এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের দিকে তাকিয়ে আছে দেশের মানুষ। কেননা তফসিল ঘোষণার পরই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই সমাবেশে পরবর্তী কর্মপন্থা ঘোষণা করতে পারে ঐক্যফ্রন্ট। সরকার ও পুলিশ বিভাগের অসৌজ্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে বিএনপি কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সমাবেশের জন্য নির্ধারিত স্থানে অনুমতি পাওয়া না পাওয়া নিয়েও চলেছে নানা রকম টালবাহানা। শেষ পর্যন্ত শহরের প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার গণকপাড়া বড় রাস্তায় সমাবেশের হুঙ্কার আসলে মেলেছে মাদ্রাসা মাঠের অনুমতি। তবে আকস্মিক রাজশাহী রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। একে সমাবেশ বানচালের পায়তারা হিসেবে দেখছে নেতাকর্মীরা। গ্রেপ্তার আতঙ্ক ও পথে পথে পুলিশের বাঁধার শঙ্কা মাথায় রেখেই প্রস্তুত নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন জানান, র্যাব, ডিবি ও পুলিশ লাঠি হতে মোটরসাইকেলের হর্ন বাজিয়ে মহড়া দিচ্ছে। তারা যেকোনভাবে আতঙ্ক ছড়িয়ে শহরকে ফাঁকা করতে চাচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাকর্মীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। ভোর রাত থেকে গণগ্রেপ্তার শুরু হবে বলেও আশঙ্কার প্রকাশ করেন।
মহানগর বিএনপি সভাপতি সাবেক রাসিক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সহযোগিতার আশ্বাসবাণী শুনিয়েছিলেন তার পুরোপুরি উল্টো চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। রাজশাহী, আশেপাশের জেলা ও থানায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেয়া হচ্ছে। এরপরও জনসভায় বিপুল সাড়া পড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিএনপি কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হারুন-অর-রশিদ বলেন, সমাবেশের বিপুল উপস্থিতি ঠেকাতে জেলা শহরগুলোতে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের খবর আমরা পেয়েছি।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন জোকারদের কমিশন। এই কমিশনের উপর মানুষের কোন আস্থা নেই। সরকারের আজ্ঞাবহ এই কমিশন কোনদিন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, তফসিল ঘোষণা করলেই নির্বাচন হবে এমন আসা করা সরকারের ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখা। নির্বাচন কমিশন যদি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি না মানে তাহলে এই সমাবেশ থেকেই কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হবে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম জিয়ার মুক্তি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে। এই আন্দোলনের জন্য সরকারকেই দায়ভার বহন করতে হবে বলে জানান এই ঐক্যফ্রন্ট রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়কারী।
নাটোর রুটে বাস চলাচল বন্ধ : নাটোর প্রতিনিধি জানান, নাটোর থেকে সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মালিক এবং শ্রমিকরা। সকাল থেকে উত্তরের জেলা নাটোর থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি এবং প্রবেশ করতে পারেনি। হঠাৎ করে শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। এই কর্মসূচি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। জেলা বিএনপির দাবি, আগামীকাল রাজশাহীতে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ ঠেকাতে এমন কর্মসূচি দেয়া হয়েছে।