এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : কঙ্গোতে ইবোলা ভাইরাস তীব্র মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে সংক্রামিত হয়ে মারা গেছে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইবোলা সংক্রমণের হার বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, কঙ্গোতে সম্প্রতি ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্য অনুসারে, আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকই দেশটির বেনি শহরের অধিবাসী। এই শহরে ৮ লাখ মানুষের বসবাস। বর্তমানে তাদের সবাই ইবোলা সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে কঙ্গোর জাতীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। এখন পর্যন্ত সেখানকার প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে ইবোলার প্রতিষেধক টিকা দেয়া হয়েছে।

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলি ইলুঙ্গা বলেন, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বিদ্রোহী সশস্ত্র গ্রুপগুলো টিকাদান কার্যক্রমে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের হয়রানি করছে। গত সেপ্টেম্বরে বেনি শহরে সাত ঘণ্টা ধরে হামলা চালিয়ে বিদ্রোহীরা টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ইবোলার সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করলেও তাদের এ হয়রানি বন্ধ হয়নি।
১৯৭৬ সালে প্রথম ইবোলা ভাইরাস শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা। সাধারণত দেহ থেকে নিঃসৃত তরলের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এর আগেও কঙ্গোর অধিবাসীরা তীব্র ইবোলা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এবারের সংক্রমণ কঙ্গোর ইতিহাসের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এটি ইতিহাসের ভয়াবহতম সংক্রমণ। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, সাম্প্রতিক সময়ে মোট ২৯১ জন ইবোলা আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২০১ জনই মারা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে টিকাদান কার্যক্রমে বাধা না দেয়ার জন্য দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইলুঙ্গা বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা বিভিন্ন হুমকি, শারীরিক হয়রানির মুখোমুখি হয়েছেন। এমনকি চিকিৎসা সামগ্রী ধ্বংস করে স্বাস্থ্যকর্মীদের অপহরণের ঘটনাও ঘটেছে। তিনি বলেন, র‌্যাপিড রেসপন্স মেডিকেল ইউনিটের দুইজন কর্মী বিদ্রোহীদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের পরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেসাস। তিনি বলেন, বর্তমান দুর্যোগ মোকাবিলায় সেখানকার নিরাপত্তা সংকট সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version