এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : মধ্য নভেম্বরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মধ্য নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের প্রথম ব্যাচের প্রত্যাবাসন শুরু করা যাবে বলে আশা করছি।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থো’র নেতৃত্বাধীন সফররত মিয়ানমার প্রতিনিধিদল এবং পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দলের মধ্যে তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জট খুলতেই ঢাকার এ বৈঠক। বৈঠকটি এমন এক সময় হলো যখন বাংলাদেশের দেয়া আট হাজার রোহিঙ্গার তালিকা থেকে ৪ হাজার ৬০০ জনকে শনাক্ত করতে আট মাসের বেশি সময় নিয়েছে মিয়ানমার। মিয়ানমারের কাছে দেয়া রোহিঙ্গাদের তালিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারকে ৮ হাজার ৩২ রোহিঙ্গার তালিকা দেয়া হয়।

এ পর্যন্ত ১৯ দফায় ৪ হাজার ৬০০ জনকে ফেরানোর বিষয়ে মিয়ানমার সম্মতি জানিয়েছে।

তালিকায় থাকা ৮ হাজারের মধ্যে ৬ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে যাচাই-বাছাই করেছে দেশটি। নানা অজুহাতে মিয়ানমার অন্তত দেড় হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে রাজি নয়। এদের মধ্যে অন্তত ৫২ জনকে সন্ত্রাসী হিসেবে অভিহিত করেছে মিয়ানমার। এমন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুততর করার বিষয়ে কতটা অগ্রগতি হলো? এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রত্যাবাসন একটি জটিল প্রক্রিয়া। কিন্তু রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে প্রত্যাবাসন করা সম্ভব। আমরা দেখছি আমাদের দুই পক্ষেরই রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে।

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আমরা উভয় পক্ষ বুধবার কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের নেতা মিন্ট থো বলেন, ‘আমাদের দুই পক্ষেরই রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে এবং আমরা দুই পক্ষই দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাই।’ রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা রাখাইনে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। এরমধ্যে রয়েছে সেখানকার পুলিশ এবং জনগণকে সচেতন করা, যাতে রোহিঙ্গারা বৈষম্যের শিকার না হয়।’ প্রথম ব্যাচে কতজন রোহিঙ্গা রাখাইনে ফিরতে পারবে? সেই সম্পর্কে এখনই কোনো ধারণা দিতে চাননি কোনো পক্ষই। উল্লেখ্য, দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় এবং চীনের মধ্যস্থতায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুততর করার আলোচনা চলছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে এ পর্যন্ত দু’দফা আলোচনা হয়েছে। আগামী মাসে ফের ত্রিপক্ষীয় এমন বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version