এশিয়ান বাংলা, কক্সবাজার : মিয়ানমারে ফেরত যেতে দেশটির প্রতিনিধি দলকে ছয়টি শর্ত দিয়েছেন নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। বুধবার বাংলাদেশ-মিয়ানমার জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে তারা শর্তগুলো তুলে ধরেন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের এসব শর্তের বিষয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে কোনো জবাব দেননি। এ নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- কেড়ে নেয়া সম্পত্তি ও বসতভিটা ফেরত দিতে হবে, ফিরে যাওয়ার আগেই এ ব্যবস্থা করতে হবে, মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দিতে হবে, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নির্যাতন ও গণহত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে, মিয়ানমারে ফিরে রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে থাকবে না, ফেলে আসা বসতভিটায় তাদের নতুন করে বসতি গড়ে তোলার সুযোগ দিতে হবে, রোহিঙ্গা বসতি এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে এবং গণমাধ্যমের সামনে সব শর্ত মেনে নেয়ার অঙ্গীকার করতে হবে। যাতে পরবর্তীতে দেশটির কর্তৃপক্ষ এসব ওয়াদা ভঙ্গ করতে না পারে।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করেছেন রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার আব্দুর রহিম, মহিব উল্লাহ, হামিদ হোসেন, মোহাম্মদ নুর, ছেনুয়ারা বেগম, সেকুফা বেগম ও জামালিকা বেগমসহ বেশ কয়েকজন। এসময় তারা বলেন, ফিরে যাওয়ার বিষয়ে তাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্তগুলো মেনে নিলে তারা ফিরে যেতে ইচ্ছুক। উখিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা সিরাজুল মোস্তফা বলেন,?বন্দিশিবিরে রোহিঙ্গারা আর থাকতে চায় না। সেফ জোন ও নির্যাতনের বিচার না পেয়ে তারা কিভাবে মিয়ানমারে ফিরে যাবে? রোহিঙ্গাদের দাবিগুলোর বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর না দিলেও প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের দেয়া দাবিগুলো মিয়ানমার সরকারের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছে দেয়া হবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার বিষয়েও আলোচনা করা হবে।
মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে মিয়ানমারের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছে। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল মান্নান, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরীসহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা।