এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম বেঁধে দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। সৌদি যুবরাজকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, বিশ্ব পরিমণ্ডলে সৌদি আরবের অবস্থান ভূলুণ্ঠিত করতে না চাইলে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খাশোগি হত্যার তদন্ত শেষ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রিয়াদে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন মাইক পম্পেও। অ্যাক্সিওস বলছে, বৈঠকে যুবরাজ সালমানকে মাইক পম্পেও বলেছেন যে, ইস্তান্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ভয়ানকভাবে খাশোগি হত্যার ঘটনায় সৃষ্ট পরিস্থিতি সম্পর্কে সৌদি আরবকে চিন্তা-ভাবনা করা প্রয়োজন।
ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উদ্বেগের কারণে এ কেলেঙ্কারি মোকাবেলা করার সময় ‘সীমিত’ বলে সৌদি যুবরাজকে সতর্ক করে দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
খাশোগি নিখোঁজের ঘটনায় সৌদি আরবের তদন্ত ‘পুঙ্খানুপুঙ্খ, পরিপূর্ণ এবং স্বচ্ছ’ হবে বলে এর আগে দৃঢ় আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন মাইক পম্পেও। বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বৈঠকের সময় খাশোগির অন্তর্ধান ইস্যুতে তদন্তের ব্যাপারে যুবরাজের সঙ্গে কথা হয়েছে।
অ্যাক্সিওস বলছে, ইস্তান্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগিকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় যেভাবে গণমাধ্যমে খবর আসছে তাতে দিনের শেষে সৌদির পক্ষে অবস্থান নেয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। বৈঠকের হাসিমাখা ছবি দেখা গেলেও যুবরাজের সঙ্গে পম্পেওর যে উত্তেজনাপূর্ণ কথাবার্তা হয়েছে সেটিও বুঝা যাচ্ছে।
খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিশ্চিতভাবেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ২ অক্টোবর তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পর থেকে খাশোগির নিখোঁজ হওয়া নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন পম্পেও। একদিন আগে তিনি সৌদি-তুরস্ক সফর করে এ ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক ও সাংবাদিক খাশোগিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২ অক্টোবর রিয়াদ থেকে ১৫ সদস্যের সৌদি কিলিং স্কোয়াড তুরস্কে পৌঁছায় বলে দাবি করেছে আঙ্কারা। সন্দেহভাজন এই ১৫ ঘাতকের ছবিও প্রকাশ করেছে তুর্কি গণমাধ্যম। তবে এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সন্দেহভাজন অভিযুক্তদের কোনো মন্তব্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
বুধবার মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৫ জনের কিলিং স্কোয়াডের মধ্যে অন্তত ৯ জন সৌদি নিরাপত্তাবাহিনী, সেনাবাহিনী অথবা দেশটির অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সদস্য।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version