও যন্ত্রের সমান্তরাল ব্যবহারে সামরিক ক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যাবে। রণাঙ্গনে মোতায়েনের জন্য জিন অদল-বদল করে, ওষুধ প্রয়োগে বিশেষ ধরনের ঔষধি মানবসেনা তৈরির সম্ভাবনা প্রবল। এসব সৈন্যের শারীরিক এবং মানসিক শক্তি ও বুদ্ধিমত্তা হবে সাধারণ মানুষের চেয়ে বহুগুণ শ্রেয়।
তবে একই সঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়েছে- রাষ্ট্রের ‘নীতি, নৈতিকতা এবং আইনি’ সীমানা স্পষ্ট করতে হবে। নিরাপত্তা বিষয়ক এ গবেষণা রিপোর্ট বলছে, যুদ্ধে প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতের রণাঙ্গন হবে ব্যতিক্রমী। শত্রুর সামরিক এবং অর্থনৈতিক স্থাপনা হয়তো আর মূল টার্গেট থাকবে না। ‘লড়াইয়ের নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হবে। যুদ্ধ হবে মহাকাশে, সাইবার জগতে, সাগরের নিচে।’ পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগের ঝুঁকি ভবিষ্যতে বহুগুণ বেড়ে যাবে। কারণ, প্রযুক্তির সহজলভ্যতার ফলে নতুন নতুন দেশ পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হবে।
রিপোর্টটি প্রকাশের পর ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যাভিন উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘এটা পরিষ্কার যে আমরা এখন এমন এক পৃথিবীতে বসবাস করছি যেটি দ্রুত বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে। বিশ্বে পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সংখ্যা বাড়বে, পারমাণবিক এবং অন্যান্য কৌশলগত অস্ত্র তৈরির জন্য বিনিয়োগ বাড়বে, সেইসঙ্গে বাড়বে পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগের আশঙ্কা।’