অর্ণব সান্যাল : কংগ্রেস আমলে দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ দিকে বেশ বেকায়দায় পড়েছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। সরকারি বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরগুলো ওই সময় প্রকাশ্যেই বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিল। মনে হচ্ছিল, সরকারের যেন কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই। প্রথম মেয়াদের শেষে সেই একই অবস্থায় পড়েছেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সরকারি ও সাংবিধানিক বিভিন্ন দপ্তরে নাক গলিয়ে এখন বেকায়দায় পড়েছেন তিনি। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি মোদি শাসনের শেষের শুরু দেখা দিচ্ছে? সূত্র : প্রথম আলো।

সম্প্রতি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতায় নাক গলিয়ে বিপাকে পড়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। স্বাধীনতার পর থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজে কোনো সরকারই হস্তক্ষেপ করেনি। কিন্তু মোদির সরকারের হাবভাবে মনে হচ্ছে, এবার তার ব্যত্যয় ঘটবেই! ঠিক এমন সময়েই বোমা ফাটিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য্য। গত ২৬ অক্টোবর তিনি প্রকাশ্যেই বলে দিয়েছেন ঘরের বিবাদের খবর। বিরল বলেন, ‘যে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করে না, সেটি যেকোনো সময় অর্থনৈতিক বাজারব্যবস্থায় ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার করবে। এর ফলে আর্থিক অবকাঠামোয় আগুন লেগে যাবে এবং এমন একদিন আসবে, যখন সেই সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।’

একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা যখন এভাবে সরকারের সঙ্গে মতভেদের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন, তখন তা নিয়ে হইচইয়ের অবকাশ আছে বৈকি। কারণ, মোদি সরকার ও আরবিআইয়ের মন–কষাকষির খবর এখন আর গুজব নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কথাতেই তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। এখন গুজব রটেছে, শিগগিরই নাকি রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর উরজিৎ প্যাটেল পদত্যাগ করতে চলেছেন। আর এই পদত্যাগের একমাত্র কারণ মোদির সঙ্গে দ্বিমত!

মোদি সরকারের দিনকাল আসলেই বেশ খারাপ যাচ্ছে। দিনকয়েক আগেই দেশের অন্যতম প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) দুই শীর্ষ কর্তার ঝগড়া সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। নিজে কথা বলেও দুই শীর্ষ কর্তার পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ ও মামলা-তদন্তের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো আটকানো যায়নি। শেষে দুই শীর্ষ কর্তাকেই বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠান মোদি। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। সিবিআই পরিচালক অলোক ভার্মা আবার সরকারের ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে বসেছেন। এই নিয়ে অস্বস্তি কাটতে না–কাটতেই চলে এল বিরল আচার্য্যের মন্তব্য।

অবশ্য সাংবিধানিক ও ঐতিহ্যগতভাবে স্বাধীন সরকারি সংস্থাগুলোর কাজে হস্তক্ষেপ করা নরেন্দ্র মোদির জন্য নতুন কিছু নয়। ওই তালিকা বেশ লম্বা। বিচারব্যবস্থা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন—সবকিছুকেই রাজনৈতিকীকরণ করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের বিরুদ্ধে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এভাবে অযথা নাক গলিয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তুলছেন গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী পদকে যেমন তিনি বিতর্কিত করে তুলছেন, একইভাবে নষ্ট করছেন সরকার যন্ত্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

আসুন, জেনে নিই, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাক গলানোর ফিরিস্তি।

রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া : বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য্যের বক্তব্যে সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাড়বাড়ন্তের বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আরবিআইয়ের বর্তমান গভর্নর উরজিৎ প্যাটেলের দায়িত্ব গ্রহণের আগে কেন্দ্রীয় সরকার নোট বাতিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। নোট বাতিলের এই পদক্ষেপকে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সবচেয়ে অপরিকল্পিত ও অদক্ষ কাজ বলে অভিহিত করে আসছেন বিশ্লেষকেরা। অর্থনীতিবিদদের মতে, যে উদ্দেশ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার সিকিভাগও পূরণ হয়নি।

অথচ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের পুরো দায় চেপেছিল রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ঘাড়ে। নিজেরা নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত না নিলেও এর পক্ষে কথা বলতে হয়েছিল আরবিআইকে। নিন্দুকেরা বলেন, উরজিৎ প্যাটেল এ ঘটনার সঠিক প্রতিবাদ করেননি। সরকারের চাপের কাছে নতিস্বীকার করেছিলেন তিনি। এখন সেই গভর্নরই মোদি শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছেন, পদত্যাগ করার কথা ভাবছেন!

ইকোনমিক টাইমস লিখেছে, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া অ্যাক্টের ৭(১) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। ওই ধারা অনুযায়ী জনস্বার্থে আরবিআইয়ের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে সরকার। এই ধারা ব্যবহার করে গত কয়েক সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কমপক্ষে তিনটি চিঠি দিয়েছে সরকার। এসব চিঠিতে রিজার্ভে থাকা অর্থ স্থানান্তর, সুদের হার পরিবর্তন এবং সরকারি ব্যাংকের ঋণ বিতরণ নিয়ে সরকারের পছন্দমাফিক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, চলতি বছর আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় রুপির মূল্যমানে ধস নেমেছে। মার্কিন ডলারের তুলনায় রুপির দাম কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ। এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম দেশের বিশাল অর্থনীতির জন্য এটি বেশ বড় চ্যালেঞ্জ। এর ওপর রয়েছে তারল্যসংকট।

বিবিসি বলছে, লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে মোদির সরকার অর্থনৈতিক খাতে লোকরঞ্জনবাদী পদক্ষেপ নিতে চায়। ভোটের রাজনীতিতে সুবিধা নিতেই ক্ষুদ্র ব্যবসায় সরকারি ব্যাংকের ঋণ বাড়ানোর কথা বলছে সরকার। একই সঙ্গে দরিদ্রদের হেলথ ইনস্যুরেন্সের সুবিধা নেওয়ার প্রকল্পে অর্থ জোগাতে রিজার্ভ মানি ব্যবহার করতে চান মোদি। আর এগুলো নিশ্চিত করতে গিয়েই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজে নাক গলাতে হচ্ছে!

কানাডার কার্লটন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক এবং অর্থনীতিবিদ বিবেক দেহেজিয়া মনে করেন, ‘এটা একেবারে যাচ্ছেতাই পরিস্থিতি। যদি ব্যাংকের প্রধান পদত্যাগ করেন, তবে তাতে বাজারে আস্থার সংকট তৈরি হবে। রুপির মূল্যমান আরও নিচে নামার আশঙ্কা আছে। এমনকি বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারত থেকে মুখ ফিরিয়েও নিতে পারেন। সুতরাং এটি স্পষ্ট যে এই অধ্যায় থেকে ভালো কিছু মিলবে না।’

সিবিআই : সিবিআই কাণ্ডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিত্বের ক্যারিশমা। ইন্ডিয়া টুডে বলছে, কয়েক বছরের মধ্যে এটি নজিরবিহীন ঘটনা। এতে বোঝা যাচ্ছে যে সরকার এই সংস্থাকে কতটা অবহেলা করেছে! অভিযোগ আছে, বিশেষ পরিচালক রাকেশ আস্থানাকে ব্যক্তিগত পছন্দের কারণেই সংস্থার শীর্ষে তুলে এনেছিলেন মোদি। আর এভাবে নিজেদের পছন্দের অথচ অযোগ্য কর্মকর্তাকে উচ্চ পদে বসানোর কারণে কপাল পুড়েছে সিবিআইয়ের। অন্যায়ের তদন্ত করবে কি, ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তদন্ত সংস্থাটি নিজেদের কর্মকর্তাদের ঝগড়া মেটাতেই ব্যস্ত।

ভারতের ব্যুরো অব পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সাবেক মহাপরিচালক এন আর ওয়াসান বলেন, ‘যাঁরা যোগ্য ও সৎ, তাঁদেরই উচ্চ পদে আনা উচিত। শুধু সততা দিয়ে চলবে না।’ বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিয়োগের চল চালু হয়েছে। এসব কর্মকর্তার উচ্চপর্যায়ের কাজ সামলানোর অভিজ্ঞতাও নেই। যেমন বর্তমানে সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হলেন এম নাগেশ্বর রাও। কিন্তু সংকট মোকাবিলার কোনো অভিজ্ঞতা তাঁর নেই। শুধু তা–ই নয়, নাগেশ্বর রাওয়ের বিরুদ্ধেই আছে দুর্নীতির অমীমাংসিত অভিযোগ। অথচ সেই ব্যক্তিকেই সংস্থা সামলানোর দায়িত্ব দিয়েছে সরকার!

বিচার বিভাগ : স্ক্রল ডট ইনের খবরে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারিতেই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন চার শীর্ষ বিচারপতি। ভারতের বিচার বিভাগে সবচেয়ে বড় সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল তখন। অন্যদিকে বিচার বিভাগে মোদি সরকারের হস্তক্ষেপের প্রথম আলোচিত ঘটনাটি ঘটে ২০১৬ সালে। ওই সময় উত্তরাখন্ডে জারি করা রাষ্ট্রপতির শাসন তুলে দিয়েছিলেন রাজ্যের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি কে এম জোসেফ। এ ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকার।

২০১৫ সালে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের গঠিত ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্টস কাউন্সিল বাতিল করে দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। বর্তমানে দায়িত্বরত বিচারপতিরাই নতুন বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে সুপারিশ করে থাকেন। এই ব্যবস্থাই পাল্টাতে চেয়েছিল মোদির সরকার। এর ফলে বিচারপতি নিয়োগের পুরো ব্যবস্থাই পাল্টে যেত। তাতেই বাদ সেধেছেন বিজ্ঞ আদালত।

প্রতিরক্ষা : পেশিশক্তির প্রদর্শনী সাজিয়েই ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই হিসেবে তাঁর টু-ডু লিস্টের ওপরের দিকেই ছিল সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি। সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সামনে নিয়ে এসে দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করলেও সফল হননি মোদি। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনাকাটার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ভেঙে ফ্রান্সের কাছ থেকে ৩৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কিনছে মোদির সরকার। অর্থমূল্যের দিক থেকে এই কেনাকাটা প্রায় ৫৯ হাজার কোটি রুপির। কংগ্রেস আপত্তি তুলে বলেছে, তাদের সময়ে করা চুক্তিতে প্রতিটি যুদ্ধবিমানের পেছনে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের হিসাব ছিল, তার তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি অর্থ খরচ করছে মোদির সরকার! আর বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী, এই পুরো কেনাকাটার ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্টনার হিসেবে থাকছে অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গোষ্ঠী। অথচ অনিলের সংশ্লিষ্ট সেই কোম্পানির প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত কাজের কোনো অভিজ্ঞতাই নেই! নিন্দুকেরা বলছেন, ব্যবসায় বিপর্যস্ত অনিল আম্বানির পকেট ভরাতেই এই চেষ্টা মোদির।

২০১৬ সালে সেনাবাহিনীর প্রধান করা হয় বিপিন রাওয়াতকে। দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ডিঙিয়ে বিপিন রাওয়াতকে এই পদে আনা হয়। সমালোচকদের দাবি, সামরিক বাহিনীতে রাজনৈতিক দলাদলি ঢোকাচ্ছে মোদির সরকার। পরের বছরের নভেম্বরে রাওয়াতই স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে ‘রাজনীতি থেকে সামরিক বাহিনীকে দূরে রাখা উচিত।’

নির্বাচন কমিশন : ইলেকটোরাল বন্ড নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করে মোদির সরকার। স্ক্রল ডট ইনের খবরে বলা হয়েছে, ইলেকটোরাল বন্ডের কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থায়ন ও তহবিল গঠন প্রক্রিয়া আরও অস্বচ্ছ হয়ে পড়বে। প্রথমে সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘পশ্চাৎপদ’ বলে অভিহিত করলেও, পরে সুর পাল্টে ফেলে নির্বাচন কমিশন। অভিযোগ আছে, সরকারের চাপের কারণেই নির্বাচন কমিশন এমন আচরণ করতে বাধ্য হয়।

অভিযোগ আছে, বিজেপির সুবিধার্থে বিভিন্ন রাজ্যের ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ নিয়ে টালবাহানা করে ভারতের নির্বাচন কমিশন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়েও সরকারের সুরে কথা বলছে প্রধান নির্বাচন কমিশন। এগুলোই দলীয়করণের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। অন্যদিকে এসব বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পক্ষে সঠিক ব্যাখ্যাও হাজির করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। বিরোধীরা বলছে, এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা বড়সড় প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে সংস্থাটির স্বাধীনতা।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন : ভারতের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল বণ্টন ও মান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি দেখভাল করে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, এই সাংবিধানিক নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া মোদি সরকার। মূলত দেশের পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে নিজেদের ঢঙে ঢেলে সাজাতে চায় বিজেপি। যে আইন ইউজিসিকে এই স্বাধীনতা দিয়েছে, সেই আইনই বদলে ফেলতে চান নরেন্দ্র মোদি। গত জুনে কেন্দ্রীয় সরকার এ–সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়।

নতুন আইনে যে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কথা বলা হচ্ছে, সেটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করবে। আর তহবিল বরাদ্দের বিষয়টি দেখভাল করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। আর তদারকির এই দায়িত্বে মন্ত্রণালয় আসার অর্থই হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতের মুঠোয় চলে আসা। কারণ, অর্থই যে অনর্থের মূল!

নানা দিক দিয়ে বিপর্যস্ত মোদি সরকারকে বাঁচাতে এখন এগিয়ে এসেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। আর শেষ ভরসা সেই ধর্ম। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ২৬ বছর কেটে গেছে, এর মধ্যে বিজেপি সরকারে থেকেছে ১২ বছর। কিন্তু তাদের প্রস্তাবিত রামমন্দির আর হয়নি। সেই রামমন্দির ইস্যুকে আবার চাগিয়ে তুলছে আরএসএস। ফিকে হওয়া নরেন্দ্র মোদিরও বোধ হয় শেষ ভরসা রামমন্দির।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version