এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত নৌ ট্রানজিট প্রটোকলের আওতায় দু’দেশের মধ্যে ৪৭০ কিলোমিটার নৌপথ খনন করা হবে। এতে খরচের ৮০ ভাগ বহন করবে ভারত। বাকি ২০ ভাগ খরচ বাংলাদেশের। প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড সংশোধন করে এই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। গতকাল এ সংক্রান্ত খসড়াটি ভূতাপেক্ষভাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, নৌচলাচল সহজ করতে ৪৭০ কিলোমিটার নৌপথ খনন করবে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার। সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে আশুগঞ্জ এবং সিরাজগঞ্জ থেকে ভারতের দইখাওয়া পর্যন্ত এই নদীপথ খনন করতে ভারত ৮০ শতাংশ এবং বাংলাদেশ সরকার ২০ শতাংশ খরচ বহন করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে নৌ প্রটোকল, এখানে পোর্ট অব কল হিসেবে বাংলাদেশের পানগাঁও ও ভারতের আসামের ধুবড়ি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নো-ম্যান্স এরিয়াতে প্রয়োজনে বিজিবি এবং বিএসএফ’র সহযোগিতায় ইমার্জেন্সি সার্ভিস গ্রহণ, ক্রু বা নাবিকদের মরদেহ দেশে আনার সহজীকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বাংলাদেশের ট্রাক, ট্রাক্টর, ট্রেইলার ভারতের অভ্যন্তরে আগরতলা আইসিবি পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ করা হয়েছে। সংশোধিত প্রটোকল অনুযায়ী, সেখানে আনলোড করার বিষয়টি রয়েছে।

এ ছাড়া বৈঠকে মন্ত্রিসভাকে বাংলাদেশ ও ভারতের নৌ-সচিব পর্যায়ের সভায় ভারতীয় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এবং মোংলাবন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পরিবহনের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। এদিকে মন্ত্রিসভা বৈঠকে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের নাম পরিবর্তন এবং এই সংস্থার কাজের পরিধি বাড়িয়ে ‘বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৮’এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, এ আইনটি ১৯৯২ সালে করা হয়, কিন্তু প্রথমে ১৯৭৩ সালে একটি রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে ট্যারিফ কমিশন শুরু হয়। ১৯৯২ সালের আইনটি খুব সামান্য সংশোধনীর মাধ্যমে ২০১৮ সালে করা হচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আগে নাম ‘বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন’ থাকলেও নতুন আইন অনুযায়ী নাম পরিবর্তন করে হবে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন’। তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই ট্রেডটাকেই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ কমিশনের নাম পরিবর্তন করে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশন করা হয়েছে। এখন ট্রেডটা অনেক বিস্তৃত জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, এখানে ট্রেডটাকে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ছাড়া বিজনেস সেক্টরের প্রতিনিধিদের সমর্থন ছিল ট্রেডটা হলে ভালো হয়। এজন্য নামটাকে চেঞ্জ করা হয়েছে। আগের আইনের ‘ট্যারিফ কমিশন’-এর স্থলে নতুন আইনে ‘ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন’ বসবে জানিয়ে তিনি বলেন, কাজের বিবরণের ক্ষেত্রে আগে চারটি উপধারা ছিল, সেখানে আরো ৯টি উপধারা সংযোজন করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন আইনে কাজের বিস্তৃতিটা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আগে এন্টি ডাম্পিং, কাউন্টার ভেইলিং- এগুলো ছিল না। এগুলো নিয়ে আসা হয়েছে। সেইফটি মেজার্সগুলো নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে। অর্থাৎ উন্নত বিশ্ব ও ওয়ার্ল্ড ট্রেডে যে ট্রেন্ডে যাচ্ছে সেই বিষয়গুলো সংযোজন করা হয়েছে, যেন আমরা তাদের ফেইস করতে পারি। নতুন আইনে তদন্তের পদ্ধতি আরেকটু ডিটেইল করে পদ্ধতিটা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version