এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংলাপে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আলোচনা অব্যাহত থাকবে। বৃহস্পতিবার গণভবনে জাতীয় ঐক্যফন্ট নেতাদের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐক্যফ্রন্ট নেতারা ড. কামাল হোসেনসহ যারা কথা বলতে চেয়েছেন, সবাই কথা বলেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার কথা অখণ্ড মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। তিনি বলেন, অনেকে একাধিকবার কথা বলেছেন। আমাদের পক্ষ থেকেও সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রেখেছেন। তাদের কিছু অভিযোগ ছিল জানিয়ে কাদের বলেন, আমাদের নেতারা সেসব বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী তাদের পরিষ্কার বলে দিয়েছেন সভা, সমাবেশ ও মতপ্রকাশে কোনো বাধা দেয়া হবে না। তবে কেউ যেন রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ না করেন। ঢাকার ব্যাপারে বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি কর্নার করে দেয়া হবে, যেখানে ভাড়ার বিনিময়ে সবাই সমাবেশ করতে পারবেন। এই টাকাটা নেয়া হবে সমাবেশ পরবর্তী সময়ে পরিচ্ছন্নতার জন্য।

ওবায়দুল কাদের বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, বিদেশি পর্যবেক্ষকের দাবি ছিল তাদের। আমরা এসব বিষয়ে একমত হয়েছি। এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা থাকবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বিষয়ে কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা এ প্রযুক্তির ব্যবহারকে সমর্থন করি। তবে নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনে সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার করবে। রাজনৈতিক মামলার ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে বলেছেন, আপনারা রাজনৈতিক মামলাগুলোর তালিকা দিন।

সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ড. কামাল হোসেনকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর চিঠির উত্তরে একটা বিষয় লেখা ছিল- গণতন্ত্রের স্বার্থে সংবিধান সম্মত সব বিষয়ে আলোচনা হবে। পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া হয় না। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও নির্বাচনের সময় সংসদ বহাল থাকে।

তফসিল ঘোষণার পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যায়। নিরপেক্ষ নির্বাচনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সিডিউল ঘোষণার পর সব দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা একটা কথা বলেছি- নেত্রী চিঠিতেও বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তা হল সংবিধানসম্মত সব বিষয়ে আলোচনা হবে। আমরা সংবিধানের বাইরে যেতে পারব না।

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি আদালতের বিষয়, সংলাপে এটা আসতে পারে না। যে দুটি মামলায় সাজা হয়েছে, এগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছে। আর তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে যারা ছিলেন তারা বিএনপিরই লোক ছিল। আমাদের সরকার এ মামলা দেয়নি। আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা ছিল। এগুলোর প্রত্যেকটির তদন্ত হয়েছে, কিছু না পেয়ে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে আলোচনায় ড. কামাল হোসেন সাহেবকে প্রশ্ন করা হয়েছে, ১৯৭৩ সাল থেকে আপনিও অনেক নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। একমাত্র ২০০১ সালে ছাড়া আর কোনো নির্বাচনে কি সেনাবাহিনীর বিচারিক ক্ষমতা ছিল?

ওবায়দুল কাদের বলেন, আলোচনায় বেশ কিছু অগ্রগতি রয়েছে। ড. কামাল হোসেন সাহেব আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি আলোচনায় সন্তুষ্ট। এখানে এসে এমন অনেক কিছু জানতে পেরেছেন, যা আগে তিনি জানতেন না।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেছেন, আবারও ছোট পরিসরে আলোচনা করতে চাইলে যেকোনো সময় তারা আসতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী যেসব যুক্তি দিয়ে কথা বলেছেন আমার মনে হয় তাতে তারা অনেকটা কনভিন্সড। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version