শিয়ান বাংলা, ঢাকা : বহুল আলোচিত সংলাপ শেষ হলেও এ নিয়ে আলোচনা-বিতর্ক থেমে নেই। বিশেষ করে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অনানুষ্ঠানিক বা বিশেষ আলোচনা ঘিরেই মানুষের আগ্রহ ও কৌতূহল। সংলাপের ফল জানাতে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত ছিল। গতকাল তা করার ঘোষণাও ছিল। পরবর্তীতে এটি স্থগিত করা হয়। দু’একদিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন। কিন্তু সেখানে কী বলবেন সরকার প্রধান? আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধান বিরোধী জোট ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের তিনি যে বার্তা দেয়ার চেষ্টা করেছেন তা স্পষ্টই ছিল। অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনার সার-সংক্ষেপও জানা গেছে।

সেখানে সরকারের সুরেই কথা বলেছেন অন্যরা।

সংলাপে যেকোনো সমঝোতা বা সমাধান আসেনি সেই মেসেজ ক্লিয়ারই নয়, এটি বেশ লাউড। কিন্তু তারপরও মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন সংবাদ সম্মেলনে কেবল সংলাপের ফল জানাবেন না, সেখানে তিনি ভোট প্রশ্নে তার দল এবং সরকারের অবস্থানের বিষয়টিও আরো পোক্তভাবে তুলে ধরবেন। সূত্র মতে, বুধবার আনুষ্ঠানিক সংলাপ শেষ হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বিএনপির নেতাদের সঙ্গে খানিকক্ষণ কথা বলেছেন। সেখানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি তুলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এতে সরকারের তরফে বাধা না দেয়ার প্রস্তাবে সায় দিলেও সেটি আইন-আদালতের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন মর্মে খবর বেরিয়েছে। কিন্তু সেখানে সুনির্দিষ্টভাবে খালেদা জিয়ার বিষয়ে সরকার প্রধান কি বলেছেন, নির্বাচনের আগে তার মুক্তি হবে কিনা? এটি হলেও তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি-না? এ বিষয়ে সরকারের তরফে কোনো অঙ্গীকার কী মির্জা ফখরুল পেয়েছেন তা এখনো খোলাসা হয়নি। বিদায় বেলায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক ওই আলোচনায় ব্যারিস্টার মওদুদও ছিলেন। তিনি তার বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হওয়ার প্রসঙ্গ তুলেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী এটাকে জালিয়াতি উল্লেখ করে বলেন, ফরিদপুরের মেয়েটার নামে (হাসনা মওদুদ) বাড়িটি লিখলেও একটা কথা ছিল। কিন্তু আপনি তো তা আপনার ভাইয়ের নামে লিখে নিয়েছেন। এ সময় বাড়ি ‘লিখে দেয়া’ নিয়ে খানিক হাসাহাসিও হয় বলে দাবি সূত্রের। তবে খানিক দূরে উপস্থিত ঐক্যফ্রন্টের এক নেতা এমন আলোচনাকে ‘মিনিং লেস’ বলে মন্তব্য করেন। তার দাবি বিদায় বেলা প্রধানমন্ত্রী প্রায় সবার সঙ্গেই তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে কথা বলেছেন। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তার আলাদাভাবে কোনো কথা হয়নি। সরকারি দলের এক নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের সাবেক অনেক নেতা যারা এখন ঐক্যফ্রন্টে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন তাদের নিয়ে কম-বেশি মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন, সংলাপে সরকার বা আওয়ামী লীগের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

সংসদ ভেঙে দেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। এমনকি নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় বিরোধীরা যাতে টেকনোক্র্যাট কোটায় কাউকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তির দাবি করতে না পারে এ জন্য বর্তমান মন্ত্রিসভার টেকনোক্র্যাটদের আগেই পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। বিরোধী নেতাদের ধরপাকড়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অহেতুক কাউকে হয়রানি না করার কথা বলেছেন। এই অঙ্গীকার রক্ষা করা হবে জানিয়ে ওই নেতা বলেন, কারও যদিও টেপ থাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তাকে গ্রেপ্তারে বাধা কোথায়? তাছাড়া কেউ যদি প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানমালের ক্ষতির চেষ্টা চালায়, পুলিশ কি প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে ধরতে পারবে না? ওই নেতার কাছে প্রশ্ন ছিল সরকার চাইলে তো ছাড় দিতে পারে। এটা তো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন- কেন ছাড় দেবো? এটা রাজনীতি। এখানে আমরা আমাদের সুবিধা দেখবো। বিএনপি কি আমাদের ছাড় দিতো?

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version